Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কঠোর অভিবাসন নীতির ইঙ্গিত ট্রাম্পের

| প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রসঙ্গে আরো কঠোর অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার রাতে দেয়া বার্ষিক স্টেট অব দি ইউনিয়ন ভাষণে প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাটদের প্রতি সংযত ও নমনীয় আচরণ বজায় রাখলেও আরো কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণের সপক্ষে তাদের নীতিগত সমর্থন চেয়েছেন তিনি। পাশাপাশি উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গেও বেশ কঠোর মনোভাবের প্রকাশ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে চীন ও রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভবিষ্যৎ ভূরাজনৈতিক হুমকির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এটিই ছিল ট্রাম্পের প্রথম বার্ষিক স্টেট অব দি ইউনিয়ন ভাষণ। চিরাচরিত ভঙ্গিমার বাইরে এসে এদিন তিনি প্রতিপক্ষের প্রতি বেশ নমনীয় সুরে বক্তব্য দিয়েছেন। তবে এর মধ্যেও অভিবাসন প্রশ্নে নিজের কঠোর অবস্থান প্রকাশ করতে ভুল করেননি তিনি। বক্তব্য দানকালে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলা ও যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে নীতিগত ছাড় চেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই নানা বিতর্কের জন্ম দিয়ে এসেছেন ট্রাম্প। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার পর গত এক বছর ধরে নানা বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য এবং বিতর্কিত আদেশ দান ও নীতিমালা প্রণয়নের মধ্য দিয়ে বারবার সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম হয়েছেন তিনি। বিশেষ করে অভিবাসন প্রশ্নে তার কঠোর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এমনকি এর প্রতিবাদে গোটা যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভও হয়েছে। ট্রাম্পের পপুলিস্ট নীতি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যেও স্পষ্ট বিভক্তি নিয়ে আসে। এছাড়া প্রতিপক্ষের প্রতি রূঢ় ও কঠোর ভাষায় আক্রমণের জন্য বেশ সমালোচিত হয়ে ওঠেন তিনি। তবে মঙ্গলবার দেয়া ভাষণে প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাটদের প্রতি বেশ নমনীয় ভাব দেখিয়েছেন তিনি। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এদিন তিনি বলেন, ‘আজ রাতে আমি সবার উদ্দেশেই আমাদের মধ্যকার বিভক্তিকে দূরে ঠেলে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণ, যারা আমাদের নির্বাচিত করেছে; সাধারণ একটি অবস্থান থেকে তাদের সামনে আমাদের নিজেদের মধ্যকার একতা প্রদর্শনের জন্য আমি সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আজ রাতে আমি আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি চাই আমরা সবাই একযোগে এক দল, এক জনগণ ও এক মার্কিন পরিবার হয়ে উঠি।’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণের শুরুটা এভাবে অনেকটা স্বভাববহির্ভূতভাবে নমনীয় হলেও, পরবর্তীতে অভিবাসন প্রশ্নে তিনি যে কোনো ধরনের ছাড় দিতে চাইছেন না, তা পরিষ্কার হয়ে ওঠে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক অবক্ষয়ের পেছনে অভিবাসনকে দায়ী করেন তিনি। প্রেসিডেন্টের এ ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ভাষণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিলেও, সে বিষয় তিনি কতটা আন্তরিক তা অভিবাসন প্রশ্নেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। মার্কিন কংগ্রেসের সামনে যুক্তরাষ্ট্রে শিশু বয়সে অবৈধভাবে প্রবেশ করা অভিবাসীদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর সময় আছে আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত। এর মধ্যে কংগ্রেস এ বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে না পারলে ওই দিন থেকেই ‘ড্রিমার’ হিসেবে অভিহিত এসব অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ভাষণ দেয়ার সময় মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলা নিয়েও বেশ কট্টর অবস্থান ধরে রাখেন ট্রাম্প। এমনকি এ সময় দেয়াল তোলার কার্যক্রমে অর্থ অনুদানের বিনিময়ে ড্রিমারদের ১০-১২ বছরের জন্য অভিবাসনের সুযোগদানেরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এ সময় তার এ প্রতিশ্রুতিকে নিজের পক্ষ থেকে ‘একেবারে মধ্য পর্যায়ে নেমে এসে ছাড় দেয়া’ বলেও অভিহিত করেন তিনি। ভাষণে ‘চেইন মাইগ্রেশন’ বা বৈধ অভিবাসীদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন দেয়ার কার্যক্রমের ওপরও লাগাম টানার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি নিয়েও বক্তব্য রাখেন ট্রাম্প। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে বেশ কড়া বক্তব্য রাখেন তিনি। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, পিয়ংইয়ংয়ের ‘হঠকারী’ পারমাণবিক কার্যক্রম ‘অতি শিগগিরই’ যুক্তরাষ্ট্রের ভূখন্ডের জন্য বড় হুমকির কারণ হয়ে উঠতে যাচ্ছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক পরিমন্ডলে চীন ও রাশিয়াসৃষ্ট আসন্ন হুমকির বিষয়েও দৃষ্টিপাত করেন তিনি। এএফপি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ