Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরেকটু ভালোর আক্ষেপ রাজ্জাকের

‘পাল্লাটা এখনো সমানে সমান’

| প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : দেশের ক্রিকেটের পেক্ষাপটে ৩৫ বছর পেরিয়ে গেলে জাতীয় দলে ফেরাটা বেশীরভাগ ক্রিকেটারের জন্যই বেশ দুরুহ। বিশেষ করে তরুণদের আগমনে অনেকেই ফর্মের পাশাপাশি ফিটনেসও হারিয়ে ফেলেন। তবে চার বছর পর আব্দুর রাজ্জাকের দলে ফিরে প্রমাণ করলেন ফুরিয়ে যাননি, দলকে দেয়ার মতে এখনো অনেক কিছু আছে। শ্রীলংকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে তাই দলের প্রতিনিধি হয়ে এলেন অভিজ্ঞ এই স্পিনার। সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, ‘দলে সুযোগ পেয়েছেন, এবার নিজেকে প্রমাণের পালা।’
মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনেই দুদলের পড়েছে ১৪ উইকেট। শ্রীলঙ্কাকে ২২২ রানে গুটিয়ে দিয়েও পঞ্চাশের আগে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লঙ্কানদের গুটিয়ে দেবার নায়ক আব্দুর রাজ্জাক। জাতীয় দলে যখন নিয়মিত ছিলেন তার কার্যকারিতা বেশি ছিল রঙিন পোশাকেই। ওয়ানডেতে এখনো দেশের সেরা তিন উইকেট শিকারের একজন রাজ্জাক। যথেষ্ট কার্যকর ছিলেন টি-টোয়েন্টিতেও। তবে টেস্টে কখনো সেভাবে মুন্সিয়ানা দেখাতে না পারায় এর আগে খেলেছেন কেবল ১২টি টেস্ট। চার বছর পর দলে ফিরে ১৩তম টেস্টে নেমেই করলেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনেই বাজিমাত অভিজ্ঞ এই স্পিনারের। ৬৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের ২২২ রানে ধসিয়ে দেওয়ার নায়কও তিনি। টেস্টে এর আগে কখনো চার উইকেট পাওয়া হয়নি রাজ্জাকের।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেও সন্তষ্ট নন রাজ্জাক, ‘আরেকটু ভালো হলে ভালো হত।’ তবে সেটা যে ব্যাটিংয়ে তার বুঝতে বাকি থাকার কথা নয় কারোরই। জানালেন, দবোলিংয়ে আমাদের দারুন শুরু হয়েছিল। তবে ব্যাটসম্যানরা আরেকটু দায়িত্বশীল হলে দিনটা পুরোপুরি আমাদের হতে পারতো।’ আস্বস্তি আছে নিজের বোলিংয়েও, ‘আরো এক-দু’টি উইকেট পেলে আরো ভালো লাগতো।’
চট্টগ্রামে পাঁচদিনের ম্যাচে উইকেটের পতন হয়েছে ২৪টি, অপরদিকে ঢাকায় প্রথম দিনেই নেই ১৪ উইকেট। রাজ্জাক যখন দলে খেলেছেন তখনকার চেয়ে এখনকার উইকেট অনেকটাই ভিন্ন প্রকৃতির। বোলাররা অনেকটা বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন। চারবছর পর জাতীয় দলে, ড্রেসিংরুমের পরিবেশে মানিয়ে নিতে কতটা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন এমন প্রশ্নের উত্তটাও হল সাবলীল, ‘যে কোন ফরমেটে জাতীয় দলে হয়ে খেলাই ভিন্ন বিষয়। জাতীয় দলে অনেকেই তার জুনিয়র হলেও সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব নিয়েই ব্যস্ত। দলে ডাক পাওয়া থেকে একাদশে সুযোগ পাওয়া সবই ভিন্ন ধরনের অনুভূতি। বিশেষ করে প্রথম যখন (ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার) বল হাতে নিলেন, তৃতীয় ওভারেই উইকেট। ফলে শুরুতে কিছুটা নার্ভাস হলেও পরে তা কেটেছে। বোলাররা তাদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করেছে। ব্যাটসম্যানরা তাদের ভূমিকায় সফল হলেই ম্যাচে ভালো লড়াই হবে।’
একই সুর শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাবীরার কণ্ঠেও। মনে করছেন লড়াইয়ে কেউ এখনো এগিয়ে নেই। প্রথম দিন শেষে তবে কে এগিয়ে? এমন প্রশ্নে কিছুটা ভাবুক উত্তর সাবেক বাংরাদেশি কোচের, ‘এটা ভালো প্রশ্ন। আমার মনে হয় খেলায় এখনো ভারসাম্য আছে। আমাদের আরও ছয়টা উইকেট নিতে হবে। তারপর আরেকটা ইনিংস ব্যাট করতে হবে। আমরা ৩০ রানের মতো কম করেছি। এমনিতে ঢাকার উইকেটে ২৪০, ২৫০ খুব ভালো স্কোর। কিন্তু দিনশেষে আমরা চার উইকেট নিতে পেরেছি। সবাই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।’
চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গে পাঁচদিনেও শেষ হতে পারে দুদলের তিন ইনিংস। অমন একপেশে পিচে খেলার বিরক্তি বারবার জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ঢাকার পিচে একদিনেই পড়েছে ১৪ উইকেট। সামারাবীরার মতে, এমন পিচই টেস্টে দরকার, ‘এটা ঢাকার পিচ। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আর আমরা একই পিচে খেলছি। খেলার মতো না বলা যায় না। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে এখানে পুরোই আলাদা। টেস্ট ক্রিকেট মরে যাচ্ছি তাই ফলাফল আসে এমন পিচ দরকার। আমি খুশি এই পিচ পেয়ে।’
ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে এই পিচে নাকানিচুবানি খাওয়ানো গেলেও উপমহাদেশের দল শ্রীলঙ্কাও যে স্পিনের মাস্টার। এই পিচে কে এগিয়ে তা জানতে দ্বিতীয় দিনের প্রথম দুই ঘণ্টার উপর ছেড়ে দিলেন সামারাবীরা, ‘মিরপুর শ্রীলঙ্কার জন্য গলের মতো। আবার বাংলাদেশ এখানে ডমিনেট করে। কে ফেভারিট বলা কঠিনই। কালকের (আজ) প্রথম দুই ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ