Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

স্থায়ী ক্যাম্পাস ইস্যুতে হার্ডলাইনে সরকার

শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত

প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫৩ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

স্টাফ রিপোর্টার : স্থায়ী ক্যাম্পাস ইস্যুতে বারবার ছাড় দেওয়ার পর এবার হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার। কয়েক দফা সময় দেয়ার যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নূন্যতম শর্ত পূরণ করেনি তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই তালিকায় ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়াও আরও ৩২ বিশ্ববিদ্যালয়কে হিসাব না দেয়াসহ নানা কারণে শোকজ করা হচ্ছে। গত রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উচ্চ পর্যায়ে এক বৈঠক এই সিদ্ধান্ত হয়। পরে বৈঠক নিয়ে কথা বলেন শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন। তিনি বলেন, দেশের পুরানো ৫১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু বাকি ৩২টির মধ্যে ১২টি ন্যূনতম কোনও উদ্যোগ নেয়নি। ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তাদের কাছ থেকে ব্যাখা চাওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা যুক্তিযুক্ত না হলে তাদের ছাত্রছাত্রী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সূত্রে জানা গেছে, ৫১টি মধ্যে অধিকাংশ স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার কোন ধরনের উদ্যোগ নেয়নি। বাকীরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কিনেছে কিন্তু নির্মাণে কোন উদ্যোগ নেই বা শিক্ষা কার্যক্রম শূরু করেনি। এছাড়াও আরও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এসব কারণে তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের জানান, এই সিদ্ধান্তের জন্য ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের কোনও ক্ষতি বা সমস্যায় পড়তে হবে না। তারা শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখতে পারবে। ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়েই তারা লেখাপড়া করতে পারবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া, বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন না দেয়া, বা আইনের বিভিন্ন দিক লঙ্ঘন করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছেও ব্যাখা চাওয়া হবে। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি থেকে পাঠানো পত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত রয়েছে দেশের ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু আয়-ব্যয়ের নিয়মিত নিরীক্ষা করায় না, প্রতিবেদন না দেয়ার অপরাধে আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত। ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়কেও কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যলয়ের হালনাগাদ অবস্থা আমাদের কাছে আছে। আমরা তা পর্যালোচনা করছি। কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু সবাইকে আইনের অধীনে আসতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিতের পর কেউ ব্যবসা করলে করতে পারেন। কিন্তু বেপরোয়াভাবে কাউকে চলার সুযোগ দেয়া হবে না। গত বছর জানুয়ারিতে আলটিমেটাম দেয়া ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র সাতটি স্থায়ী ক্যাম্পাসে গেছে। বাকিগুলোর কোনোটি জমি কিনেছে, কোনোটি আংশিক কার্যক্রম শুরু করেছে। নূন্যতম শর্ত পূরণ করেনি এরকম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অনেক বছর ধরে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
ইউজিসির কর্মকর্তারা জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা আইন অনুযায়ী, অনুমতি পাওয়ার সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে হবে। এরপর পুরানো ৫১টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়বার আলটিমেটাম দেয়া হয়। এর আগে ২০১২, ২০১৪, ২০১৫ এবং ২০১৬ সালেও আলটিমেটাম দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠার পর ন্যূনতম সাত বছর পূর্ণ হওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেয়া আলটিমেটাম ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষার্থী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ