পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় যুক্তি উপস্থাপনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে আনায় দুই পক্ষের (দুদক ও বিএনপিপন্থী) আইনজীবীদের সঙ্গে বাগ্বিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে। উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় থামাতে না পেরে একপর্যায়ে বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এজলাস ছেড়ে খাসকামড়ার চলে যান। ৭ মিনিট পর এজলাসে ফিরে এসে আদালতের বিচারিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে সকলের প্রতি আহবান জানান। এসময় খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বুধবার পুরান ঢাকার বকশিবাজারে অস্থায়ী আদালতে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় যুক্তি উপস্থাপনে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল ছিল এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দ্বিতীয় দিন। আরে আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদালতে পৌঁছান খালেদা জিয়া। এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। শুনানি শেষ করার পর এ মামলার আরেক আসামি খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর এপিএস জিয়াউল ইসলাম মুন্নার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন তাঁর আইনজীবী আমিনুল ইসলাম। শুনানির একপর্যায়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফরের প্রসঙ্গে টেনে আনেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, সিলেটে জনসভায় ভাষণ দেয়া প্রধানমন্ত্রীর কাজ কি না। এরপর উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্রগোল বেধে যায়।
শুনানির শুরুতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলের বক্তব্যের সূত্র ধরে আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলতে থাকেন, দুদক বলছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে কোনো কাজ হয়নি। অথচ কাকরাইলে ৪২ কাঠা জমি ট্রাস্টের নামে কেনা হয়েছে। এটা কি খালেদা জিয়ার নামে করা হয়েছে? না, এটা ট্রাস্টের সম্পত্তি। ২০০৫ সালের ১৯ জানুয়ারি এই জমি কেনা হয়।
আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি (প্রসিকিউটর কাজল) তো আদালত অবমাননার মত কথা বললেন। কী করতে হবে আর কী করতে হবে না তিনি যেন আদালতকে নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি নজির দেখাক, কার আগে কে করবে, দেখাতে পারলে যুক্তি উপস্থাপনই করব না। এরপর মোশাররফ হোসেন কাজলের দুদকের প্রসিকিউটর পদে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, দুদক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, সেখানে কোনো দলীয় লোকজন থাকতে পারে না। তিনি তো আওয়ামী লীগের সদস্য। এরপরও দুদক কীভাবে তাকে ওই পদে রেখেছে। আর আদালতে তিনি তো দুদকের প্রসিকিউটরের মতো নন বরং আওয়ামী লীগ নেতার মতো আচরণ করেন। এরপর আইনজীবী আমিনুল বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনে কোনো পার্টির সদস্য পিপি হতে পারে না। এছাড়া তিনি তো শুধু দুদকের পিপি নন, তার আরো অনেক চরিত্র আছে। এক সঙ্গে তিনি কীভাবে এতগুলো পদ দখল করে থাকেন। আর দুদক কিভাবে এটা অনুমোদন করে।
তিনি আরো বলেন, দুদকের আইনজীবী বলছেন, ২০০৫ সালের পর এই ট্রাস্টে কোনো লেনদেন হয়নি। এমন সহিংস আন্দোলনের পর লেনদেনের সুযোগ দিলেন কোথায়? ট্রাস্টের নামে জমি আছে, ভবন আছে, আর কী করতে হবে? দুদকের আইনজীবী হাস্যকর খোঁড়া যুক্তি দেখিয়েছেন।
আমিনুল ইসলাম পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, খালেদা জিয়া ট্রাস্টের হিসাবে কেন প্রধানমন্ত্রীর পদ লিখবেন? প্রত্যেক মানুষের দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত কাজ আছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সিলেটে গিয়ে যে ভাষণ দিয়ে এসেছেন, সেটা কি প্রধানমন্ত্রীর কাজ? তিনি তো তা-ই করে এসেছেন।
পরে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল দাঁড়িয়ে বলতে থাকেন, উনি (আমিনুল ইসলাম) তো সক্রেটিসের মতো কথা বলছেন। উনি তো আইনস্টাইন হয়ে গেছেন। এর নাম কি যুক্তিতর্ক? কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ আদালতে টেনে আনছেন?’ দুজনের বাগ্বিতন্ডার এই পর্যায়ে দুই পক্ষের কয়েকজন আইনজীবীও এতে যোগ দেন।
এই সময় আদালতের বিচারক বলতে থাকেন, আপনি মামলার প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করুন। তারপরও দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতন্ডা চলতে থাকলে বিচারক দুপুর ১২টার দিকে এজলাস ত্যাগ করেন। তবে কিছুক্ষ পর তিনি আবার এজলাসে ফিরে আসেন। এরপর বিচারক আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর (খালেদা জিয়া) সামনে কীভাবে এরকম হট্টগোল করেন? ম্যাডামের সম্মানের দিকে আপনারা কি লক্ষ্য করছেন না? তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বিতর্ক হতেই পারে। তাই বলে জুনিয়র আইনজীবীরা কেন হট্টগোল করবেন? আপনারা সিনিয়রদের দিকে লক্ষ্য করেন, তারা কীভাবে চুপ করে ছিলেন। পরে আবারও শুনানি শুরু হলে আইনজীবী আমিনুল ইসলাম তার যুক্তি উপস্থাপন চালিয়ে যান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।