পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিগারেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের টোবাকো ৩৫ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। বিগত ৬ বছর তামাক পাতার বিপরীতে উৎসে ভ্যাট পরিশোধ না করে এ ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ফাঁকি দেয়া ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দিতে ইতিমধ্যেই কুমিল্লা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট থেকে পৃথক ৩টি দাবিনামা জারি করা হয়েছে। এবাই প্রথম নয়, এর আগেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যান্ডরোল ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। তখন কারখানা গেটে একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
প্রাথমিক দাবিনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রংপুরের টোবাকো পার্চেস সেন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তামাক পাতা কেনে। কিন্তু এর বিপরীতে কোন ভ্যাট পরিশোধ করেনি। ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ৯২ লাখ ৪৩ হাজার কেজি তামাক পাতা কেনে আবুল খায়ের টোবাকো, যার ক্রয়মূল্য ১২৭ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ৫ শতাংশ হারে উৎসে ভ্যাট আদায়ের বিধান থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি তা করেনি। এতে আলোচ্য সময়ে প্রায় ৫ কোটি ১০ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেনি। একইভাবে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ কোটি কেজি পাতা কেনা হয়। এর বিপরীতেও ভ্যাট পরিশোধ করেনি। এতে ২৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারি ভ্যাট অফিসে জমা দেয়া দাখিলপত্র পর্যালোচনা করে এ ভ্যাট উদঘাটন করেছে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট।
এ বিষয়ে জানতে আবুল খায়ের গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাইদ চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন ও এসএমএস করলেও তিনি কোন জবাব দেননি। আবুল খায়ের টোব্যাকের ভ্যাটের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা নূরুল হকের কাছে ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বিষয়টি স্বীকার করেন। পরবর্তীতে প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান কিভাবে পেলেন এই নথি। একই সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।
জানা গেছে, ভ্যাট অব্যাহতিপ্রাপ্ত পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট আইনে দুটি তফসিল দেয়া আছে। এ তফসিলে তামাক পাতা নেই। এ হিসেবে তামাক পাতা ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ভ্যাট পরিশোধের নিয়ম আছে। কিন্তু অন্য একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তামাক পাতাকে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া আছে। এ জন্য সরবরাহকারীর কাছ থেকে মূসক-১১/১১ক নেয়ার বিধান আছে। তা না হলে করযোগ্য পণ্য সরবরাহ যোগানদার সেবা হিসেবে গণ্য করা হয়। আর যোগানদার সেবার বিপরীতে ৫ শতাংশ ভ্যাট আছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আবুল খায়ের টোবাকো মূলত দুটি ব্রান্ডের সিগারেট বাজারজাত করে। এগুলো হচ্ছে মেরিস, র্যালি। এর মধ্যে নি¤œ আয়ের মানুষের কাছে মেরিস ব্রান্ডের সিগারেট ব্যাপক সমাদৃত। বাজারে এর প্রচুর চাহিদা আছে। এ সিগারেট বিক্রিকে উৎসাহিত করতে খালি প্যাকেটের বিনিময়ে সিগারেট দেয়া হয়।
এর আগে ২০১৫ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নকল ব্যান্ডরোল ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। তখন এনবিআর থেকে ভ্যাট আইনের ধারা ২৬(খ)-এর উপধারা (১) অনুযায়ী কারখানায় রাজস্ব কর্মকর্তাদের পাহারা বসাতে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে নির্দেশ দিয়েছিল। একই সঙ্গে আবুল খায়ের টোবাকোর প্রতিটি সিগারেটের প্যাকেটের প্রকৃতি, শলাকা সংখ্যা, খুচরা মূল্য, সম্পূরক শুল্ক ও মূসক হার, অপচয় নির্ধারণ করতে বলা হয়েছিল। এছাড়া এনবিআর কোম্পানিটির জালিয়াতি ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট মূসক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সিগারেটের উৎপাদন থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে বিতরণ পর্যন্ত পুরো কার্যক্রম তদারকি করতে নির্দেশ দিয়েছিল।
এছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জন, বিদেশে অর্থ পাচারসহ রাজস্ব আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে আবুল খায়ের গ্রæপের তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৪ জানুয়ারি সকালে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিন পরিচালক হলেন- আবুল কাশেম, মো. আবু সাঈদ চৌধুরী ও শাহ শফিকুল ইসলাম।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, আবুল খায়ের গ্রæপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মালিকদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিদেশে অর্থ পাচার ও দেশের বাইরে বাড়ি তৈরির অভিযোগও রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।