নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : প্রায় চার বছর পর অপ্রত্যাশিতভাবে দলে ডাক পেয়ে রীতিমত অবাক অফস্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। প্রথমে বিশ^াসই হয়নি। খবরটা প্রথমে তাকে জানান আকরাম খান। কিন্তু তেমন কনফার্ম না। খানিকটা ভাসাভাসা গোছের। পরে আরো দু’জনের ফোন আসে। প্রথমটি বিসিবি’র সজীবের কাছ থেকে। সজীব তাকে টিমে ফেরার জন্য অভিনন্দন জানান। কিন্তু তখনও পুরোপুরি বিশ^াস হয়নি। সবশেষে ফোন আসে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর কাছ থেকে। তারপরই বুঝতে পারেন ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েছে। কতটা ভালো লাগছে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই খবরটি পেয়ে। উত্তরে রাজ্জাক বলেন, ‘ডেফিনিটলি ভালো লাগারতো ব্যাপার আছে। আমি খুবই অবাক হয়েছি। চিন্তাও করিনি এই টাইমে। মাথায় ছিলই না। পরে যখন জানতে পারলাম, আমাকে বলার পরেও বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছে, ঠিক আছে কিনা সবকিছু। আকরাম ভাইয়ের সাথে আমার কথা হয়েছিল। কিন্তু সেইরকম ক্লিয়ার কিছু না। পরে ক্রিকেট বোর্ডের সজীব ভাই আমাকে ফোন করেছিল। উনি টিকেট কনফার্ম করে আমাকে ফোন করেছিলেন। উনি আমাকে কংগ্রেচুলেশন জানালেন। সজীব ভাইকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কিসের জন্য, ৫০০ উইকেটের জন্য নাকি? উনি বললেন, আরে না টিমে চান্স পেয়েছেন। তারপর নান্নু ভাই ফোন করেছেন। তখন আমি পুরোপুরি কনফার্ম হয়েছি।’
অবশ্য চার বছর আগে দল থেকে বাদ পড়ার পরও আশা ছেড়ে দেননি রাজ্জাক। তার বিশ^াস ছিল ভালো খেললে ঠিকই একদিন তার ডাক পড়বে। রাজ্জাক বলেন, ‘আমি আসলে সবসময় বলেছি খেলার মধ্যে না থাকলে অথবা কোনো লক্ষ্য না থাকলে ডমেস্টিকে ভালো খেলা যায় না। প্রত্যেকটা প্লেয়ারেরই লক্ষ্য থাকে জাতীয় দলে খেলার। সেটা আমারও ছিল। কিন্তু এইসময়ে এভাবে হবে আমি সেটা বুঝতে পারিনি।’ এই সুযোগটা আরো আগেই পাওয়া উচিৎ ছিল কিনা, এমন প্রশ্নের কৌশলী জবাব দিলেন এই অফস্পিনার, ‘আগে-পরের কথা জানি না। ভাগ্য আপনাকে যখন ডেকে নিয়ে আসবে তখনই হবে। আগে-পরের কথা বাদ দেন।’
ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে আবার টেস্ট খেলা শুরু করে ক্যারিয়ারটা কীভাবে সাজাবেন বা পরিকল্পনাই বা কী রাজ্জাকের? উত্তরে বলেন, ‘আমার পরিকল্পনা ভেরি সিম্পল। যখন যেটা খেলি চেষ্টা করি ভালো করার। এখন যদি ভালো করি তাহলে পরেরটা নিশ্চয়ই ভালো আসবে। বড় প্ল্যান নিয়ে আমার কখনোই কিছু করা হয় না। মধ্য ত্রিশে আমাদের দেশের অনেক ক্রিকেটারই ক্যারিয়ারে ইতি টানেন। আপনি কি এক্ষেত্রে অন্যদের সামনে একটি উদাহরণ হয়ে থাকলেন? রাজ্জাক ফের মিষ্টি হাসি ছড়িয়ে বললেন, আমার মনে হয় জিনিসটা অবশ্যই সবার মধ্যে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকা উচিৎ। এটা মনে করা উচিৎ না যে আমি কেন পারছি না বা এখনই সব শেষ হয়ে গেল কেন। আপনি ভালো খেলতে থাকলে একসময় না একসময় টিমের আপনাকে প্রয়োজন হবেই। জায়গা তৈরি করে নিতে সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হয়। সেই অপেক্ষাটা কতদিনের হবে সেটা চিন্তা করা ডিফিকাল্ট।’
ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে আহত সাকিব আল হাসান এই টেস্টে থাকছেন না। তার অনুপস্থিতি কি টিমের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে? রাজ্জাক বললেন, ‘সাকিব শুধু আমাদের দেশেরই না, বিশে^র সেরা অলরাউন্ডার। ওর জায়গাটা পূরণ করা টিমের জন্য একটু কঠিন। কারণ ওর জায়গায় একটা বোলার নিতে হয়, একটা ব্যাটসম্যান নিতে হয়। সেটাও পুরোপুরি ওর মত হবে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ থেকে যায়। ও রেগুলার খেলছে খেলার মধ্যে আছে। ও অনেক ম্যাচিউর ছেলে। টিমের একটা সমস্যাতো হবেই। তবে কোনো না কোনোভাবে এটা ম্যানেজ করতে হবে।’ শেষ দু’টি ওয়ানডে জিতে শ্রীলংকা বেশ চনমনে। এখানে কি ধরনের প্রত্যাশা। উইকেট থেকে কোনো চাওয়া আছে কিনা? রাজ্জাক বলেন, আমি অনেকদিন ধরে টিমের বাইরে ছিলাম। এসব নিয়ে চিন্তার সুযোগ পাইনি। আর এটা নিয়ে আমার কথা বলা উচিৎ হবে না। কারণ টিম ভালোভাবে সেট হয়ে আছে। আর টিম ম্যানেজমেন্ট এটা নিয়ে চিন্তা করবে।
হাথুরুসিংহে যখন বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ ছিলেন তখন পুরো সময়টাই তাকে টিমের বাইরে থাকতে হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই ফের দলে ডাক পাওয়া। কাকতালীয়ভাবে প্রতিপক্ষ সেই হাথুরুর শ্রীলংকা। রাজ্জাক কি প্রতিশোধের আগুনে জ¦লছেন। মনের মধ্যে কি বাড়তি কোনো জেদ বা তাড়না অনুভব করছেন? যদি সেরা একাদশে সুযোগ হয়েই যায়, তাহলে কী করার পরিকল্পনা রাজ্জাকের? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে নিজের স্বভাবসুলভ স্মিত হাসি উপহার দিয়ে বলেন, ‘আরে না, সেইরকম কিছু না। এটা পার্ট অব লাইফ, পার্ট অব ক্রিকেট। যে কোনো কাজেই কখনো ভালো সময় আসে আবার কখনো আসে দুঃসময়। ভালোর পরে খারাপ সময় আসবে। কখনো ভাগ্য সহায় থাকবে কখনো থাকবে না। এরকমই হয়। সবকিছু আসলে পজিটিভলি নিতে হয়। যদি সুযোগ পাই চেষ্টা করবো ভালো খেলার। এটা হাথুরুসিঙ্গের জন্য নয়। এটা আমার নিজের জন্য এবং অবশ্যই আমার টিমের জন্য।’
বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ ওয়ানডে উইকেটের মালিক আব্দুর রাজ্জাক টেস্ট খেলেছেন ১২টি। তাতে ৬৭.৩৯ গড়ে পেয়েছেন ২৩ উইকেট। ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগার ৯৩/৩। সবশেষ সাদা পোষাকে খেলেছিলেন এই চট্টগ্রামেই, ২০১৪ সালের ফেব্রæয়ারিতে। প্রতিপক্ষ সেবারও ছিল শ্রীলঙ্কা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।