Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তোমরা বাংলাদেশে চলে যাও : আতঙ্কিত রোহিঙ্গারা

রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মাইকিং

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার : সীমান্তের জিরো লাইনে থাকা ৬ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে ওই এলাকা ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে নির্দেশ দিয়ে মাইকিং করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশ। গত কয়েক দিন থেকেই নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রæ সীমান্তের জিরো লাইনে এ নির্দেশনা দিয়ে তারা মাইকিং করে আসছে।
গতকাল রোববার সকালেও জিরো লাইন থেকে রোহিঙ্গাদের সরে যেতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কাটাতারের বেড়ার কাছে এসে মাইকিং করে বলে জানিয়েছেন সেখানকার অধিবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। মাইকের ঘোষণায় বলা হচ্ছে, ‘তোমরা (রোহিঙ্গা) আমাদের সঙ্গে কথা বলবে না। তোমরা আমাদের কেউ না। তোমরা আমাদের ভূখÐ ছেড়ে বাংলাদেশে চলে যাও।’
এ ঘটনার পর রোহিঙ্গাদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জিরো লাইন স্পর্শকাতর হওয়ায় বাংলাদেশের পক্ষে এসব রোহিঙ্গাদের কোথাও সরিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে (রাখাইনে) দেশটির সেনা-পুলিশ ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের গণহত্যার মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে ১০ লাখ রোহিঙ্গা।
এদের মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান নেয়। এদের ৬ হাজারই তুমব্রæ সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থান করে আসছে।
ইতোমধ্যে ইউএনএইচসিআর’র সহায়তায় জানুয়ারিতে উপজেলার সাপমারা ঝিড়ি, বড় ছনখোলা, দোছড়ি ও ঘুনধুম সীমান্তের বাহির মাঠ এলাকায় অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে সরিয়ে নেয়া হয়। তবে জিরো লাইনের ৬ হাজার রোহিঙ্গাকে কোথাও সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি।
জিরো লাইনের রোহিঙ্গা আরিফ, দিল মোহাম্মদ ও ফজল করিম জানান, এতদিন তারা ভালই ছিলো। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিজিপি প্রায়ই ফাঁকা গুলিবর্ষণ করছে। তুমব্রæ সীমান্তের ওপারে ঢেকিবুনিয়া এলাকায় নতুন করে বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে।
এই রোহিঙ্গারা আরও জানান, কাটাতারের বেড়া ঘেষে তাবু টাঙ্গিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। তারা মাইকিং করছে। এতে সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রোহিঙ্গা মাঝি (তত্ত¡াবধানকারী) নুরুল আমিন বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা বলছেন, তোমরা আমাদের ভূখন্ড ছেড়ে বাংলাদেশে চলে যাও। না হলে তোমাদের এখান থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে।’
ঘুনধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ জানান, সীমান্ত সংক্রান্ত জটিলতার কারণে জিরো লাইনের রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়া আপাতত সম্ভব হচ্ছে না।
নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরওয়ার কামাল বলেন, এসব রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের ভূখÐেই অবস্থান করছে। এজন্য তাদের আমরা সরিয়ে নিতে পারছি না।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, যেহেত এসব রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের ভূখÐে রয়েছে। এজন্য নিজ দেশে তাদের নিতে কোনো চুক্তির প্রয়োজন নেই। এরপরও আমরা তাদের বিষয়টি জানিয়েছে।
কক্সবাজার বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবদুল খালেক জানান, জিরো লাইনে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের চাপ দেয়ার বিষয়টি আমরা জেনেছি। আমরা সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করছি।

 

 



 

Show all comments
  • আসিফ ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ২:৫৪ এএম says : 0
    মিয়ানমারের কপালে মনে হয় দু:খ আছে
    Total Reply(0) Reply
  • William Silva ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৯:০৮ এএম says : 0
    আল্লাহ তোমার কোদরত হইতে এদের সাহায্য করুন আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Redoy Khan ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ২:২৮ পিএম says : 0
    আজ যদি বিশ্ব মুসলিম ঐক্য থাকতো তাহলে আজ বিধর্মীরা রোহিঙ্গাদের অমানবিক নির্যাতন চালাতে পারতো না,আর তাঁদের এ করুণ অবস্থাও হতো না,এখনো সময় আছে বিশ্ব মুসলিম ঐক্য গড় অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াও |
    Total Reply(0) Reply
  • M Jahangir Alam ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ২:৩০ পিএম says : 0
    তাদের এই অবস্থার জন্য দায়ী মায়ানমার ও জাতিসংঘ।জাতিসংঘ বলে আন্তর্জাতিক শক্তিশালী সংঘ।এদের জন্য কি করল আসলে এটা স্থায়ী পাঁচ সদস্যের হাতে বন্দি।
    Total Reply(0) Reply
  • সোহেল ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ২:৩১ পিএম says : 0
    হে মহান আল্লাহ তুমিই পারো রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্ষা করতে |
    Total Reply(0) Reply
  • Md Himel ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ২:৩১ পিএম says : 0
    হায়রে রোহিঙ্গা।তোরাই পৃথিবীর সবচেয়ে অভাগা জাতি।
    Total Reply(0) Reply
  • হাবিব ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ২:৩২ পিএম says : 0
    বিশ্বের বিবেক মারা যাচ্ছে.....সব স্বার্থপর হইয়া যাইতেসে দিন দিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ