মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নারীদের প্রতি প্রেসিডেন্টের কোনো সম্মানবোধ নেই : আকবায়ান ওইমেনস
ইনকিলাব ডেস্ক : ফিলিপাইনে পর্যটক আকৃষ্ট করতে ‘৪২ জন কুমারী’ অর্পণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতার্তে। নয়াদিল্লিতে ভারতীয় ও ফিলিপিনো ব্যবসায়ীদের একটি সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি। ওই সভার উদ্দেশ্য ছিল ফিলিপাইনে বিনিয়োগ করতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা। তিন দিনের এক সফরে ভারতের রাজধানীতে অবস্থান করছিলেন দুতার্তে। সেখানে তিনি ভারত ও আসিয়ান নেতাদের মধ্যকার একটি সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। অংশ নিয়েছেন ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানেও। আল-জাজিরার এক খবরে বলা হয়েছে, দুতার্তের এই ‘৪২ জন কুমারী’ সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিপাইনের একটি নারী অধিকার আন্দোলন গোষ্ঠী। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘আমরা এমন প্রেসিডেন্ট পাওয়ার যোগ্য যিনি সব ফিলিপিনোর প্রতিনিধিত্ব করেন। যার কিনা নারীদের অধিকার ও মর্যাদার প্রতি সম্মান রয়েছে।’ আকবায়ান ওইমেনস নামে ওই সংগঠনটি আরও বলেছে, ফিলিপিনো নারীদের প্রতি প্রেসিডেন্টের কোনো সম্মানবোধ নেই। ওই সভায় দুতার্তে তার দেশের মিন্দানাও দ্বীপ এড়িয়ে চলতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেন। মিন্দানাও অঞ্চলে মুসলিম সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রভাব রয়েছে। গত বছর দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মারাওয়ি প্রায় ৫ মাস ধরে দখলে রাখে এমন একটি মুসলিম গোষ্ঠী। তাদের সমালোচনা করে দুতার্তে বলেন, ‘তারা এটাই বিশ্বাস করে যে, তুমি যদি শহীদ হিসেবে মৃত্যুবরণ কর, তাহলে স্বর্গে ৪২ জন কুমারী তোমার অপেক্ষায় থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইশ! যারা আমার দেশে যেতে চায় তাদের জন্যও যদি এই উপঢৌকন রাখতে পারতাম!’ তার এই কথা শুনে উপস্থিত অনেকে হেসে উঠেন। নিজেকে ‘অর্ধ মুসলিম’ ঘোষণা দিয়ে তিনি আরও বলেন, মিন্দানাওর মুসলিম যোদ্ধারা সেখানকার পরিস্থিতির ওপর একাধিপত্য ভোগ করছে না। তার ভাষ্য, ‘আপনি যখন স্বর্গে যান, তখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রলোভন হলো প্রতিশ্রুত কুমারীরা। আমি এই কুমারীদের এখানে পেতে চাই। স্বর্গে নয়। ঈশ্বর বোধ হয় এটা হতে দেবেন না।’ নিজের বক্তৃতায় দুতার্তে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, তিনি নিজ দেশে দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়ছেন। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে পরে বলা হয়, তিনি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১২৫ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। দুতার্তে এবারই প্রথম নারীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করলেন তা নয়। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে তিনি একজন আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বিজয়ীর কথা উল্লেখ করে ইঙ্গিত দেন, তাকে কেউ ধর্ষণ করতে পারলে তাকে অভিনন্দন জানাবেন তিনি। তিনি বলেন, ‘শিশুদের ধর্ষিত হওয়া আমি পছন্দ করি না। তবে হতে পারে মিস ইউনিভার্স। হয়তো আমি অভিনন্দনও জানাবো তোমাকে, যদি তুমি এমন কাউকে ধর্ষণ করো যে জন্য তোমার মৃত্যু হতে পারে।’ একই বছরের মে মাসে, দুতার্তে মিন্দানাওয়ে অবস্থানরত সেনাদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারা কোনো শাস্তি ছাড়াই সর্বোচ্চ তিনজন নারীকে ধর্ষণ করতে পারবে। নিয়ম নীতি লঙ্ঘনের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘তোমাদেরকে আমি নিজেই জেলে দেব। যদি তোমরা তিনজনকে ধর্ষণ করো, সেই পর্যন্ত আমি মেনে নেব। নিজের কাঁধে নেব।’ গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পাওয়ার আগে নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি ১৯৮৯ সালের একটি দাঙ্গার কথা উল্লেখ করেন। কারাগারে সংঘটিত ওই দাঙ্গায় এক অস্ট্রেলিয়ান মিশনারি খুন হয়েছিলেন। তার আগে তাকে ধর্ষণ করার জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিল হাজতিরা। দুতার্তে বলেন, ওই মিশনারি ছিলেন সুন্দরী। তিনি আরও বলেন, দাভাও দ্বীপের তৎকালীন মেয়র হিসেবে, তার উচিত ছিল ওই সারিতে সবার আগে দাঁড়ানো। এমন মন্তব্যের পর সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হলে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বিতর্কিত, বেসামাল ও অদ্ভুত কথাবার্তা বলার জন্য ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে কুখ্যাতি অর্জন করে ফেলেছেন দুতার্তে। ফিলিপাইনের অনেকেই তার এমন আচরণকে আপত্তিকর মনে করলেও, বেশিরভাগই স্বাভাবিকভাবেই এসব গ্রহণ করেন। আল-জাজিরা, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।