হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির খড়গ : আসামের এনআরসি এবং বাংলাদেশ
কিশোর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক দাবীর আন্দোলনে ঢাকাসহ সারাদেশে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছিল,
নানামুখী চাপের মুখে পড়েছে অর্থনীতি। এ চাপ আগামীতে বাড়তে পারে, আশংকা করছেন অর্থনীতিবিদদের। আগাম ও মওসুমী বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি, লাখ লাখ টন খাদ্য আমদানি, প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ গত ছয় মাসের ঘটনা। অপ্রত্যাশিত এসব ঘটনা অর্থনীতিতে বিভিন্ন ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। বন্যায় বোরোর ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার। আমন উৎপাদন ও ব্যহত হয়েছে। ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার আমন উৎপাদন সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে ইতোমধ্যে আমদানি করা হয়েছে ৫ হাজার ১১৮ কোটি টাকার চাল। বন্যায় অবকাঠামো ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ১০০ কোটি টাকার। অবকাঠামো মেরামতে এই অর্থ চাওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে। ওদিকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে তা মাত্রাতিরিক্ত একটি বাড়তি চাপ। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরগুলোতে প্রতিদিন ৮শ’ টন কাঠ ব্যবহৃত হচ্ছে রান্নাবান্নার জ্বালানি হিসাবে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ কোটি টাকার কাঠ পোড়ানো হয়েছে। ওই এলাকায় বন-পাহাড়-পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার ১৪০ একর বনভূমি নষ্ট হয়েছে। পাহাড় কাটা হয়েছে নির্বিচারে। এফএও’র হিসাবে বনের কাঠ যেভাবে কেটে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে এক বছরে ৩ লাখ টন কাঠ ধ্বংস হতে পারে। বলা বাহুল্য, এই সঙ্গে পাহাড়ের চিহ্নও আর থাকবে না। রোহিঙ্গারা কবে স্বদেশে ফিরতে পারবে, তার ঠিক-ঠিকানা নেই। মিয়ানমারের সঙ্গে এ ব্যাপারে যে চুক্তি হয়েছে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে, সিপিডি’র মতে, অন্তত বছর সময় লাগবে তাদের দেশে ফিরতে। এতে ব্যয় হবে কমপক্ষে ৩৬ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এই ৭ বছরে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়বে এবং মূল্যস্ফিত হবে। এতে আর্থিক ব্যয় আরও বাড়বে এবং সাকুল্য ব্যয় গিয়ে দাঁড়াবে ৭৮ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। উল্লেখ করা যেতে পাারে, চুক্তি অনুযায়ী, ২৩ নভেম্বর থেকে ২৩ জানুয়ারির মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া শুরুই হয়নি।
বন্যায় ফসলহানির কারণে চালের মূল্য আকাশ ছুঁয়েছে। ৫৭ লাখ টন চাল আমদানির পরও বাজারে বড় কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। এখনো ৫০ টাকার নীচে (প্রতিকেজি) কোনো চাল নেই। চালের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সাধারণ ক্রেতার ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছে। মূল্যস্ফীতি সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় বেড়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেড়েছে। নিম্ন, স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের জীবনযাপন রীতিমত দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। তাদের আয়ের বড় অংশটিই খাদ্যপণ্য কিনতে ব্যয় করতে হচ্ছে। ফলে অন্যান্য জরুরি প্রয়োজন পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র খাদ্যমূল্য বাড়ার কারণে কয়েক লাখ মানুষ দরিদ্রসীমার নীচে চলে গিয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ও মাথাপিছু আয় বাড়লেও জনজীবনে তার শুভ কোনো প্রভাব পড়েনি। উল্টো দারিদ্র ও আয় বৈষম্য বেড়েছে। সিপিডি’র অর্থনৈতিক পর্যালোচনা বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দরিদ্র হ্রাসের হার কমেছে। ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বেড়েছে। ২০০৫ সালে সবচেয়ে দরিদ্র ৫ শতাংশ মানুষের হাউজহোল্ড ইনকাম বা খানাপ্রতি আয় ছিল ১১০৯ টাকা। ২০১৬ সালে তা কমে ৭৩৩ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। পক্ষান্তরে সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশের খানাপ্রতি আয় ছিল ৩৮ হাজার ৭৯৫ টাকা। ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৯৪১ টাকা। এতেই অনুধাবন করা যায়, ধনী-দারিদ্রের ব্যবধান কী মাত্রায় বেড়েছে। যেখানে ধনী ৫ শতাংশ মানুষের হাতে দেশের মোট আয় ও সম্পদের ৫১.৩২ শতাংশ কেন্দ্রিভূত হয়ে আছে, সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের অবস্থা কী, বা কী হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের গালভরা দাবির যে আসলেই কোনো ভিত্তি নেই, তা বুঝার জন্য আর কোনো পরিসংখ্যান উল্লেখ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। উন্নয়ন দিয়ে কী হবে যদি তা সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে কিছুমাত্র ভূমিকা না রাখে?
অর্থনৈতিক খাত বিশেষ করে ব্যাংকিং উপখাত রীতিমত বিপর্যয়কর অবস্থায়, পতিত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকিং উপখাতে যে ধরনের বেপরোয়া অনিয়ম-দুর্নীতি ও যথেচ্ছাচার হয়েছে, তার কোনো পূর্বনজির নেই। এখন এর অনিবার্য প্রতিক্রিয়া ব্যাংকিং উপখাতেই নয়, অর্থনৈতিক খাতের বিভিন্ন দিক-বিভাগেও প্রতিফলিত হতে দেখা যাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট আরও গভীর হয়েছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে অতিরিক্ত তারল্যের পরিমাণ ছিল ৯২ হাজার কোটি টাকা। অথচ এখন ঋণ দেয়ার সময়, কোনো টাকা নেই। স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়ার যুগ শেষ হয়ে গেছে। এখন উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে শিল্প কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ করতে হবে। এ মুহূর্তে ব্যাংকিং সিস্টেম একটি বিস্ময়কর ও সংকটজনক পরিস্থিতিতে নিপতিত। বিগত কয়েক বছরে নির্বিচার অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের শিকার হয়েছে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত বেরিয়ে এসেছে ভয়ংকর সব তথ্য। প্রশ্ন উঠেছে, নিয়মবিধি লংঘন করে কীভাবে ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল অংকের ঋণ দিলো ব্যাংকগুলো? নামী-দামী কিছু প্রতিষ্ঠানকে খেলাপি বা অপরিশোধিত ঋণ পুন:তফসিলি করণের নামে নতুন করে ঋণ দিতে পারলো কীভাবে? তদন্তে দেখা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ঋণদুর্নীতি হয়েছে। বিসমিল্লাহ গ্রæপ ২০১১-১২ সালে ৫টি ব্যাংক থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। ২০১২ সালে সোনালী ব্যাংকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণদুর্নীতি হয়েছে। সাম্প্রতিককালে এ তথ্য মিলেছে। ফার্মার্স ব্যাংক ও এনআরবি কর্মাশিয়াল ব্যাংকেও এ ধরনের ঋণদুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে বেশিরভাগ ব্যাংক আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ের আশ্রয় নিয়েছে। তাদের দেয় ঋণের একটি বড় অংশ খেলাপী ঋণে পর্যবসিত হয়েছে। বেসরকারীখাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে তারা। কম সুদে ব্যাংক ঋণ সব সময়ই আকর্ষণীয়। গত ডিসেম্বরে ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশে উপনীত হলেও বড় উদ্যোক্তারা ঋণ পেয়েছে ১০ শতাংশ সুদে। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলো তাদের ভল্টে যথেষ্ট পরিমাণ আমানত জমা করতে পারেনি। তারা আমানতের সুদের হার কমিয়ে দেয়ার ফলে আমানতকারীরা ব্যাংকের বদলে সরকারের বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছে কিংবা লিজিং কোম্পানীর দ্বারস্থ হয়েছে। অনেকে এমনকি তাদের অর্থ বিদেশে নিয়ে গেছে। এখন ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার বাড়িয়েছে যদিও তা খুব কাজে আসছে না। অন্য একটি ফ্যাক্টরও কাজ করেছে। তাদের বেশির ভাগ ঋণগ্রহীতা ঋণখেলাপীতে পরিণত হয়েছে অথবা রিপেমেন্টে অপারগতা প্রদর্শন করেছে। ফলে ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থের সংকট প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে মন্দঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১০.৬৭ শতাংশ যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯.২৩ শতাংশ। ১৫ হাজার কোটি টাকার বৃহত ঋণ পুন: তফসিলিকরণ করা হয়েছিল ২০১৫ সালে। এই ঋণেরও বড় অংশটি ক্লাসিফাইড ঋণে পরিণত হয়েছে। এও স্মরণ করা দরকার, ব্যাংকগুলো কী পরিমাণ ঋণ দিতে পারবে তার একটি বিধিমালা আছে। দেখা গেছে, অনেক ব্যাংক বিধিলংঘন করে বেশি ঋণ দিয়েছে। এর ফলে এসব ব্যাংক এখন বড় রকমের বিপাকে পড়েছে। আন্তর্জাতিক কিছু বিষয়াসায়ও ব্যাংকিং উপখাতের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। পণ্যমূল্য বাড়ার পাশাপাশি তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারেল প্রতি ৭০ ডলার। তুলার দামও বাড়ছে। ভারত ইতোমধ্যে এক্ষেত্রে বড় ধরনের কিছু চুক্তি বাতিল করেছে। আরও কারণ রয়েছে। পণ্য, কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি বেড়েছে। বেড়েছে নানাভাবে ডলার পাঁচার। ফলে ডলারের চাহিদা ও দাম দুই-ই বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। আমদানির জন্য ডলার প্রয়োজন। যেহেতু ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে এবং দাম বেড়েছে ও বাড়ছে সেক্ষেত্রে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য ও উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ নানা ক্ষেত্রে বিশেষ করে পণ্যমূল্যের ক্ষেত্রে তাড়তে বাধ্য। মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশি পরিমাণে ডলার বিক্রী করার পথ অনুসরণ করে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১২৫ কোটি ডলার বিক্রী করা হয়েছে। এর মধ্যে গত সাপ্তাহের একদিনেই বিক্রী করা হয়েছে ৪ কোটি ডলার। গড় চাহিদার তুলনায় এটা অনেক বেশি হলেও বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি ডলার বিক্রী করেছে ৮২.৯০ টাকা করে। অন্যদিকে কোনো কোনো ব্যাংক ৮৪.৮৫ টাকা আদায় করে নিয়েছে গ্রাহকের কাছ থেকে। তা সত্তে¡ও ডলারে সংকট ও দাম কমেনি।
ডলারের দামে এই অস্বাভাবিক উল্লম্ফনের প্রধান কারণ হিসাবে অবৈধ পথে টাকা পাচারকে... দায়ী করেছেন অর্থনীতিবিদগণ। তাদের মতে, নির্বাচনের বছর স্বাভাবিকভাবে টাকা পাচার বেড়ে যায়। ২০১৮ সাল যেহেতু নির্বাচনের বছর, কাজেই টাকা পাচার বেড়েছে এবং আগামীতে আরো বাড়তে পারে। ক্ষমতার সম্ভাব্য রদবদল, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংঘাতের আশংকায় বড় বড় দলের নেতা, ঠিকাদার, ব্যবসায়ীর পাশপাশি দুর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবৈধ পথে টাকা পাচারে তৎপর হয়ে উঠেছে। টাকা পাচারের এই ধারা প্রতিহত করা না গেলে আগামীতে বাড়তেই থাকবে। টাকা পাচার বলার অপেক্ষা রাখেনা, উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরেই একটা প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে আছে। অর্থনীতি আকারে ছোট হলেও টাকা পাচারের অংক সেই তুলনায় অনেক বড়। জিএফআই’র রিপোর্ট মোতাবেক, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর পাচার হয়ে যাচ্ছে গড়ে ৪৪ হাজার ৫৫৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে প্রতিবছর ৪৯১ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। নির্বাচনের বছর ২০১৪ সালে সব মিলে টাকার অংকে পাচার হয় ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। টাকা পাচারের পুরোটাই হয় ডলারে। এবার নির্বাচনের বছর হওয়ার ডলার পাচার যেমন বাড়ছে তেমনি আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে মিথ্যা ঘোষণাও পাচার বাড়ছে। এসব কারণ ছাড়াও বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধন এবং আমদানি-বাড়ার কারণেও ডলারে টান পড়েছে। জানা গেছে, ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে শুরু করেছে।
ব্যাংকিং উপখাতের সার্বিক নাজুক হাল উন্নয়ন কার্যক্রমসহ আমদানি-রফতানি ও পণ্যমূল্যের ওপর যে বৈরি প্রভাব বিস্তৃত করছে, তাতে গোটা অর্থনীতিই বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা করছেন অর্থনীতিবিদগণ। সরকার তার মেয়াদের শেষ বছরে অসমাপ্ত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য কাঁচামালসহ মূলধন যন্ত্রপাতি আমদানি বাড়বে। তাতে সরকারী ব্যয় অন্যান্য বছরের তুলনায় বাড়বে। সরকারের আয়ের উৎসসমূহ প্রত্যাশা অনুযায়ী অর্থের যোগান দিতে পারবে, এমন ভরসা কম। বৈদেশিক সহায়তা বাড়বে বলেও মনে হয়না। এমতাবস্থায়, সরকার ব্যাংকিং উপখাতের ওপর আরো ঝুঁকে পড়তে পারে। ব্যাংকিং উপখাত সরকারের দাবি মেটাতে গেলে বেসরকারী বিনিয়োগে আরো ভাটার টান পড়বে। আর বিনিয়োগ কমার কারণে কর্মসংস্থান হবে সংকুচিত। ব্যবসা-বাণিজ্যও সেভাবে বাড়বে না। আশংকার এসব দিক সরকারকে এখনই আমলে নিতে। নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধ করার পাশাপাশি টাকা পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে দুর্নীতি নিরোধ করতে হবে। বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সরকারের যাবতীয় ব্যয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। সকল ক্ষেত্র ও পর্যায়ে পরিমিতি বোধের পরিচয় দিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।