Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পেসার থেকে স্পিনার নাঈম

| প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : পিতা মাহবুবুল আলম ছিলেন চট্টগ্রামের প্রথম বিভাগের ফুটবলার। কিন্তু পিতার পথ অনুসরণ করেননি ছেলে নাঈম হাসান। স্কুল লেভেল থেকেই ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন তিনি। এরপর স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে একসময় চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় দলে সুযোগ পান নাঈম। সেইসঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৭ ও ১৯ দলেও সুযোগ হয় তার। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলছিলেন তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। সেখান থেকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় শ্রীলংকার বিপক্ষে হোম টেস্ট সিরিজের জন্য। এই হোম সিরিজের জন্য ঘোষিত ১৬ জনের স্কোয়াডে রয়েছেন নাঈম। চট্টগ্রামের ছেলে হওয়ায় চট্টগ্রাম টেস্টের একাদশেও দেখা যেতে পারে তাকে। এমন সুযোগ পেলে যে হাতছাড়া করবেন না তা গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দলের সঙ্গে প্র্যাকটিস করতে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়ে গেলেন অফস্পিনার নাঈম হাসান, ‘যদি সুযোগ পাই তাহলে আমি শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করব। উইকেট পাওয়া কপালের ওপর নির্ভর করে। সেটা আগে থেকে বলতে পারব না। চেষ্টা করবো ভালো জায়গায় বোলিং করার।’
অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ^কাপ থেকে সরাসরি টেস্ট ম্যাচ, এই জার্নিটাকে কিভাবে দেখছেন এই অফস্পিনার। জানালেন এরকমটা তিনি আশাও করেননি। তবে স্বপ্ন ছিল মিরাজের (মেহেদী হাসান মিরাজ) মত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ^কাপ শেষ হওয়ার পর টেস্ট দলে ডাক পাওয়ার। কিন্তু সুযোগটা এলো তার আগেই। নাঈম বলেন, ‘ম্যাচ শেষে জানতে পারলাম টেস্ট টিমে ডাক পেয়েছি। খবরটা দিয়েছিলেন টিম ম্যানেজার। ম্যাচটা হারার কারণে অনেক খারাপ লাগছিল। কিন্তু টিমের সবাই তখন বলছিল সমস্যা নাই ওখানে (টেস্টে) ভালো করবা।’
তিনি চট্টগ্রামের ছেলে। চট্টগ্রামের মাটিতে অভিষেক হলে সেটা স্মরণীয় করে নিজের শতভাগ উজাড় করে খেলবেন তিনি, ‘জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আমার এনসিএল, বিসিএল, বিপিএল সবকিছুরই অভিষেক হয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে জাতীয় দলের ড্রেসিং রুমে। এত তারকা ক্রিকেটারের সাথে থাকতে পেরে অনুভূতি কেমন নাঈমের। জানালেন, ‘এর আগে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ম্যাচের সময় উনাদের (তারকা ক্রিকেটার) সাথে ড্রেসিং রুম শেয়ার করেছি। তবে এখনকার অনুভূতিটা অন্যরকম। টিমের সবাই খুব হেলপফুল। আগেও উনার হেলপ করেছে। তখনতো এমননিতেই ছিলাম। আর এখন টিমে আছি।’
হতে চেয়েছিলেন পেসার। কিন্তু হয়ে গেলেন স্পিনার। কীভাবে, সেই গল্পটাও শোনালেন নাঈম, ‘আমি ক্রিকেট শুরু করেছি পেস বল দিয়ে। তখন আমার এতটা হাইট ছিল না। একাডেমিতে বড় ভাইরা বলেছিল তুমি স্পিনার হও। আমার কোচ বাইরে ছিলেন। উনি আসার পর উনার সাথে কথা বলে স্পিনার হয়েছি। টিমে বড় বড় স্পিনার আছে। চেষ্টা করবো উনাদের কাছে ভালো কিছু শেখার। টেস্টে সুযোগ পেলে শতভাগ উজাড় করে খেলবো। স্পিনার হিসেবে কি কি ভেরিয়েশন আছে আপনার কাছে জানতে চাইলে ৬ ফুট উচ্চতার এই কিশোর বলেন, ‘উচ্চতার কারণে বাউন্সটা খুব ভালো হয়। আর বাংলাদেশের উইকেটেতো টার্ন পাওয়া যায়। কিরকম সিমে বল করলে উইকেট পাওয়া যায় সেটা দেখতে হবে।’
ক্রিকেটার হওয়ার পেছনে বাবা, মা ও ভাইকে বড় অনুপ্রেরণা মনে করেন নাঈম। একসময় অনুসরণ করতেন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার ওয়াটসনকে। তবে এখন তার প্রিয় বাংলাদেশের সাকিব ও তামিম। গতকাল কথা হয় নাঈমের বাবা মাহবুবুল আলমের সাথে। নিজেও একসময় চট্টগ্রাম প্রথম ফুটবল লীগে খেলেছেন। এখন তিনি চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়নের সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ছেলে বাংলাদেশ স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়ায় ভীষণ খুশী তিনি। তার বিশ্বাস, ধীরে ধীরে আরো পরিণত হবে নাঈম। দেশের জন্য দলের জন্য ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করুক এবং দলে স্থায়ী হোক এটাই স্বপ্ন, এটাই প্রত্যাশা নাঈমের বাবা মাহবুবুল আলমের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ