পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : আবিস্কারের ৫৬ বছর পর জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য সাইসমিক সার্ভেসহ প্রকল্প এলাকায় বিস্তারিত সম্ভাব্যতা যাচাই পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে পেট্রোবাংলা। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। স¤প্রতি রাজধানীর পেট্রো সেন্টারে এ-সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বলা হয়, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে জামালগঞ্জ কয়লা ক্ষেত্রের উত্তর-পশ্চিমাংশের ১৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় প্রথম ধাপে সম্ভাব্যতা যাচাই পরিচালনা করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৫৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। পরে অন্যান্য অংশে সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে। জামালগঞ্জে কয়লা খনির সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৬২ সালে। এরপর পেরিয়ে গেছে ৫৬ বছর। এর মধ্যে দুই দফা সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে খনিটিতে মজুদের পরিমাণ নির্ধারণে। তবে কয়লা উত্তোলনের আনুষ্ঠানিক কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এরই মধ্যে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয়েছে। পেট্রো সেন্টারে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জানানো হয়, জামালগঞ্জ কয়লা ক্ষেত্রটি ১৯৬২-৬৫ সালে ইউএন-পাক মিনারেল সার্ভে দলের মাধ্যমে আবিষ্কৃত হয়। এ কয়লা ক্ষেত্রে মোট ১২টি কূপ খননের মাধ্যমে এক হাজার ১০০ মিটার গভীরতায় সাতটি স্তরে উন্নত মানের হাই ভলাটাইল বিটুমিনাস কয়লার সন্ধান পাওয়া যায়। জামালগঞ্জ কয়লা ক্ষেত্রে সাতটি কয়লা স্তরের মোট পুরুত্ব প্রায় ৬৫ মিটার, বিস্তৃতি ১১ দশমিক সাত বর্গকিলোমিটার ও মজুদের পরিমাণ ১০৫ কোটি টন।
সিবিএম সমীক্ষার তথ্যমতে, জামালগঞ্জ কয়লা ক্ষেত্রের মোট বিস্তৃতি ৬৪ দশমিক ৪২ বর্গকিলোমিটার। ৬০০ থেকে এক হাজার ৫০ মিটার গভীরতায় কয়লার সম্ভাব্য মজুদ ৫৪৫ কোটি মেট্রিক টন। মজুদের পরিমাণ কম হওয়া ও গভীরতা বেশি হওয়ায় এ খনি থেকে কয়লা উত্তোলন লাভজনক নয় বলে মন্তব্য করে পরামর্শক।
যদিও ওই প্রতিবেদনে ক্ষেত্রটির উত্তর-পশ্চিমাংশের ১৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় কয়লা স্তরের গভীরতা তুলনামূলক কম এবং সম্ভাব্য মজুদ ৪০ কোটি মেট্রিক টন থাকায় সেখানে এ কয়লা উত্তোলনে টেকনো-ইকোনোমিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম পর্বে ১৫ বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য সমীক্ষার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে, পেট্রোবাংলার কমিটি জামালগঞ্জ কয়লাখনিতে বিস্তারিত সমীক্ষার আওতায় ৩২ কিলোমিটার এলাকায় হাই রেজুলেশন ৩-ডি সাইসমিক সার্ভে, মোট ১০০টি বোর হোল খনন ( যেগুলোর গভীরতা ৯০০ থেকে এক হাজার ৫০ মিটার), কোরিং ৫৮০ মিটার থেকে বোর হোল পর্যন্ত, প্রায় ১৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় টপোগ্রাফিক সার্ভে, হাইড্রোলজি ও হাইড্রোজিওলজিক্যাল সার্ভে, এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইআইএ) ও এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান (ইএমপি) অন্তর্ভুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার সুপরিশ করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করে ওই সমীক্ষা কার্যক্রম দুটি ধাপে সম্পন্ন করা যেতে পারে বলে সিদ্ধান্ত হয়। প্রথম ধাপে ৩-ডি সাইসমিক সার্ভে, টপোগ্রাফিক সার্ভে, ইআইএ ও ইএমপি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর ফলাফলের ভিত্তিতে পরে বোর হোল খনন এবং হাইড্রোজিওলিক্যাল সার্ভের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এতে প্রথম ধাপে ব্যয় হবে ৫৪ কোটি ৭ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে বছরে প্রায় ১০ লাখ টন কয়লা তোলা হয়। তবে আগামী ৫/৬ বছর এটির সক্ষমতা কমতে পারে। এছাড়া আগামীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ফলে এর চাহিদা বাড়বে। তখন বাড়তি কয়লা জোগান দিতে নিজস্ব উৎসের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এজন্য জামালগঞ্জ খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত বড়পুকুরিয়া (আন্ডারগ্রাউন্ড), ফুলবাড়ি (ওপেন), দিঘিপাড়া (ওপেন), খালাসকির (ওপেন), জামালগঞ্জ কয়লাখনিসহ মোট পাঁচটি কয়লাখনি আবিষ্কৃত হয়েছে। এক্ষেত্রে একমাত্র বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কার্যক্রম শুরু হলেও আর কোনো কয়লাখনি আলোর মুখ দেখেনি। সেক্ষেত্রে জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ কয়লাখনিটি যে পরিমাণ গভীরতায় রয়েছে তা আন্ডারগ্রাউন্ড পদ্ধতিতেও তোলা সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, জামালগঞ্জ কয়লাখনিটিতে ২০-২৫ কোটি বছর আগের কয়লা। তাই কয়লার যে গুণ তাতে অবশ্যই গ্যাস থাকবে। তাই কয়লার ফাঁকের আণুবীক্ষণিক স্তরে কী পরিমাণ মিথেন গ্যাস আছে, তা নির্ধারণের জন্য ২০১৫ সালে সমীক্ষা চালানো হয়। তাতে বাণিজ্যিকভাবে আহরণযোগ্য গ্যাস নেই বলে জানা গেছে। তবে কয়লা মজুতের যে চিত্র পাওয়া গেছে, তাতে দেশে কয়লা মজুতের পরিমাণ রয়েছে প্রায় ৭৫০ কোটি মেট্রিক টন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।