নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : আগের আট ম্যাচের সাতটিতেই জয়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে যেন রীতিতম উড়ছিল আবাহনী। গতকাল প্রাইম দোলেশ্বরকে ২৩২ রানে আটকে রাখার পর মনে হচ্ছিল আরো একটি জয় পেতে যাচ্ছে নাসির হোসেনের দলটি। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় তা আর হয়ে ওঠেনি। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি মাত্র তারা হেরেছে ৩ রানে।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য আবাহনীর দরকার ছিল ১০ রান, দোলেশ্বরের ১ উইকেট। তিন বল শেষে চার রানে নামিয়ে আনেন আরিফুল ইসলাম সবুজ। কিন্তু চতুর্থ বল ডড দেয়ার পর আরাফাত সানির পঞ্চম বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে পরাজয়ের মাল্য পরে মাঠ ছাড়েন সবুজ। অবশ্য দশ নম্বর ব্যাটসম্যানের কাছে এতটা আশা করাও কঠিন। ২১৩ রানে নবম উইকেট হারানোর পর পরাজয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় আবাহনীর জন্য। কিন্তু সবুজের ১৫ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে ২১ রানের ছোট্ট ইনিংসই ফিকে হয়ে যাওয়া স্বপ্নটা নতুনভাবে দেখতে শুরু করে আবাহনী। এর আগে মোহাম্মাদ মিথুন (৬০) ও অধিনায়ক নাসির (৫৩) ছাড়া ক্রিজে বেশিক্ষন দাঁড়াতে পারেননি কেউ।
তারও আগে মিরপুরে টসজয়ী দোলেশ্বর ইনিংসে হানা দেয় দিল্লির বাঁ-হাতি স্পিনার মনন শর্মার ঘুর্ণীর সঙ্গে যোগ হয় মাশরাফি-সবুজের পেস আক্রমণ। ৪৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে এই কাজে নেতৃত্ব দেন মনন। এরই মাঝে দুটি ষাটোর্ধো ইনিংস খেলেন ফজল মাহমুদ ও ফরহাদ হোসেন। অলরাউন্ডার নৈপূণ্যের কারণে ম্যাচ সেরা হন অধিনায়কু ফরহাদ রেজা।
হারের পরও ৯ ম্যাচে ৭ জয় নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আবাহনী। সমান ম্যাচে পঞ্চম জয় নিয়ে তাদের পরেই দোলেশ্বর।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে অধিনায়ক জহুরুল ইসলামের দারুণ শতকে টানা দ্বিতীয় ও আসরের চতুর্থ জয় পেয়েছে গাজী গ্রæপ। জহুরুলের ১১৩ বলে ১০৩ ও আসিফ আহমেদের অপরাজিত ৯১ রানে ভর করে প্রাইম ব্যাংকের ছুড়ে দেওয়া ২৫৮ রানের লক্ষ্য ৭ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। চলতি আসরে জহুরুলের এটি দ্বিতীয় শতক।
এর আগে তরুণ স্পিনার নাঈম হাসানের ঘুর্ণীতে ১৩৭ রানে ৬ উইকেট হারানো প্রাইম ব্যাংক লড়াইয়ের পুঁজি পায় ইউসুফ পাঠানের ৬০ বলে অপরাজিত ৭২ রানের দারুণ ইনিংসের কল্যাণে। তাদের তিন ব্যাটসম্যান আউট হন রান আউটের শিকার হয়ে। ৯ ম্যাচে পঞ্চম পরাজয়ের স্বাদ পেল প্রাইম ব্যাংক।
ফতুল্লায় দিনের অপর ম্যাচে টানা তিন ম্যাচ পর জয়ের দেখা পেয়েছে মোহামেডান। শাইনপুকুরকে ৩৮ রানে হারিয়েছে তারা। সেঞ্চুরি ইনিংস না থাকলেও চার ফিফটিতে ৩০৬ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে মোহামেডান। ২৫ বলে ৫৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হন সাঈদ সরকার। জবাবে মোহাম্মাদ সাইফউদ্দিনের ৭৫ বলে ৬৮ ও অধিনায়ক শুভাগত হোমের ৩২ বলে ৫২ রানের ঝড়ো ইনিংসের পরও ১১ বল বাকি থাকতে ২৬৮ রানে গুটিয়ে যায় শাইনপুকুর। বল হাতেও ৫৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সফল ছিলেন সাইফউদ্দিন।
৯ ম্যাচে মোহামেডানের এটি চতুর্থ জয়। সমান ম্যাচে শাইনপুকুরের চতুর্থ পরাজয় এটি। এদিন জিতলেই পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠার সুযোগ ছিল তাদের সামনে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
প্রাইম দোলেশ্বর-আবাহনী, মিরপুর
প্রাইম দোলেশ্বর : ৫০ ওভারে ২৩২/৯ (মাহমুদ ৬৮, ফরহাদ ৬৩, রেজা ২৮; আরিফুল ২/২৯, মাশরাফি ২/৪৭, সন্দিপ ১/৩৯, মনন ৪/৪৪)।
আবাহনী : ৪৯.৫ ওভারে ২২৯ (এনামুল ৩৪, নাসির ৫৩, মিঠুন ৬০; সানি ৩/৫১, শরিফউল্লাহ ২/৩৬, রেজা ৩/৪২)।
ফল : প্রাইম দোলেশ্বর ৩ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : ফরহাদ রেজা (প্রাইম দোলেশ্বর)।
প্রাইম ব্যাংক-গাজী গ্রæপ, বিকেএসপি ৩
প্রাইম ব্যাংক : ৫০ ওভারে ২৫৭/৯ (মারুফ ৩২, জাকির ৪৪, আল আমিন ৩৭, ইউসুফ ৭২*; টিপু ১/৩৪, নাঈম ৪/৫৩, মুমিনুল ১/১৮)।
গাজী প্রæপ : ৪৮.৪ ওভারে ২৫৮/৩ (জহুরুল আহত অবসর ১০৩, আসিফ ৯১*, ফাওয়াদ ২৯*; এনামুল জুনি. ২/৫২ নাহিদুল ১/৪২)।
ফল : গাজী গ্রæপ ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : জহুরুল ইসলাম (গাজী গ্রæপ)।
মোহামেডান-শাইনপুকুর, ফতুল্লা
মোহামেডান : ৫০ ওভারে ৩০৬/৬ (রনি ৭৭, শামসুর ৬০, রাকিবুল ৫৫, সাঈদ ৫৮; সাইফউদ্দিন ৩/৫৫, রাইহান ১/৩৭)।
শাইনপুকুর : ৪৮.১ ওভারে ২৬৮ (অনি ৩৪, শুভাগত ৫২, সাইফউদ্দিন ৬৮, রাইহান ৩৮; তাইজুল ৩/৬৪, আজিম ৪/৪৫)।
ফল : মোহামেডান ৩৮ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : সাঈদ সরকার (মোহামেডান)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।