পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শিক্ষামন্ত্রীর পিও মোতালেব ও কর্মচারী নাসির বরখাস্ত : আবু আলম নামের আরেক অফিস সহকারী দু’দিন ধরে অফিসে আসছেন না
দুর্নীতির অভিযোগে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গ্রেফতার হওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যেই ওই দুজনের অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদের বিষয়ে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আবার গত দুই দিন ধরে দপ্তরে আসছেন না মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার অফিস সহকারী আবু আলম খান। তাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী খুজঁছে। তাদের আশ্রয় প্রশয় দেয়ায় মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি বিদ্যালয় শাখার একজন যুগ্ম সচিবকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডার থেকে পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিব হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে এই অর্থলেন ও মোতালেবদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে চলমান এসব ঘটনায় এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মো. মোতালেব হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অপরদিকে মন্ত্রণালয়ের গ্রহণ ও বিতরণ শাখায় প্রেষণে থাকা উচ্চমান সহকারী পদে কর্মরত নাসির উদ্দিনের প্রেষণ বাতিল করেছে মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে ফৌজদারী অপরাধের মামলা হওয়ায় কর্মচারী নাসিরকেও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সাময়িক বরখাস্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি। গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির আলাদা আদেশে দু’জনকে বরখাস্ত করা হয়। মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে কর্মরত শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মোতালেব হোসেন ফৌজদারী মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় তাকে বি.এস.আর (পার্ট-১) এর বিধি ৭৩ এর নোট-২ অনুযায়ী চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। প্রেসিডেন্টের আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের ওই আদেশে স্বাক্ষর করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ড. অরুনা বিশ্বাস। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ এ রিপোর্ট লেখাকালে নাসির উদ্দিনের বরখাস্তের আদেশ জারি হয়নি। তবে মাউশি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) শফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কর্মচারী নাসিরের বরখাস্তের আদেশ প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন শুধু স্বাক্ষরের অপেক্ষা। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তাদের সাসপেন্ড করে দেয়া হবে। পুলিশের মামলার বিচার শেষ না হওয়ায় পর্যন্ত তারা সাময়িক বরখাস্ত থাকবেন। এদিকে দুই জনের গ্রেপ্তারের ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এখনও আতঙ্ক কাটেনি। সবার মধ্যে অস্থিরতা ভাগ তৈরি হয়েছে। দপ্তর, উইংগুলোতে কাজের ক্ষেতেও ঢিলেঢালাভাব দেখা গেছে। মোতালেব নাসিরের মতো আরেক বেশ কয়েকজন গ্রেফতার ও চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত হবে এমন আতঙ্কে আছেন। গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সকল দপ্তর-উইংগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যারা এসেছেন সবার মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ-আতঙ্ক। কেউ তেমন একটা কারো সঙ্গে কথা বলছেন না। সবাই পাশা কাটিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে মন্ত্রণালয়ে যারা সেবা নিতে আসছেন তাদের অনেক দপ্তরে কাউকে না পেয়েও ফিরে গিয়েছেন। সবমিলে মন্ত্রণালয়ে গ্রেপ্তার আতঙ্কে কাজ স্থবিররতা তৈরি হয়েছে।
দুই কর্মীর ‘দুর্নীতির’ তদন্তে দুদক : আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মীর ‘দুর্নীতির’ তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরুর কথা জানান দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি, সেটা আপনাদের (গণমাধ্যম) কল্যাণে আমাদের কাছে এসেছে, আমাদের তদন্ত কাজ অলরেডি শুরু হয়েছে। ওই দুই কর্মকর্তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেই দুদকের এই উদ্যোগ নয় জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমাদের তদন্ত সর্বক্ষেত্রেই বিস্তৃত। কেবল সরকারিই নয়, বেসরকারি ক্ষেত্রেও আমাদের কার্যক্রম বিস্তৃত। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অর্জন এবং ভোগ দখলে রাখা সম্পূর্ণভাবে বে আইনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই দুই কর্মীর সঙ্গে ঢাকার লেকহেড গ্রামার স্কুলের অন্যতম মালিক খালেদ হাসান মতিনের বিরুদ্ধেও ওই ঘুষের মামলা করে পুলিশ। জঙ্গিবাদে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে বন্ধ থাকা ওই স্কুল খুলে দিতে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
দু’দিন ধরে কর্মস্থলে নেই মন্ত্রণালয়ের আরেক অফিস সহকারী : মোতালেব হোসেন ও নাসির গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই আবু আলম গা-ঢাকা দিয়েছে বেসরকারি স্কুল শাখার আরেক কর্মচারি আবু আলম। তার বিরুদ্ধে লেকহেড স্কুল থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সে তার সংশ্লিষ্ট অফিসারকে ম্যানেজ করে এই ফাইলটি নিয়ে কাজ করছিল। মোতালেব ও নাসিরকে ফাইলের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন এই আবু আলম। কর্মকর্তারা বলছেন, শাখার ফাইল থেকে তথ্য পাচার ও সেই ফাইল নিয়ে কাজ করার অভিযোগে ওই শাখার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রণালয় অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে ওই শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে ওই শাখার দায়িত্বরত অফিসার সালমা জাহানের বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে সরিয়ে দেয়া প্রস্তাব উঠবে। মন্ত্রীর সায় মিললেই তাকে অন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ শাখায় বদলি করা হবে। বেসরকারি স্কুল শাখায় মধুর হাড়ি থেকে তাকে সরানো হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানান, গত তিনদিন ধরে অনুপস্থিত থাকার পাশপাশি আবু আলমের ব্যক্তিগত মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও আবু আলমের খোঁজ জানেন না বলে জানিয়েছেন। তবে তার পরিবার থানায় সাধারণ ডায়রি করেননি। আবু আলমের রাজধানীতে আফতাব নগরের ফ্ল্যাট থাকার বিষয়টি তার পরিবার নিশ্চিত করেছেন বলে কর্মকর্তারা জানান। অফিস থেকে ছুটি না নিয়ে, কাউকে না জানিয়ে গত দুই দিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার পাশপাশি আবু আলমের ব্যক্তিগত মোবাইলও দু’দিন ধরে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আবু আলমের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-১) বেগম সালমা জাহান বলেন, গত রোববার অফিস করেছেন। এরপর গত সোম ও মঙ্গলবার দু’দিন অফিস করেননি। মঙ্গলবার ছুটি চেয়ে আবেদন পাঠিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।