Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেতন-ভাতা না পাওয়া এক প্রধান শিক্ষকের মানবেতর জীবন

প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা

কাজিপুরের পরানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোব্বাত হোসেন তার বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। এতে করে ওই শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জানা গেছে, কোব্বাত হোসেন পরানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। ১৯৯৫ সন থেকে তিনি ঐ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত্র বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাথে দ্বন্দ্বের জেরে তিনি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। এ সময় ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাহিদা খাতুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১২ সানের ২৪ জুন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি তাকে আবারও স্বপদে বহাল করে। এ সময় প্রধান শিক্ষক হিসেবে কোব্বাত হোসেন যথারীতি দায়িত্ব পালন করতে থাকে। ওই বছরের ১২ আগস্ট ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাহিদা খাতুনের অনুসারী কতিপয় অভিভাবক ষড়যন্ত্র করে কোব্বাত হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। বিষয়টি সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামীম আরা দীর্ঘ তদন্ত করেন। তিনি কোব্বাত হোসেনকে বৈধ প্রধান শিক্ষক হিসেবে তার তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেন। এরই মধ্যে ২০১২ সালের ২২ অক্টোবর রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে উক্ত পরিচালনা কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে এডহক কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন। কিন্তু বোর্ডের নির্দেশ জারির পর ওই কমিটি পিছনের তারিখ দেখিয়ে একটি রেজুলেশন করে সাহিদা খাতুনকে আবারো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। এ বিষয়ে বোর্ড কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে নীরব থাকে। এ সময় পূর্বের কমিটির লোকজন বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এই মামলা চলমান অবস্থায় ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক কোব্বাত হোসেনের স্বাক্ষরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা উত্তোলিত হয়। এরই মধ্যে ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনুসারী লোকজন প্রধান শিক্ষক কোব্বাত হোসেনের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা করে সরাসরি ওয়ারেন্ট বের করে তাকে হাজতে পাঠায়। ২০১৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্ত হয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কোব্বাত হোসেন আবারও দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। এরই মধ্যে তড়িঘড়ি করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পূর্বের কমিটির মেয়াদ শেষ হবার পরদিনই তার সমর্থিত লোকজন দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন করে এবং প্রধান শিক্ষকের বেতন-ভাতাদি বন্ধ করে দেন। বিষয়টি নিয়ে গত ১১ নভেম্বর কাজিপুরের এমপি বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সবাইকে ডেকে কোব্বাত হোসেনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পরিচালনার নির্দেশ দিয়ে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর পত্র প্রেরণ করেন। কিন্ত অদ্যাবধি বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোব্বাত হোসেনের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেননি। কোব্বাত হোসেন জানান, তদন্ত প্রতিবেদন আমার পক্ষে গেছে। এরপর মন্ত্রী মহোদয় বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে লিখেছন। অথচ আজ পর্যন্ত কোন সুরাহা না হয়নি। এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেতন-ভাতা না পাওয়া এক প্রধান শিক্ষকের মানবেতর জীবন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ