Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘আমরা ভাষা হারিয়ে ফেলেছি’ সু চি’র সঙ্গে কথা বলতে চান তিন নোবেলজয়ী

| প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে সফররত শান্তিতে নোবেল জয়ী তিন নারী ইরানের শিরিন এবাদি, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান ও যুক্তরাজ্যের ম্যারেইড ম্যাকগুয়ার। তারা বলছেন, আমরা এ বিষয়ে সরাসরি সুচির সঙ্গে কথা বলতে চাই।
গতকাল বুধবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা জানান। গত ২৫ থেকে ২৭ ফেব্রæয়ারি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করে সেখানকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তারা রোহিঙ্গা গণহত্যা, এ বিষয়ে সুচির নীরবতা, সুচিসহ মিয়ানমারের অন্য সামরিক কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেন।
তায়াক্কেল কারমান তার বক্তব্যের শুরুতেই গণহত্যার বিষয়ে বলেন, আমরা ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি গত কয়েকদিন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি তাতে পরিষ্কার যে সেখানে গণহত্যা চলছে। শিশু হত্যাসহ নারী ধর্ষণও সেখানে হচ্ছে। ম্যারেইড ম্যাকগুয়ার বলেন, আমরা সবাই মানব পরিবারের সদস্য। অং সান সুচি যখন গৃহবন্দি ছিলেন তখন তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কার্যক্রমের জন্য আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। তার এখন মনে রাখা উচিত, রোহিঙ্গাদেরও মানবিক অধিকার আছে।
আন্তর্জাতিক আদালতে এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার প্রসঙ্গে আইন বিশেষজ্ঞ শিরিন এবাদি বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতে এই বিচার কাজের জন্য দুটি উপায় রয়েছে। একটি হচ্ছে সেই দেশটি যদি আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য হয়ে থাকে তাহলে তাকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া যায়, দ্বিতীয়টি হচ্ছে তারা যদি এই সংস্থার সদস্য না হয় তাহলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশক্রমে আন্তর্জাতিক আদালতে এদের বিচার সম্ভব। সুদানের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, তারা আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য ছিল না কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপের কারণে সুদানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে চীন ও রাশিয়ার মিয়ানমারের পক্ষাবলম্বনের বিষয়ে ম্যাকগুয়ার বলেন, তারা অর্থনৈতিক সুবিধার কারণে এর বিরোধিতা করছে।
সুচিকে এই তিন নোবেল জয়ী নারী কোনও চিঠি লিখেছেন কিনা বা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনও আবেদন করেছেন কিনা জানতে চাইলে ম্যাকগুয়ার বলেন, ‘আমরা মিনি স্টেটমেন্ট দিয়েছিলাম, তবে আমরা এখন এখান থেকে ফিরে গিয়ে আরও বিস্তারিত বলবো।’ মিয়ানমার সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই মিয়ানমার সফর করতে চাই এবং রাখাইন যেতে চাই। এ সম্পর্কে শিরিন এবাদি বলেন, মিয়ানমার সফরের জন্য আমরা ভিসার অ্যাপ্লাই করবো। তারা যদি আমাদের ভিসা না দেয় তাহলে সেটি মিয়ানমারের জন্য ভুল হবে।
প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমতকে আরও সংহত করতে ঢাকার নারীপক্ষ নামক নারী সংস্থার সহযোগিতায় নোবেল জয়ী তিন নারীর বাংলাদেশ সফরের আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে নোবেল জয়ী তিন নারী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তা তুলে ধরবেন। গত রবিবার (২৫ ফেব্রæয়ারি) বিকালে তারা উখিয়ার কুতুপালং রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন এই তিন নোবেলজয়ী।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সু চি

১১ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ