Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে ককটেল বিস্ফোরণ সংঘর্ষে পন্ড ছাত্রলীগের সম্মেলন

| প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের উপস্থিতিতে দফায় দফায় সংঘর্ষ ককটেল বিস্ফোরণ ও চেয়ার মারামারিতে পন্ড হয়ে গেছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন। গতকাল (মঙ্গলবার) নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট হলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে তাদের মধ্যে ৬ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। টানা এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায়ও সম্মেলন পুনরায় শুরু করতে না পেরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়াদের গ্রেফতার করতে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তবে এসময় সেখানে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশ সদস্য থাকলেও তারা কোন অ্যাকশনে যায়নি। কেন্দ্রীয় নেতারা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগের পর স্টেডিয়াম এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এসময় ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার বিকেলে লালদীঘি মাঠে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্মরণ সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মাথায় পন্ড হয় উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন।
বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বেলা ১১টায় শুরু হয় সম্মেলনের কার্যক্রম। উত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে অর্ধ শতাধিক বাস ও শতাধিক মাইক্রোবাসে কয়েক হাজার নেতাকর্মী সম্মেলনে যোগ দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সম্মেলনের শুরু থেকে নেতাদের নামে থেমে থেমে ¯েøাগান দিতে থাকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রæপ। এতে শুরু থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করে। বেলা সোয়া ১২টায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাকিব হোসেন সুইন বক্তব্য দেওয়ার সময় দুই পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয়। এসময় অনুষ্ঠানস্থলের বাঁ পাশে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ককটেলের বিকট শব্দে অনুষ্ঠানস্থলে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে যায়। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যে ছাত্রলীগের কয়েকটি পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া থেকে সংঘর্ষ বেধে যায়।
অনুষ্ঠানস্থলের পেছনের অংশে থাকা চেয়ার তুলে কর্মীরা মঞ্চের দিকে ছুঁড়তে থাকে। চেয়ারের আঘাতে বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত আহত হন। ককটেল বিস্ফোরণের পরপর বাইরে থেকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন এলাকার কর্মীরা মিছিল নিয়ে দলে দলে সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এতে বিশৃঙ্খলা আরও বেড়ে যায়। এসময় মিলনায়তনে উপস্থিত নেতাকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টায় কয়েকজন পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হন কয়েকজন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ আওয়ামী লীগ নেতারা পরিস্থিতি শান্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যান। একপর্যায়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে করজোড়ে তাদের শান্ত হতে অনুরোধ করতে দেখা যায়। তবে তার আহŸানে কেউ সাড়া দেয়নি। এরপর তিনি মাইকে দাঁড়িয়ে বলেন, যারা এ হামলা করেছে তারা বহিরাগত। এরা সংগঠনের কেউ নয়। তিনি হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ছাড়াও রাউজানের সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী ও রাঙ্গুনিয়ার সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ সিনিয়র নেতারা এসময় অসহায়ের মতো সেখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। বেলা ১টা পর্যন্ত সম্মেলনের কাজ শুরু করা না গেলে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ অতিথিরা সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন। অতিথিরা চলে যাওয়ার পর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের আশপাশের সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা। এসময় ওই এলাকায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় দুই পক্ষের মধ্যে।
এ ব্যাপারে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী বলেন, কারা সম্মেলন পন্ড করেছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে কেউ পার পাবে না। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব বলেন, জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার সময় আগুন সন্ত্রাসীরা বহিরাগত হিসেবে এসে হামলা করেছে। সম্মেলনে জামায়াত-শিবির ঢুকে পড়েছে। জানা গেছে, কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে জেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান গ্রুপগুলোর সমর্থক কর্মীদের হামলায় পন্ড হয় সম্মেলন। দলীয় সূত্রে জানা যায়, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যাচাই-বাছাই করে ৬০ জনের মতো পদ-প্রত্যাশীর নাম চূড়ান্ত করা হয়। সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের ৯টি ইউনিট থেকে ২২৫ জন এবং জেলার কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪১ জন সদস্যসহ মোট ৩৬৬ জন কাউন্সিলর ব্যালটের মাধ্যমে দুটি পদে নেতৃত্ব নির্বাচনের কথা ছিল। সর্বশেষ বখতিয়ার সাঈদ ইরান ও আবু তৈয়বের নেতৃত্বাধীন ১৪১ সদস্যের ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি ঘোষণা করা হয়েছিল।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৮:২৪ এএম says : 0
    Eaitai chira chorito nijeder moddhe shongghorsho koreBNP jamat shibirer opordo dosh chapano eta nootun kiso noy...
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৮:২৪ এএম says : 0
    Eaitai chira chorito nijeder moddhe shongghorsho koreBNP jamat shibirer opordo dosh chapano eta nootun kiso noy...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রলীগ

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ