Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘরের মাঠে দুর্ভাগ্য সাইফের

| প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : ঘরের মাঠে যেন দূর্ভাগ্য ভর করেছিলো সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের উপর। এএফসি কাপের প্রিলিমিনারী স্টেজের (প্রি প্লে-অফ) হোম ম্যাচে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসের বিপক্ষে অসংখ্য সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগেতে পারেনি তারা। ফলে যথারীতি হারের গøানি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশ নবাগত দলটিকে। গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের প্রি প্লে-অফের অ্যাওয়ে ম্যাচে টিসি স্পোর্টস ১-০ গোলে হারায় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে। বিজয়ী দলের পক্ষে একমাত্র জয়সূচক গোলটি করেন ফরোয়ার্ড ভøাসিচেভ আনাতলি।
চার মহাদেশের ফুটবলার দলে। সঙ্গে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের অন্য ক্লাব থেকে ধারে আনা হয়েছে সাত খেলোয়াড়কেও। সর্বোপরি পরিচিত পরিবেশ, চেনা মাঠ ও দর্শক। তারপরও সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব কাঙ্খিত লক্ষ্যপূরণ করতে পারেনি খেলোয়াড়দের মাঝে সমন্বয়ের অভাবে। কাল ম্যাচে সাইফের পক্ষে খেলেছেন ইউরোপের (ইংল্যান্ড) চার্লি শেরিংহ্যাম, আফ্রিকার (নাইজেরিয়া) সানডে সিজোবা, দক্ষিণ আমেরিকার (কলম্বিয়া) আন্দ্রেস এসকারপেটা। আর বাকিরা এশিয়ার (বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তান)। ফলে মাঠে খেলোয়াড়দের মাঝে সমন্বয়ের অভাব ছিলো চোখে পড়ার মতো। যদিও ম্যাচে এমন কিছু সুযোগ পেয়েছে সাইফ যা থেকে একাধিক গোল হতে পারতো। কিন্তু দূর্ভাগ্য যেন শুরু থেকেই পিছু নিয়েছিলো প্রিমিয়ার লিগের নবাগতদের। সাইফের সুযোগগুলো নষ্ট হয়েছে ফরোয়ার্ডদের শট ক্রসবারে ও প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষকের হাতে লেগে অথবা মাঠের বাইরে গিয়ে। আর তাই হার দিয়েই আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হলো বাংলাদেশের ক্লাবটির। বড় আয়োজন ছিল ম্যাচ জেতার সম্ভাবনায়। কিন্তু সে গুঁড়ে বালি ছিটিয়ে দিয়েছে ফিনিশিংয়ের অভাব। প্রায় হাফ ডজন গোলের সুযোগ নষ্ট করলে কি আর ম্যাচ জেতা সম্ভব? তাই তো ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাইফের দক্ষিণ আয়ারল্যান্ডের কোচ রায়ান নর্থমোরের কন্ঠে ঝরে পড়ে হতাশা,‘একজন ফিনিশারের অভাবেই আজ (কাল) হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো।’
দীর্ঘদিন পর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কোন আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ। এখনো সাইফ স্পোর্টিংয়ের তেমন কোন সমর্থক গোষ্ঠী তৈরী না হলে তাদের ফ্যান ক্লাবের প্রচারণায় গ্যালারিতে নেমেছিলো দর্শকের ঢল। কারণ মাঠে দর্শক ফেরাতে উদ্যোগ নেয় সাইফ কর্তৃপক্ষ। একদিকে ফ্রি টিকিট। অন্যদিকে পুরস্কার এবং ফ্রি জার্সী। হয়তো বা সে কারণেই গ্যালারীতে দর্শকের উপস্থিতিটা ছিলো বেশি। তবে স্বাগতিক ক্লাবকে উৎসাহ দিতে এতটুকু কার্পণ্য করেনি দর্শকরা। যখনই সাইফের আক্রমণ তখনই গ্যালারিতে ছিল উচ্ছ¡াস।
শুরু থেকেই দু’দল আক্রমণাতœক ফুটবল উপহার দিয়ে ম্যাচকে উপভোগ্য করে তোলে। সর্বশক্তি দিয়েই খেলে টিসি স্পোর্টস। যদিও ধারার বিপরীতে প্রথম সুযোগটি পায় সাইফ। ১৫ মিনিটে কর্ণার থেকে জাহিদের শট বক্সে হেড নেন তপু বর্মণ। তবে বল জড়ায়নি জালে। উল্টো হেড নিতে গিয়ে মাথার পেছনে আঘাত পান সদ্য ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা তপু। তবে ২৩ মিনিটে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। ইশান ইব্রাহিমের পাস বক্সে পেয়ে সাইফের তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডান পায়ের বাকানো শটে গোল করেন টিসি স্পোর্টসের ফরোয়ার্ড ভøাসিচেভ আনাতলি (১-০)। বিধাতা যেন এখানেই ফলাফল নির্ধারন করে দেন। আর তা না হলে গোল হজমের পর একের পর এক সুযোগ পেয়েও কেন ম্যাচে ফিরতে পারবে না সাইফ স্পোর্টিং। প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়া সাইফ দ্বিতীয়ার্ধে যেন জ্বলে ওঠে। তবে এই অর্ধেই রচিত হয় সাইফের দূর্ভাগ্যের কাহিনী। নইলে ৪৯ মিনিটে বক্সে বল পেয়ে ফাকা পোস্টে ডেইনারের ডান পায়ের জোড়ালো শট কেন পোস্টে লেগে প্রতিহত হবে। ৫৬ মিনিটে জামাল ভুইয়ার শটটি কেনইবা টিসির গোলরক্ষকের হাতে লেগে ফিরে আসবে। এরপরের কয়েক মিনিটতো রীতিমতো আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয় সাইফ স্পোর্টিং। ৬০ মিনিটে কিংসলের শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ৬২ মিনিটে আকরের শট ফিস্ট করেন টিসি গোলরক্ষক। কিন্তু দুর্ভাগ্যই বলতে হবে সাইফের। কারণ তিনটি শট বারে লেগে ফেরত আসে। তা না হলে অন্তত তিন গোল পেতে পারতো তারা। ৮২ মিনিটে আরো একবার হতাশায় ঢুবে সাইফ। একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন কিংসলে। গোলরক্ষক এগিয়ে আসায় পোস্ট ছিলো অরক্ষীত। কিন্তু কিংসলের শট বারে লেগে চলে যায় মাঠের বাইরে। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে সাইফ। ৩০ জানুয়ারি ফিরতি ম্যাচে দু’দল মুখোমুখী হবে মালেতে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ