রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মোঃ মোখলেছুর রহমান, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) থেকে
আগামী ৩১ মার্চ ২য় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন জমে উঠেছে। এ নির্বাচনে আলোচিত তিন চেয়ারম্যান ও সমালোচিত এক চেয়ারম্যান প্রার্থী নাম এখন ভোটারদের মুখে মুখে। প্রথমবারের মত দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ক্ষমতাশীন আ.লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ও স্বতন্ত্র থেকে চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তবে ৭টি ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে মোক্তাপুরে মো. শরিফুল ইসলাম সরকার তোরণ, বক্তারপুরে মো. আতিকুর রহমান আকন্দ ফারুক ও তুমলিয়ায় মো. আবু বকর মিয়া বাক্কুকে নিয়েই বেশী আলোচনা হচ্ছে। মোক্তারপুর ইউনিয়নে উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শরিফুল ইসলাম সরকার তোরণ ক্ষমতাশীন দলের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপির রফিকুল ইসলাম পালোয়ান (টুকু)। তিন বারের নির্বাচিত ও স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তোরণ দলীয় এবং জনপ্রিয়তায় শীর্ষে থেকে চতুর্থবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইউনিয়নে তিনি দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার পছন্দের প্রার্থী। এছাড়াও উপজেলার নাগরী ও জামালপুর ইউনিয়নে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও তার ইউনিয়নে তিনিই একক প্রার্থী। মোক্তাপুরের সাধারণ ভোটারগণ বলেন, ইউনিয়নে তোরণের অনেক রিজার্ভ ভোট আছে। দীর্ঘ ১৮ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালীন তিনি ইউনিয়নে জনগণের সামাজিক নিরাপত্তা, মাদক নির্মূল ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধসহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। বক্তারপুর ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আ.লীগের সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আতিকুর রহমান আকন্দ ফারুক। তিনিও তিনবারের নির্বাচিত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান। এবারই নৌকা প্রতীক নিয়ে চতুর্থবারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলমত নির্বিশেষে তিনি সকলের কাছে সমান প্রিয়। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রফিজুল ইসলাম দর্জি। তুমলিয়া ইউনিয়নে জনপ্রিয় মো. আবু বকর বাক্কু পর পর ছয় বারের নির্বাচিত স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি এবার সপ্তমবারের মতো আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। খ্রিস্টান অধ্যুষিত ঐ ইউনিয়নে তিনি দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয়। বিএপির মনোনীত মো. সিরাজ উদ্দিন সিরু তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। স্থানীয় ভোটাররা বলেন, তুমলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাক্কু মারা গেলে তার চেয়ারম্যান পদ নেওয়া সম্ভব। অন্যথায় নয়। জামালপুর ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ মাহবুবুর রহমান (ফারুক মাস্টার) ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ দেওয়ান। তবে এই ইউনিয়নে শিক্ষক ও ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে ফারুক মাস্টারের জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান ও আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. খাইরুল আলম। তাঁর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক অন্যের জমি দখল, বাড়ী ও মার্কেটে অগ্নিসংযোগ করে লুট পাটের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নানা অপকর্মের কারণেই তিনি নানা ভাবে সমালোচিত। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি জোর পূর্বক দখল ও বিক্রির অভিযোগ। বিগত পাঁচ বছরে তিনি নানা অপকর্মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ও বেশ কয়েকটি আলিশান বাড়ীর মালিক হয়েছেন। বাহাদুরশাদী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আহমেদ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপর প্রার্থী আ.লীগের বহিষ্কৃত মোস্তফা কামাল বিদ্রোহী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিএনপি প্রার্থী মোঃ জয়নাল আবেদীন তাঁর নির্বাচনী প্রচার কাজে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের বাধা প্রদান, ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ করলেও তিনি সব কিছুকে উপেক্ষা করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণায় তুঙ্গে আ.লীগ ও বিএনপি প্রার্থীরা। ভোটারদের মন জয় করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন আ.লীগের প্রার্থী গাজী সারোয়ার হোসেন ও বিএনপির প্রার্থী মোঃ নেছার উদ্দিন আহমেদ নুহু। নাগরী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সবচেয়ে বেশী ৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী এস.এম. আলী আহমেদ, বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এড. সিরাজ মোড়ল ও সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কাদির মিয়া, বিএনপির মোঃ আব্দুল রহিম সরকার, ইসলামী আন্দোলনের মোঃ মাওলানা মোঃ মাসুদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হরিপদ চন্দ্র নাগ ও মাহবুব মোল্লা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।