Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

‘পোকা মাকড়ের বসতি’

সৈয়দপুর গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোয়ার্টার

| প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে নজির হোসেন নজু
নীলফামারীর সৈয়দপুর ২০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা বসবাস না করায় আবাসিক এলাকা মাদকসেবী ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি কোয়ার্টারগুলোর মুল্যবান দড়জা-জানালা ও ফিটিংস চুড়ি হয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, ১৯৫৬ সালে সৈয়দপুরে শহরের উত্তরাংশে পুর্ব বোতলাগাড়ি মৌজায় প্রায় ৬১ একর জমি অধিগ্রহন করে তাতে গড়ে তোলা হয় ১০ মেগাওয়াট ডিজেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। পরে কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বসবাসের জন্য ১৯৬৮ সালে ৩০ ইউনিটের ৩ টি চারতলা ও ১ টি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। একই প্রাঙ্গনে ১৯৮৮ সালে নতুন করে ২০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়। এতে জনবলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কর্মকর্তাদের আরো ১২ ইউনিটের ২ টি দ্বিতল ভবন ও কর্মচারিদের জন্য ৩২ ইউনিটের চারটি ৪ টি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে পুরাতন ২টি ৪ তলা ভবন রাখা হয় ব্যাচেলরদেও জন্য।
এদিকে, অব্যাহত লোকসানের কারণে ২০০৮ সালে ডিজেল চালিত ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয় সরকার। ফলে এর আওতাধীন সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিরা অন্যত্র বদলি করা হয়।
সুত্রটি আরো জানায়, বিশাল আবাসিক এলাকায় কর্মচারিদের জন্য কোয়ার্টার ও কর্মকতাদের জন্য অফিসার কোয়ার্টারে এ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের ৪টি দ্বিতল ভবন ও কর্মচারিদের ৪ টি চারতলা ভবন পরিত্যক্ত হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সীমানা প্রাচীর ঘেরা হলুদ রঙের ৪ তলা আবাসিক ভবনগুলোর পুরোটাই ফাকা। এর ১৬টি ইউনিটে কয়েকটি তালাবদ্ধ থাকলেও বাকিগুলো খোলা পড়ে আছে। এর পাশে লাল রঙের দ্বিতল ভবনগুলোর অবস্থা একই। ভবনগুলোর অধিকাংশর দড়জা, জানালা,বিভিন্ন ফিটিংস চুড়ি হয়ে গেছে। ভবনগুলোর ভেতরে ময়লা- আবজনা স্তুুপ আর বাইরে প্রাঙ্গন ঢেকে গেছে ঝোঁপ-ঝাঁড়ে। প্রবেশ পথে পুলিশ ও নিরাপত্তা প্রহরি রয়েছে।
কর্মচারিদের একটি সুত্র জানায়, বাসা ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ কর্মচারি শহরের বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। আবার নামমাত্র ভাড়া হওয়ায় অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে উঠেছেন ব্যাচেলর কোয়ার্টারে। কর্মকর্তারাও একই কারণে কোয়ার্টার বরাদ্দ না নিয়ে বছরের পর বছর বসবাস করছেন বিভাগীয় রেস্ট হাউজে (বিশ্রামাগারে)।
এ কেন্দ্রের প্রধান ব্যবস্থাপক (নির্বাহী প্রকৌশলী) তার আবাসিক ভবনে না থেকে অন্যন্য কর্মকর্তারাও বসবাস করছেন রেস্ট হাউজে। এজন্য মাত্র ৪ শত টাকা মাসিক বিল ব্যয় করতে হয় তাদের।
সৈয়দপুর বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক (সিবিএ নেতা) মোঃ কামরুজ্জামান সরকার ক্ষোভের সাথে বলেন, এ বিদ্যুত কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী তার নির্ধারিত সরকারি বাসভবনে বসবাস করেন না। তিনি বাইরে থেকে এসে সপ্তাহে দু’একদিন অফিস করেন। বিশেষ প্রয়োজনে সৈয়দপুরে থাকতে হলে তিনি রেস্ট হাউজে অবস্থান করেন। আর এ কারণে কর্মচারিরা ইচ্ছেমত তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
সহকারি প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এব্যাপারে কোন কথা বলতে পারবোনা। আপনারা স্যারের সাথে কথা বলেন। এ ব্যপারে সৈয়দপুর ২০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (নির্বাহী প্রকৌশলী) মোঃ আবুল কালাম আজাদের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘পোকা মাকড়ের বসতি’

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ