Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফুরফুরায় অশ্রুসিক্ত আমিন আমিন ধ্বনিতে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত

কলিকাতা থেকে আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

গতকাল শুক্রবার ফজর বাদ অশ্রুসিক্ত আমিন আমিন ধ্বনিতে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় ফুরফরার ১২৭তম ঈসালে ছাওয়াব। এটি ছিল পশ্চিম বঙ্গের বৃহত্তম ধর্মীয় মহাসমাবেশ। ভোর ৬টায় আখেরী মোনাজাত আরম্ভ হয়ে দীর্ঘ ৩০ মিনিট ব্যাপী ৬টা ৩০ মিনিটে শেষ হয়। কলিকাতার হুগলী জেলার অদূরে ফুরফরার ময়দানে বিশ্ব মুসলিম উম্মার ঐক্য শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করে শেষ হল এই পবিত্র মিলন মেলা। গত মঙ্গলবার থেকে আখেরী মোনাজাতের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত ধর্মপ্রাণ লাখো লাখো মুসল্লি ও মোজাদ্দেদ জামান হযরত আবু বক্কর সিদ্দিকী (রহ:) এর নসিয়াত অনুযায়ী অনুসারিদের ঢল নামে। এ উপলক্ষে ফুরফরাকে নতুন করে সাজানো হয়। বিশাল চটের প্যান্ডেলের নিচে দেশ বিদেশের মুসল্লি ও তাবলিগ অনুসারি দলের সদস্যরা বিভিন্ন যানবাহনে করে দলে দলে ফুরফরার ময়দানে আসেন। সারা জাহানের মুসলমানদের সুখ, শান্তি, কল্যাণ, অগ্রগতি, হেদায়েত, সমৃদ্ধি, ভ্রাতিত্ববোধ কামনা করে আখেরী মোনাজাত করা হয়। এতে বিশ্বের ১৫টি দেশের প্রায় ৫ হাজার বিদেশী অতিথিসহ দেশ বিদেশের প্রায় ১৫-২০ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মানুষ মোনাজাতে শরীক হন বলে ধারণা করা হয়। ২০টি প্রবেশ পথে সব ধরনের নাশকতা এড়াতে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলা হয়েছিল। গত মঙ্গলবার ফজর নামাজের পর আম’বয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের ইসয়ালে সাওয়াবের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ৫ ওয়াক্ত নামাজের পরে ময়দানের ভেতরে অবস্থানকারী মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে ইসয়ালে সাওয়াবের শীর্ষ মুরব্বীরা বয়ান করেন। পরবর্তীতে বয়ান গুলো বাংলা, আরবি, ফারসী, মালে, ইংরেজীসহ মোট ৭টি ভাষায় তরজমা করা হয়।
বহু কাঙ্খিত এই আখেরি মোনাজাতে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে রহমত ও হেদায়েত প্রার্থনা করেছেন। নিজ নিজ গুনাহ্ মাফ ও আত্মশুদ্ধি চেয়েছেন। এ সময় মহান আল্লাহ পাকের অশেষ মহিমায় আবেগ-আপ্লুত লাখো মুসল্লির কণ্ঠে উচ্চারিত ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে ফুরফরার ময়দান। অশ্রæসিক্ত নয়নে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণে ব্যাকুল হয়ে পড়েন অনেক মুসল্লি। আখেরি মোনাজাতকালে গোটা ঈসালে ছাওয়াব ময়দানে যেন এক পূণ্যময় ভূমিতে পরিণত হয়। মোনাজাতের আগে বক্তারা বয়ানে বলেন, দুনিয়ার চেয়ে আখেরাতের প্রতি আমাদের বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে। দুনিয়ার জিন্দেগীর চেয়ে আখেরাতের জিন্দেগী হলো স্থায়ী। তাই আমাদের ঈমানকে শক্তিশালী করে আখেরাতের জিন্দেগীর দিকে ধাবিত হতে হবে। আল্লাহর কাছে কান্না-কাটি করে ক্ষমা চেয়ে পাপমুক্ত হতে হবে। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। সকলকে তাই ইসলামের পতাকা তলে সমাবেত হওয়ার আহবান জানিয়ে আরো বলেন, বিশ্বের শান্তির সকল অশান্তি দূর হবে শুধুমাত্র যদি আল্লাহর নির্দেশ মত চলা যায়। আল্লাহ তায়ালা কুরআন নাযিল করেছে পথভ্রষ্ট মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য। প্রত্যেক মানুষের উচিত কুরাআনের আলোকে জীবন যাপন করা ও ইসলামের পথে চলা। তাই ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সকল মুসলমানকে কাধে কাধ রেখে চলতে হবে। ইসলাম বিরোধী কাজে রুখে দাড়াতে হবে সকলকে একসাথে। আমরা মুসলমান হয়ে যদি আমাদের ইসলামকে ধ্বংস করার কথা চিন্তা করি, এক মুসলমান হয়ে আরেক মুসলমানের ক্ষতির কথা চিন্তা করি তাহলে সবচেয়ে বড় ক্ষতি আমাদের নিজেদের হবে কাফেরদের নয়। তাই ইসলাম ও দ্বীনকে ভালবেসে কোরআনের আলোকে পথ চলতে হবে। মোনাজাতের সময় গোটা ফুরফরা ময়দান আল্লাহ-আল্লাহ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।



 

Show all comments
  • mohammad faizul islam ১০ মার্চ, ২০১৮, ১১:৫৮ এএম says : 0
    মোনাজাত পরিচালনা কে করেন? তা উল্লেখ হয় নি কেন?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মোনাজাত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ