Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুমিনুলে উচ্ছ¡সিত তামিম

| প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : বাংলাদেশ ক্রিকেটে আগে খুব একটা দেখা যেত না এই চিত্র। এখন নিয়মিতই হয়েছে সেটি। সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবালের আগমন। ব্যাটিংয়ে যেমন ঝড়ো, সাংবাদিকদের সামনে ঠিক ততটাই মুখচোড়া বলে ‘দুর্নাম’ ছিল এই ওপেনারের। তবে সময়ের সাথে পাল্টেছে চিত্র। এখন বেশ স্বচ্ছন্দ বোধ করেন বলেই কিনা দিন শেষে তাকেই আসতে দলের ফিরিস্তি শোনাতে। গতকালও যেমন হল। এসেই ঝড়ো ব্যাটিংয়ের মতই শুরু করলেন প্রশ্নত্তোর পর্ব। যার সিংহভাগই ছিল অবশ্য একজনকে নিয়ে- মুমিনুল হক। তার ব্যাটে চড়েই চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ।
ভিতটা অবশ্য দাঁড় করিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন তামিম-ইমরুল মিলেই। তার পরও মুমিনুলের ইনিংস ও মুশফিকের সাথে পার্টনারশিপের উচ্ছ¡সিত প্রসংশা ছিল তামিমের কণ্ঠে, ‘প্রথম থেকেই সে অ্যাটাকিং ছিল এবং স্ট্রাইক করেছে। সেঞ্চুরি করার সময় তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১০৩। আমরা জানতাম যে প্রথম দিনে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটটি ব্যাটিং সহায়ক থাকবে। এ ধরনের ভালো উইকেটে ব্যাটসম্যানরা অনেক সময় বেপরোয়া হয়ে খেলতে গিয়ে উইকেট থ্রো করে আসে। কিন্তু মুমিনুল সেটা করেনি।’
মুমিনুল অপরাজিত ১৭৫ রানে। প্রথম দিনে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৩৭৪। টেস্ট ক্রিকেটে দেড় যুগের পথচলায় প্রথম দিনে বাংলাদেশের এটিই সর্বোচ্চ রান। আগের সর্বোচ্চ ছিল ৩৬৫। সব দিন মিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ। সেই সাথে নিজের একটি মাইলফলকও ছুঁয়েছেন বাংলাদেশের লিটল মাস্টার। রেকর্ড গড়েই ছুঁলেন ২ হাজার টেস্ট রান। এত অর্জনেও ম্যাচের গতিপথ পরখ করে শ্রীলংকার বোলারদের চাপে ফেলার যে পরিকল্পনা সেটি বেশ ভালোই কাজে লেগেছে। কী ছিল সেই পরিকল্পনা সেটিও জানিয়েছেন তামিম, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে আমি যদি পজিটিভ শুরু করি প্রতিপক্ষ চাপের মধ্যে পড়বে। এবং হয়েছেও তাই। যে পরিকল্পনাটা আমি করেছি সেটা কাজে লেগেছে। ওদের মূল বোলার যারা আছে তাদেরকে প্রথম বল থেকেই আক্রমণ করার পরিকল্পনা ছিল। সফলভাবে আমি সেটা করতে পেরেছি। প্রথম দিনে ব্যাটসম্যানদের পারফর্মেন্সে সন্তুষ্ট থাকলেও একে ‘পূর্ণাঙ্গ’ বলতে চান না তামিম। যেভাবে দ্বিতীয় উইকেট পার্টনারশিপটা হয়েছে তারাই যদি দিনের শেষ পর্যন্ত টিকে থাকত তাহলেই তা বলা যেত। এ প্রসঙ্গে তামিম বলেন, ‘আমরা একটু চিন্তিত ছিলাম যেন ব্যাটিংয়ে ধস না নামে। সাধারণত যখনই একটা বড় পার্টনারশিপ হয় তখনই ধস নামার আশঙ্কা থাকে। হয়তো বা আমাদের ক্ষেত্রে এটা একটু বেশি হয়। এটা নিয়েই আমরা ব্যাটসম্যানদেরকে যতটুকু মেসেজ দেয়া যায় দেয়ার চেষ্টা করেছি। দুর্ভাগ্যক্রমে মুশফিক আউট হয়ে যাওয়ার পর দুইজন আউট হয়ে গেল।
চট্টগ্রামের পিচে স্পিন ধরবে বলে ধারনা করা হচ্ছিল সেখানে এত রান পাওয়াটা কি প্রত্যাশিত ছিল? এমন প্রশ্নের উত্তরে তামিম বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ আমাদের করা উচিৎ না কারণ আমরা প্রথমে ব্যাট করেছি। আশা করছি আগামীকাল (আজ) থেকে স্পিন ধরবে যখন তারা (শ্রীলঙ্কা) ব্যাটিংয়ে আসবে। আমাদের এখন দায়িত্ব হল আমরা এখন একটা শক্তিশালী অবস্থানে আছি এই অবস্থাকে ধরে রেখে যতটা বেশি রান করে নেয়া যায়। আমরা এখন যে অবস্থানে আছি সেখান থেকে অনেক রান করা সম্ভব। প্রথমদিনে ৩৭৪ রান। সবসময়তো আমরা এমন অবস্থানে থাকি না। এখনো আমাদের হাতে ছয়টি উইকেট। খুব ভালো একটা রানরেটে আমরা স্কোর করেছি। সুতরাং আগামীকাল (আজ) যাতে একটা সুন্দর শুরু করতে পারি সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। কালকে (আজ) কেমন শুরু করি সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। কারণ ক্রিকেট একটা মজার খেলা। ওদের কোয়ালিটি বোলার আছে। সক্ষমতা আছে কামব্যাক করার। কিন্তু আমাদের যে দুই ব্যাটসম্যান আছে তারাও যথেষ্ট পারঙ্গম বড় স্কোর করার জন্য।’
উইকেট প্রতি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি

উইকেট রান জুটি প্রতিপক্ষ ভেন্যু সাল
১ম ৩১২ তামিম-ইমরুল পাকিস্তান খুলনা ২০১৫
২য় ২৩২ শামসুর-ইমরুল শ্রীলঙ্কা চট্টগ্রাম ২০১৪
৩য় ২৩৬ মুমিনুল-মুশফিক শ্রীলঙ্কা চট্টগ্রাম ২০১৮
৪র্থ ১৬৭ নাঈম-সাকিব উইন্ডিজ ঢাকা ২০১২
৫ম ৩৫৯ সাকিব-মুশফিক নিউজিল্যান্ড ওয়েলিংন্টন ২০১৭
৬ষ্ঠ ১৯১ আশরাফুল-মুশফিক শ্রীলঙ্কা কলম্বো ২০০৭
৭ম ১৪৫ সাকিব-মাহমুদউল্লাহ নিউজিল্যান্ড হ্যামিল্টন ২০১০
৮ম ১১৩ মুশফিক-নাঈম ইংল্যান্ড চট্টগ্রাম ২০১০
৯ম ১৮৪ মাহমুদউল্লাহ-আবুল হাসান উইন্ডিজ খুলনা ২০১২
১০ম ৬৯ রফিক-শাহাদাত অস্ট্রেলিয়া চট্টগ্রাম ২০০৬

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ