Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেতাগীতে টমেটো ক্ষেতে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের প্রকোপ কৃষকের মাথায় হাত

বেতাগী (বরগুনা) থেকে মাওলানা নুরুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

উপকূলীয় এ জনপদ বেতাগীতে টমেটোর ক্ষেতে ভ্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। দিন দিন এর প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, এতে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ৭‘শ ৫০ হেক্টর জমিতে শীত কালীন সবজি হিসেবে টমেটো, সীম, লাউ, বাধাঁ কপি, মুলা করল্লা ও বেগুন আবাদ করা হয়। ফসল তুলে নেওয়ার আগ মুহুর্তে টমোটো ক্ষেতে বীজ ও মাটিবাহিত ভ্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় কৃষকের মাঝে শুরু হয়েছে হাহাকার।
সবজি উৎপাদনকারী এ উপজেলায় গত ১ লা মার্চ থেকে ১৮ মার্চ রবিবার পর্যন্ত টমোটো ক্ষেতে প্রাথমিক পর্যায় এ রোগের প্রকোপে দুই-একটি গাছ ঢলে পরলেও বর্তমানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোদ্রের তাপদাহে হঠাৎ দুপুরের পর গড়িয়ে যেতে না যেতেই গাছ ঢলে পড়ে। দ‘ুদিন পর গাছ শুকিয়ে লালচে বর্ণের ধারন করে। এক পর্যায় গাছ ও ফল মাঠেই নস্ট হচ্ছে। এ ফসল আর কৃষকের ঘরে তোলা সম্ভব হবে না বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া গ্রামের কৃষক মো: মাসুদ জানান, তিনি ৮০ শতাংশ জমিতে বিজলী, উদয়ন, মিন্টু সপার, বিউটি ফুল ও বিগল জাতের টমেটোর আবাদ করে ছিলেন। কিন্ত ফসল ঘড়ে তোলার আগেই তার অধিকাংশই শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফসল ঘরে তুলতে পারলে এ মৌসুমে কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারতেন। তার মহাজন পৌর শহরের ব্যবসায়ী মো: আলীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা দারদেনা করে সবজি চাষে তা ব্যয় করে ছিলেন। ঐ ব্যবসায়ী জানায়, এখানকার কৃষকের উৎপাদিত সবজি এলাকার পাশাপাশি জেলা সদর বরগুনা, পাশ্ববর্তী ভান্ডারিয়া, কাঠালিয়া, সুবিদখালী ও পটুয়াখালীতেও সরবরাহ করে সেখানকার চাহিদা মেটানো হয়। কিন্ত এখন হিমশিম খেতে হবে।
একই গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম ৬৮ শতাংশ জমিতে টমেটোর আবাদ করে নতুন আশায় বুক বেঁধে ছিলেন। সে আশায় এখন গুড়ে বালি বলে জানান। কৃষক মো: নাসির বলেন, এ রোগের প্রকোপে তার সব স্বপ্ন নিভেগেছে। যা আর কাটিয়ে উঠতে পারবেন না। বেতাগী সদর ইউনিয়নের সহকারি কৃষি কমকর্তা সুব্রত মিস্ত্রী দুই দফায় ক্ষেত পরিদর্শন করেণ। তিনি জানান, তার পরামর্শ অনুযায়ী কৃষকরা রিমোভিল গোল্ড, থিউবিট, নাটিভো এবং এন্টিবায়েটিক পিনসেল এসব ওষুধ প্রয়োগ করে। কিন্ত কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদেরও একই বক্তব্য।
কৃষকরা আরও অভিযোগ করেন, বিষখালী নদীর তীরবর্তী কেওড়াবুনিয়া এ গ্রামটির মুইন্নার খালের স্লুইইজটি ভেঙে যাওয়ায় বর্তমানে পানি ওঠা-নামা করতে পারে না। ফলে পানির অভাবে ক্ষেতে সেচ দিতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম রনি জানান, এটি পাতা কোকরানো রোগও হতে পারে। তাই এ রোগে আক্রান্ত গাছ গুলো তুলে পুড়ে ফেলা অথবা মাটির নীচে পুতে ফেলতে হবে। প্রতিকারের জন্য ক্ষেতে ইমিডাক্লোরোপিড গ্রুপের কীটনাশক এডমায়ার কিংবা ইমিটাফ প্রয়োগ করতে হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো: ইকবাল হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে এর ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা য়ায়নি। তবে এটি একটি উচ্চমুল্যের সবজি। কাঙ্খিত উৎপাদন বঞ্চিত হলে কৃষকরা লোকসানের মুখে পরে আগামীতে চাষাবাদে নিরুৎসহিত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ