পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এক বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংকিং খাতে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে পাঁচ হাজার ৮৩৪ জন। বর্তমানে মোট কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ৬৭ হাজার ৮৭২ জন। এক বছর আগেও এ সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের তথ্য নিয়ে তৈরি করা এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এক বছরে পাঁচ হাজার ৮৩৪ জন কোটিপতি আমানতকারী বাড়লেও তিন মাসের ব্যবধানে (২০১৭ সালের জুন-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) কোটিপতি কমেছে এক হাজার ১৯ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৬২ হাজার ৩৮ জন। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৭ হাজার ৮৭২ জন। তবে ২০১৭ সালের জুনের শেষে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৬৮ হাজার ৮৯১ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে সেপ্টেম্বরে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা ৭০২ জন। ২০১৭ সালের একই সময়ে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৫২ জন। গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক কোটি টাকা আমানত রাখা ব্যক্তি ছিলেন ৫৩ হাজার ৩৪৪ জন। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ৪৮ হাজার ৮৯৭ জন। এই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে এক কোটি টাকার আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৪৪৭ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, টাকাওয়ালাদের কাছে ব্যাংকিং খাত যে জিম্মি হয়ে পড়ছে, তার বড় প্রমাণ হলো ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারী বেড়ে যাওয়া। এভাবে ব্যাংকে কোটিপতি বেড়ে যাওয়া কোনও ভালো লক্ষণ নয়। এটা হয়েছে কল্যাণ অর্থনীতির নীতি থেকে সরে যাওয়ার কারণে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি আমেরিকার তথা ধনতান্ত্রিক অর্থনীতিকে অনুসরণ করছে। এই নীতিতে জোর-জুলুমের মাধ্যমে টাকা বানানোর সুযোগ থাকে। বাংলাদেশেও এখন তা-ই হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ব্যাংকে ৬৭ হাজার ৮৭২ জন কোটিপতির মধ্যে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা ৮৫২ জন। তিন মাস আগে (জুনে) ৫০ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ আমানত রাখা ব্যক্তি ছিলেন ৮৫৩ জন। বর্তমানে এক কোটি টাকার ওপরে আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা ৫৩ হাজার ৩৪৪ জন। তিন মাস আগে এই সংখ্যা ছিল ৫৪ হাজার ৩১৭ জনে।
সেপ্টেম্বরের শেষে ৪০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন, এমন ব্যক্তি রয়েছেন ৪১৫ জন। ৩৫ কোটি টাকারও বেশি আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা ১৯৬ জন। ৩০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ২৭২ জন। ২৫ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ৪৬৯ জন। ২০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ৭৯৯ জন। ১৫ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন এক হাজার ২৯৬ জন। ১০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন দুই হাজার ৫২৪ জন। পাঁচ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন সাত হাজার ৭০৫ জন।
দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো না থাকার কারণে ব্যাংকে কোটিপতিদের আমানত বাড়ছে বলে মনে করছেন সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারী বাড়ার ফলে সমাজে একটি বিশেষ শ্রেণি ক্রমেই ধনী হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সমাজে বৈষম্যও বাড়ছে। তিনি বলেন, বিনিয়োগের পরিবেশ না পেয়ে অনেকেই ব্যাংকে টাকা জমা রাখছেন। এছাড়া, যারা ডাবল স্কিমে ৬ বা ৭ বছর আগে ব্যাংকে টাকা জমা রেখেছেন, এখন তাদের টাকা দ্বিগুণ হয়েছে। এভাবে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিলেন মাত্র পাঁচজন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ জনে। জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে (ডিসেম্বর ১৯৮০) এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ জনে। তখন তাদের আমানতের পরিমাণ ছিল ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ১০ শতাংশ। এইচ এম এরশাদ সরকারের পতনের সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪৩ জন ও আমানতের পরিমাণ ১২ শতাংশ। এ ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতি ছিলেন দুই হাজার ৫৯৪ জন ও আমানতের পরিমাণ ছিল প্রায় সাড়ে ২০ শতাংশ। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ১৬২ জন। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে দুই বছরের তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে (২০০৭-০৮) এ সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার ১১৪। এরও আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে (অক্টোবর ২০০১-ডিসেম্বর ২০০৬) কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জনে। ২০০৮ সালে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার ওপরে আমানতকারী হিসাব সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর শেষে এই সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার ১৩০টি। ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯ হাজার ৫৩৭টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।