Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলে গেলেন হকির ‘বাঘ’ সোনা মিয়া

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম


স্পোর্টস রিপোর্টার : মাত্র ক’দিন আগে চিরবিদায় নেয়া সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহর মৃত্যুশোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি হকি অঙ্গণ। সেই বিদায়ের অশ্রæ শুকানোর আগেই আরেকটি বিদায়ের বিউগল বাজলো হকিতে। গতকাল সকালের শুরুটাই ক্রীড়াঙ্গনে শোক দিয়ে। হকি অঙ্গনের প্রিয় মুখ আব্দুর রাজ্জাক সোনা মিয়া আর নেই। গতকাল ভোরে নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হকির এই অন্তঃপ্রাণ ব্যক্তি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। বেশ কয়েক বছর যাবৎ অসুস্থতার মধ্য দিয়েই যাচ্ছিলেন হকির এই কিংবদন্তি। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর শেষ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরনের পর বিছানাতেই ছিলেন কয়েক মাস। চিকিৎসার আর কোন সুযোগ না দিয়ে নিরবেই চিরবিদায় বললেন ‘হকির বাঘ’।
বর্তমান প্রজন্ম তাকে চেনে জাতীয় দলের অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমির বাবা হিসেবে। তবে হকি অঙ্গণে স্ব-নামেই সিনিয়র বা সংশ্লিষ্টদের কাছে তার পরিচয় ‘সোনা ভাই’। গতকাল বাদ জোহর শেষবারের মত সোনা মিয়ার লাশ আনা হয় হকি স্টেডিয়ামে। নীল টার্ফে যেন আছড়ে পরে বেদনার প্রতিবিম্ব। হকি ছাড়াও ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন স্তরের লোকজনের উপস্থিতি তখন রুপ নেয় বিষাদসভায়। মুখ ভার করে স্মৃতিচারণ করেন তাকে শেষ বিদায় দিতে আসা প্রিয়জনেরা। সোনা মিয়ার সতীর্থ ছিলেন হোসেন ইমাম চৌধুরি শান্টা। সোনা মিয়ার টাইগার উপাধি পাওয়ার ব্যাখা দিলেন এভাবে, ‘তৎকালীন পাকিস্তান দলে সোনা ভাই ডাক পেয়েছিলেন। পশ্চিম পাকিস্তানে তানভীর খুবই ভালো খেলোয়াড় ছিলেন। তার জোরালো হিট সোনা ভাই দারুণভাবে ঠেকাতেন। সেখান থেকে টাইগার উপাধি।’
জানাযা শেষে পুরান ঢাকায় তার এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই পুরান ঢাকার ক্লাব মাহুতটুলির হয়েই হকিতে ক্যারিয়ার শুরু সোনা মিয়ার। স্বাধীনতার পর খেলেন আবাহনী ক্রীড়া চক্রে। চাকরিসূত্রে পিডবিøউডিতেও খেলেছেন ছিলেন বেশি সময়। খেলা ছাড়ার পর পিডবিøউডিতে কোচিং শুরু করেন। জাতীয় দলেরও কোচ ছিলেন। রাসেল মাহমুদ জিমি বাবার কোচিংয়ে খেলেছেনও। হকি স্টেডিয়ামে আবেগাপ্লুত হয়ে জিমি বলেন, ‘বাবার কারণে আজ আমি হকিতে। হকির জিমি হতে পেরেছি। বাবা হিসেবে ছেলেকে যেভাবে পরিচালনা করেছেন। কোচ হিসেবে সব খেলোয়াড়ের মতোই দেখেছেন। নিজের ছেলেকে বাড়তি কোনো সুবিধা বা বিশেষ নিয়ম করেনি।’ সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও হকি খেলোয়াড় প্রতাপ শঙ্কর হাজরা বলেন, ‘সকালে খবরটি শুনে খুবই খারাপ লেগেছে। আমার চেয়ে বয়সে ছোট কিন্তু পৃথিবী থেকে চলে যাচ্ছে আগে।’ হকি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি সাজেদ এ আদেল বলেন, ‘আমাদের সকলের খুব কাছের মানুষ ছিলেন সোনা ভাই। হকিকে খুব ভালোবাসতেন। বাংলাদেশের হকিতে তার অবদান অনেক।’
সকলকে কাঁদিয়ে আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন সাবেক এই হকির পথিকৃত। সোনা মিয়ার মৃত্যুতে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস, আবাহনী লিমিটেড, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, আজাদ স্পোর্টিং, উষা ক্রীড়া চক্র, অ্যাজাক্স, মেরিনার ইয়াংস, বাংলাদেশ স্পোর্টিং, বিএসপিএ, বিএসজেসি, বিএসজেএসহ বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থা শ্রদ্ধাঞ্জলি ও শোক জানিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ