পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরার আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির আন্দোলনের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষমতাসীনরা সংঘাতে উসকানি দিচ্ছে।
তাতে সাড়া না দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরে সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। কখনো ধৈর্য হারা, বিশৃঙ্খল হবেন না। কর্মসূচিগুলো শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে হবে। জনগণের উত্তাল, সোচ্চার প্রতিবাদের মুখে এই সরকারকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গতকাল (শনিবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।
দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি যেন সরকারের উসকানি ও নীলনকশা ব্যর্থ করে দিয়ে বিজয়ে পরিণত হয়, সেদিকে খেয়াল রাখারও আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্তে আমরা উপস্থিত হয়েছি। আজকে এই দেশের স্বাধীনতা থাকবে কি না, সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, গণতন্ত্র থাকবে কি না, আমরা কেউ স্বাধীন অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকতে পারব কি না, সেখানেই আজকে প্রশ্ন হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ার করে আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন তারা চালিয়ে যাচ্ছেন, তা যেন ব্যাহত না হয়। সরকারের যে উসকানি, সরকারের যে নীলনকশা, তাকে ব্যর্থ করে দিয়ে জনগণের যে বিজয়, সেই বিজয়কে নিশ্চিত করতে হবে। খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করার জন্য, গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য এবং মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য, আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে। যত দিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বেরিয়ে না আসছেন, তত দিন পর্যন্ত এই গণস্বাক্ষর অভিযান চলতে থাকবে। আজ শুধু এটির শুভসূচনা হলো।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এই অবৈধ-অনৈতিক সরকার সম্পূর্ণভাবে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জনগণের কোনো সমর্থন তাদের সঙ্গে নেই। তারা তাই আজ গণবিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের সেই পুরোনো যে আশা, অভিপ্রায় একদলীয় শাসনব্যবস্থা ভিন্ন লেবাসে প্রতিষ্ঠা করার জন্য দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করেছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে সরকার গ্রেফতার করেছে। দেশে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে আমাদের নেতা-নেত্রীরা গ্রেফতার হননি। আজকেও (গতকাল) সাতক্ষীরার সভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতিদিন পুলিশ রেইড করছে, গ্রেফতার করছে এবং মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। যেখানে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপি তার কর্মসূচি পালন করছে, সেখানে মিথ্যা মামলা দিয়ে নাশকতার পরিকল্পনার নাম দিয়ে এটাকে (শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি) তারা (সরকার) সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত করতে চায়। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সবাইকে প্রতিবাদী হওয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণকে বলতে চাই, আর বসে থাকার সময় নেই, সমস্ত চেতনাকে জাগ্রত করুন, সবাই উঠে আসুন, বেরিয়ে আসুন। প্রতিবাদে সোচ্চার হোন এবং রাজপথে প্রতিবাদ করুন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজ গণস্বাক্ষর অভিযানের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করা হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে এই দেশের মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি। তিনি বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার চিন্তা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে, এ দেশের জনগণ সরকারের পরিকল্পনা সফল হতে দেবে না। মোশাররফ বলেন, আমাদের নেত্রীকে অন্যায়ভাবে জেলে প্রেরণের পরে আমরা নিয়মাতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এই গণস্বাক্ষর অভিযানে আমরা কোটি কোটি মানুষের স্বাক্ষর নিয়ে দেশে-বিদেশে প্রমাণ করতে চাই, দেশনেত্রী বেগম জিয়া এদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় নেত্রী।
মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা উল্টাপাল্টা কথা বলছেন। উল্টাপাল্টা কথা বলে, উসকানি দিয়ে ছেলেপেলেদের খেপাবেন না। অনুরোধ থাকল, বিএনপি শান্তিপূর্ণ একটি দল। অশান্তি তৈরি করলে যেকোনো অশান্তির জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন।
এসময় গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, গাজী মাযহারুল আনোয়ার, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আতাউর রহমান ঢালী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মীর সরফত আলী সপু, এড. আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, ইশতিয়াক আজিজ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেবী নাজনীন, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আবদুল খালেক, আকম মোজাম্মেল হক, আখতারুজ্জামান, হারুনুর রশীদ, শাম্মী আখতার, রফিক শিকদার, বজলুল করীম চৌধুরী আবেদ, আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
উদ্বোধনের পরপরই ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম, লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, অন্য অংশের মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী ও কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদ খান, ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তি চেয়ে স্বাক্ষর করেন। কর্মসূচির সময় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। জলকামানের গাড়িও রাখা ছিল কাছাকাছি স্থানে। গত ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদন্ড দিয়ে কারাগারে নেওয়ার পর প্রথম দফায় দুদিন বিক্ষোভ করেছিল বিএনপি। দ্বিতীয় দফায় ১২ ফেব্রæয়ারি থেকে টানা তিন দিন মানববন্ধন, অবস্থান ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করে দলটি। এরপর গণস্বাক্ষর অভিযানের মধ্য দিয়ে আরও তিন দিনের কর্মসূচি শুরু হল। আজা সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেবে বিএনপি; ২০ ফেব্রæয়ারি ঢাকা মহানগরী বাদে জেলা-মহানগরে হবে বিক্ষোভ। এছাড়া আগামী ২২ ফেব্রæয়ারি ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়া পল্টনে কার্যালয়ের সামনে জনসভা করার জন্য মহানগর পুলিশের কাছে আবেদনও করেছে বিএনপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।