পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এম আবদুল্লাহ আল মামুন, রামু (কক্সবাজার) থেকে : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নে সরকারি বনাঞ্চল ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগান থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাহান মার্মা এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা। পাথর উত্তোলনের ঘটনায় ওই চেয়ারম্যানের ছেলে মং নাইচউসহ এলাকার আরো একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় কতিপয় বাহান মার্মার নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে ঝিরি-পাহাড় কেটে ও মাটি খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করছে। দীর্ঘদিন এভাবে পাথর উত্তোলনের ফলে ঐসব পাহাড় ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পাহাড় ধসে পড়া ও ঝিরিগুলো বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাহাড়ের আনাচে-কানাচে, গভীর জঙ্গলে টিলা খুঁড়ে অথবা পাহাড়ের উপত্যকায় সমতল মাটিতে গভীর গর্ত খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। উত্তোলিত বড় পাথরগুলো সেখানে ভাঙা হচ্ছে এবং ছোটগুলো ট্রাক-পিকআপ করে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হবে। পাথর উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় লোকজন কোনো ধরনের প্রতিবাদ করতে পারেন না।
পাথর উত্তোলনকারীদের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছিলো না সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানও। নাইক্ষ্যংছড়ি মহাজন ঘোনার মৃত মোহিনী রঞ্জন দাশের ছেলে ডা. কালিপদ দাশ জানিয়েছেন, ওই এলাকায় তার এবং স্ত্রী-কন্যার স্বত্ব দখলীয় জমি থেকে সম্প্রতি ইউপি চেয়ারম্যান বাহান মার্মা শ্রমিকদের দিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করে। বাগানের পৃঃ ১৫ কঃ ৩ পাহারাদার পাথর উত্তোলন না করার অনুরোধ জানালেও তারা তা কর্ণপাত করেনি। এতে নিরুপায় হয়ে তিনি গত ২ মার্চ স্থানীয় সোনাইছড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাথর উত্তোলনের সত্যতা পান। কিন্তু এ নিয়ে কোন আইনী ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি গত ৫ মার্চ কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সাইফুল আশ্রাব জানান, সোনাইছড়িতে ডা. কালিপদ দাশ এর বাগান ও সংলগ্ন মাছকুম নামক ঝিরিতে পাথর উত্তোলনের সত্যতা পাওয়া গেছে। এদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে সরেজমিন গিয়ে পাথর উত্তোলনে নিয়োজিত শ্রমিকদের মধ্যে উখিয়া উপজেলার হলুদিয়া ইউনিয়ন বড় বিল গ্রামের জমির হোছনের ছেলে মাহমুদুল হক (৫০), সোনাইছড়ি ইউনিয়নের চুল্লা পাড়ার মোজাফ্ফর প্রকাশ জাফর মাঝি, সোনাইছড়ি বৈদ্যপাড়ার মং ব্যুর ছেলে তংছা মার্মা (২৮), উখিয়া উপজেলার হলুদিয়া ইউনিয়নের পাতাবাড়ি গ্রামের শাহ আলমের ছেলে সিরাজ (৪৫) জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান বাহান মার্মার নির্দেশে দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে এখানে পাথর উত্তোলন করছেন। পাশাপাশি তারা পাথর পাচারের জন্য পাহাড় কেটে রাস্তাও তৈরী করে যাচ্ছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল জানান, উপজেলার কোথাও পাথর উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয়নি। কেবলমাত্র জেলা প্রশাসক অনুমতি দিতে পারেন। তিনি আরো জানান, পাথর নিয়ে কাউকে ব্যবসা করতে দেয়া হবে না। অবৈধভাবে পাথর আহরণ ও পাচারে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে পাথর উত্তোলন ও পাচারের ঘটনায় অভিযুক্ত সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহান মার্মা’র মুঠোফোনে (নং ০১৮২৪-৯৩০৯৫১) একাধিকবার কল করে সংযোগ বন্ধ পাওয়া গেছে। এছাড়া বাহান মার্মা’র ছেলে মং নাইচউ এর মুঠোফোনে (নং ০১৬২৮-৭০৮০৬৬) একাধিকবার কল করলেও তিনি কল ধরনেনি। ফলে তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।