Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নরসিংদীতে বাড়ছে ধর্ষণের ঘটনা

দুই দিনে ধর্ষিত ২ শিশু

| প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নরসিংদী থেকে স্টাফ রিপোর্টার : নরসিংদীতে ধর্ষণ অব্যাহত গতিতে বেড়ে চলেছে। কয়েক বছর ধরে অব্যাহত ধর্ষণের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের প্রায় ৩ মাসে নরসিং দীতে কমবেশী ২৭ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। দেড় বছরের শিশু থেকে মধ্য বয়সী মহিলা পর্যন্ত কেউই ধর্ষকদের হাত রক্ষা পাচ্ছে না। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় শিশু-কিশোরী ও যুবতী মেয়েদের পিতা-মাতা, অভিভাবকরা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। স্কুল ছাত্রী, নারী শ্রমিক ও যুবতী মেয়েরা বাড়ী থেকে বেরিয়ে ইজ্জত নিয়ে বাড়ীতে ফিরতে পারবে কিনা এর কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছে না। সর্বশেষ শিশু ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে রায়পুরা উপজেলার বরচর গ্রামে। আলম ভূঁইয়া নামে এক ধর্ষক সুগন্ধি নামে ৫ বছরের একটি শিশু ছাত্রীকে বেগুন ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। জানা গেছে, একই উপজেলার বরচর গ্রামে এক ভ্যান চালকের কন্যা সুগন্ধি সকালে বাড়ী থেকে বরচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে যায়। দুপুর ১২ টায় স্কুল ছুটি হলে সুগন্ধি বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথিমধ্যে একই গ্রামের মধূ ভূঁইয়ার পুত্র আলম ভূঁইয়া সুগন্ধিকে ফুসলিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি বেগুন ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটিকে বিবস্ত্রা করে আলম ভূঁইয়া তার সাথে যৌনাচরণ করতে থাকে। এ সময় সুগন্ধির বাড়ী ফিরতে দেরী হওয়ায় তার মা তাকে খুজতে বের হয়। এ সময় রাস্তার পাশে একটি বেগুন ক্ষেত থেকে সুগন্ধির কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে গিয়ে দেখে যৌনাচরণ করছে পার্শ্ববর্তী বাড়ীর আলম ভূঁইয়া। এ সময় সুগন্ধির মাকে দেখতে পেয়ে আলম ভূঁইয়া সুগন্ধিকে ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি নিয়ে গত সোমবারই রায়পুরা থানায় একটি মামলা দায়ের করে সুগন্ধির পিতা ভ্যানচালক মিলন মিয়া। গতকাল মঙ্গলবার রায়পুরা থানা পুলিশ মেডিকেল পরীক্ষার জন্য সুগন্ধিকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। তবে পুলিশ এখনো ধর্ষক আলম ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এর আগে নরসিংদী সদর উপজেলার উত্তর নাগরিয়াকান্দী গ্রামে রহমী (আরবী নামের বাংলা পরিভাষা) নামে দেড় বছর বয়সের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় নিরব নামে পার্শ¦বর্তী বাড়ীর এক বখাটে যুবক। থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে বলা হয়েছে, নোয়াখালী জেলার পদুয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মানিক মিয়া নরসিংদী শহরের নাগরিয়াকান্দী মহল্লার চেয়ারম্যান আনিসুল হকের বাড়ীতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। একই বাড়ীতে ভাড়ায় থাকে বখাটে যুবক নিরবের পরিবার। পাশাপাশি ভাড়ায় থাকার সুযোগে ধর্ষক নিরব মানিক মিয়ার বাসায় যাওয়া আসা করতো। গত ১১ মার্চ দুপুরে রহমীর মা নুরুন্নাহার রহমীকে ঘরের সামনে রেখে পানি আনতে বেরিয়ে যায। এই সুযোগে বখাটে নিরব শিশুটিকে কোলে করে ঘরের পিছনে একটি নিরব স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে শিশু রহমীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় সাগর নামে পার্শ্ববর্তী বাড়ীর এক ব্যক্তি ঘটনাটি দেখে ফেললে বখাটে নিরব দ্রুত শিশুটিকে ঘরের সামনে রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে শিশুর পিতা মানিক মিয়া বাদী হয়ে নরসিংদী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ রহমীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। বলা বাহুল্য যে, গত ১০ বছরে নরসিংদীতে কমবেশী দেড় সহস্রাধিক নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে সরকারীভাবে রেকর্ড করা হয়েছে ১০৬১ টি ধর্ষণের ঘটনা। গতবছর ২০১৭ সালে নরসিংদীতে ১২৮ টি ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বছরে জানুয়ারী মাসে ৯ টি, ফেব্রুয়ারী মাসে ৯ টি এবং চলতি মার্চ মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত ৯ টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ