পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, জাহান্নামের কিছু ফর্মুলা দেখে এসেছি : আমরা তার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে কথা বলেছি, আরও কথা বলব-ওসি ভাটারা
বিশেষ সংবাদদাতা
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নিজ বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে উঠিয়ে নেয়ার এক সপ্তাহ পর সন্ধান মিলেছে ব্যবসায়ী সজল চৌধুরীর। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজ বাসায় ফিরে এসেছেন তিনি। সজল চৌধুরীর মা দেলোয়ারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, অপহরণকারীরা গতকাল রোববার ভোর রাতে সজল চৌধুরীকে নোয়াখালীতে ফেলে যান। সেখান থেকে সজল মাকে ফোন করে অপহরণকারীদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি জানান। তিনি আরও জানান, অপহরণকারীরা সজলের পকেটে ২ হাজার টাকাও দিয়ে দেয়। তারপর সজল একটি গাড়ি ভাড়া করে ঢাকার পথে রওনা দেয় এবং সকাল সাড়ে ১০টায় বাসায় পৌঁছায়। নিখোঁজ থাকার ব্যাপারে সজল চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছেন, জাহান্নামের কিছু ফর্মুলা দেখে এসেছি। গত ১১ মার্চ রাজধানীর ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি বøকের ১৩ নম্বর সড়কের ৯৩৮ নম্বরের ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সজল চৌধুরীকে। এই বাসায় তিনি দুই বছর ধরে তার মা ও সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন। বাসাটিতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও এই অপহরণের ঘটনা ঘটে। ভাটারা থানার ওসি ওসি এসএম কামরুমুজ্জামান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তিনি (সজল চৌধুরী) ফিরে এসেছেন। আমরা তার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে কথা বলেছি। আরও কথা বলবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারা তাকে নিয়ে গেছে বা কোথায় ছিলেন তিনি এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে কোন উত্তর দেননি ব্যবসায়ী সজল চৌধুরী। আমরা অভিযোগ ফেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো বলে জানান ওসি কামরুজ্জামান। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অপহৃত সজল চৌধুরীর মা দেলোয়ারা বেগম গতকাল বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার যে বাসাটি থেকে ব্যবসায়ী সজল চৌধুরী (৪৬) অপহৃত হয়েছেন, ওই বাসায় এর আগেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় হানা দেয়া হয়েছিল। কখনও ডিবি, কখনও অন্য বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়েছিল আগন্তুকরা। তবে তখন এ ব্যবসায়ীকে অপহরণের চেষ্টা হয়নি। তারা সজল চৌধুরীর সঙ্গে তার সাবেক স্ত্রীর সমস্যার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে চলে আসতো। তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী মিজানুর রহমান চৌধুরী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। ছেলেকে তিন মাসের গর্ভে রেখে স্বামী যুদ্ধে যান। আর ফিরে আসেননি। এরপর ছেলেকে নিয়ে লড়াই করে এ পযন্ত এসেছি। আমি কোনও ভাতা নেই না। রাষ্ট্রের কাছে কিছু চাইও না। আমার ছেলে কষ্ট করে আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়েছে। কিন্তু তাকে বাসা থেকে তুলে নেয়া হলো।
ফিরে দেখা
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে দিলু আরা বেগম বলেন, এই বাসায় আমরা দুই বছর ধরে ভাড়া থাকি। সেদিন রাতে (১১ মার্চ) কলিং বেল বাজলে সজল নিজেই দরজা খুলে। ঘরের ভেতর লম্বা লম্বা কয়েকটা ছেলে ঢুকেই তাকে মারধর শুরু করে। আমাকে বেধে রাখে। তারা মারধর করে সজলকে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে যায়। নিরাপত্তাকর্মীকে তারা বাসা চেঞ্জ করার কথা বলে ওপরে ওঠে। আমাদের বাসা চেঞ্জ করে উত্তরা যাওয়ার কথা ছিল। এই বাসায় আমরা আর থাকবো না। অপহরণকারীরা তাও জেনে গেছে। চার কক্ষের ওই ফ্ল্যাটে বাসা পরিবর্তনের জন্য কিছু জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনার সময় সজলের স্কুলপড়ুয়া ছেলে তার কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। সে যখন টের পেয়েছে, ততক্ষণে সজলকে তুলে নিয়ে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা। সজল চৌধুরীর ছেলে শিহাব চৌধুরী বলে, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। জাগার পর দেখি বাবাকে নিয়ে তারা চলে গেছে। বাসার নিরাপত্তাকর্মী জানিয়েছেন, যাওয়ার সময় তারা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণের ডিভিআর (ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার) বক্সটি খুলে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসের নম্বরও কেউ মনে করতে পারছে না। ঘটনাটি খুব দ্রæত ঘটছে। তাই কিছু মনে করতে পারছে না কেউ। ঘটনার পরপর ভাটারা থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে চাইলেও থানা তা নেয়নি বলে সজলের পরিবারের অভিযোগ। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর দেলোয়ারা বেগমকে ভাটারা থানা থেকে ডেকে নেয়া হয়। এরপর তার স্বাক্ষর নেয় পুলিশ। ১১ তারিখ ঘটনা ঘটলেও তার স্বাক্ষর নেয়া হয় ১৬ মার্চ। তবে জিডির কাগজে দেখা যায়, জিডির তারিখ ১৩ মার্চ। জিডি নম্বর ৯০১। এ অপহরণের জন্য দেলোয়ারা বেগম সজলের সাবেক স্ত্রী এবং ব্যবসার অংশীদার মেহেদী নামের একজনকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, মেহেদীর সঙ্গে ব্যবসায়িক দ্বন্ধ ছিল সজলের। তার বিরুদ্ধে মেহেদী মামলা করেছিল। সজলও মেহেদীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। মেহেদী জামিনে আছে। এখন মেহেদী এবং সজলের সাবেক স্ত্রী মিলে গেছে। এরপর সজলকে লোক দিয়ে অপহরণ করিয়েছে। তিনি জাহাজভাঙা, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ব্যবসায় যুক্ত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।