Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৬ বছরে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৭ বার

মোবায়েদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

গত ১৭ জানুয়ারি বুধবার মাননীয় হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আগামী ৬ মাসের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশটি দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। এই নির্দেশ বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য পুলিশ বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন এবং বিচারপতি মো. আতাউর রহমানের দ্বৈত বেঞ্চ। এই নির্দেশটি বাংলাদেশের সব শ্রেণির মানুষের মনের কথাকেই প্রতিধ্বনিত করেছে। বাংলাদেশের হেন মানুষ নাই যিনি এই ধরনের নির্দেশ বা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন এসে যায় যে, এমন একটি নির্দেশ উচ্চ আদালত থেকে আসতে হলো কেন? ডাকসুর একটি গঠনতন্ত্র রয়েছে এবং ডাকসুর অস্তিত্ব রয়েছে ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্সে। ডাকসুর গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ডাকসু ইলেকশন হবে। কীভাবে হবে, কাদেরকে নিয়ে হবে সেগুলো বিস্তারিত বলা আছে সেই গঠনতন্ত্রে। কিন্তু সবকিছু লিখিত থাকার পরেও বিগত ২৭ বছর ধরে ডাকসু ইলেকশন হচ্ছে না কেন? এই ডাকসু নির্বাচনের জন্য পত্র পত্রিকায় কতো লেখালেখি হয়েছে। অথচ কিছুই হয় নাই। ২০১২ সালে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে উচ্চ আদালতে একটি রিটও হয়েছিল। এরপর প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ একটি সমাবেশে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তারপরেও কিছু হয়নি। যেখানে প্রতি বছর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা সেখানে বাংলাদেশের ৪৬ বছরের ইতিহাসে মাত্র ৭ বার সেই নির্বাচন হয়েছে। এটা কেমন কথা? সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে। ভিপি এবং জিএস নির্বাচিত হন যথাক্রমে আমান উল্লাহ আমান এবং খায়রুল কবির খোকন। এরপর ২৭টি বছর পার হয়ে গেল। কিন্তু ডাকসু নির্বাচন আর হয়নি। এবার হাই কোর্ট থেকে নির্দেশ এলো। দেখা যাক সেই নির্দেশ তামিল হয় কিনা।
ডাকসু নির্বাচন এতো জরুরি কেন? দলমত নির্বিশেষে সমাজের সমস্ত শ্রেণি ডাকসু নির্বাচন চাচ্ছে কেন? কারণটি আর কিছু নয়। রাজনীতি হলো রাজনীতকদের কাজ। ব্যবসায়ীদের কাজ হলো ব্যবসা করা। একজনের কাজ যদি আরেকজন করেন তাহলে সেই কাজটির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আর থাকে না। ভারত বিভক্তির আগে দেখুন, পলিটিকস ছিল পলিটিশিয়ানদের হাতে। মুসলিম লীগে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, লিয়াকত আলী খান, ব্যারিস্টার সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ জাদরেল পলিটিশিয়ানগণ। অন্যদিকে কংগ্রেসে ছিলেন মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী, পন্ডিত জওহরলাল নেহরু, বল্লব ভাই প্যাটেল প্রমুখ তুখোড় পলিটিশিয়ান।
বাংলাদেশের রাজনীতিতেও যখন আওয়ামী লীগ আন্দোলন শুরু করে তখন প্রথমে শেখ মুজিবর রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ছিল রাজনীতিবিদদের হাতে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশেই রাজনীতিতে শুরু হয় ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য। বিএনপির জন্ম এবং বিকাশে আমলা ও ব্যবসায়ীদের প্রবল প্রাধান্য লক্ষ করা যায়। যতই দিন যাচ্ছে ততই তাদের প্রাধান্য বেড়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ী এবং আমলা দিয়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ভরে গেছে। বড় দুটি দলের নেতৃত্বেই এখন আমলা এবং ব্যবসায়ীদের আধিক্য লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিসংখ্যান দিয়েছে। ঐসব পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে যে, জাতীয় সংসদে বর্ণ পলিটিশিয়ান, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোন শ্রেণির পার্সেন্টেজ কত। এতে দেখা গেছে, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৪০ শতাংশ অতিক্রম করেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল আশঙ্কা করে যে, এই প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সেদিন সুদূর নয়, যেদিন রাজনৈতিক দলসমূহের নেতৃত্বে বিশেষ করে জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে আমলা ও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা সার্বক্ষণিক পলিটিশিয়ানদের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে।
\দুই\
অথচ আমরা যদি পেছনে ফিরে তাকাই তাহলে দেখবো, ডাকসুতে এসেছেন এমন সব উজ্জ্বল নক্ষত্র যারা পরবর্তীতে রাজনীতির আকাশকে আলোকিত করেছেন। গত বছরের ২৭ ফেব্রæয়ারি শনিবার দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, ১৯২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সৃষ্টি হয়। মোট ৩৬ বার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডাকসুর প্রথম ভিপি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন যথাক্রমে মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত। ১৯২৮-২৯ সেশনে ভিপি ও জিএস হিসেবে নির্বাচিত হন এ এম আজহারুল ইসলাম ও এস চক্রবর্তী, ১৯২৯-৩২ সময়কালে রমণী কান্ত ভট্টাচার্য ও কাজী রহমত আলী ও আতাউর রহমান, ১৯৪৭-৪৮ সেশনে অরবিন্দ বোস ও গোলাম আযম, ১৯৫৩-৫৪ সালে এস এ বারী এটি ও জুলমত আলী খান, ফরিদ আহমেদ। এরপর ভিপি ও জিএস নির্বাচিতদের মধ্যে যথাক্রমে রয়েছেন নিরোদ বিহারী নাগ ও আব্দুর রব চৌধুরী, একরামুল হক ও শাহ আলী হোসেন, বদরুল আলম ও মো. ফজলী হোসেন, আবুল হোসেন ও এটিএম মেহেদী, আমিনুল ইসলাম তুলা ও আশরাফ উদ্দিন মকবুল, বেগম জাহানারা আখতার ও অমূল্য কুমার, এস এম রফিকুল হক ও এনায়েতুর রহমান, শ্যামা প্রসাদ ঘোষ ও কে এম ওবায়েদুর রহমান, রাশেদ খান মেনন ও মতিয়া চৌধুরী, বোরহান উদ্দিন ও আসাফুদ্দৌলা, ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী ও শফি আহমেদ, মাহফুজা খানম ও মোরশেদ আলী, তোফায়েল আহমেদ ও নাজিম কামরান চৌধুরী, আসম আব্দুর রব ও আব্দুল কুদ্দুস মাখন।
দৈনিক ইত্তেফাকের ঐ একই রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর যতগুলো ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তার একটাতেও সরকারপন্থী সংগঠন অর্থাৎ ছাত্রলীগ জয়লাভ করতে পারেনি। আজ বাংলাদেশের মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং মতিয়া চৌধুরী ডাকসুর ভিপি জিএস ঠিকই হয়েছিলেন। কিন্তু তখন তারা ছিলেন সরকার বিরোধী ছাত্র ইউনিয়নে। তবে স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ থেকে বেরিয়ে আসা একটি অংশ যে রকম তীব্র সরকার বিরোধী হয়ে ওঠে, সেই জাসদ বা জাসদ পন্থী ছাত্রলীগের মতো তীব্র সরকার বিরোধী সংগঠন কখনোই হয়ে ওঠেনি মেনন বা মতিয়ার ছাত্র ইউনিয়ন। তবে ডাকসুতে আগে বা পরে যারা এসেছেন তারা সকলেই বাংলাদেশের রাজনীতির মুখ উজ্জ্বল করেছেন। স্বাধীনতার পর যারা ডাকসুতে এসেছেন তাদের নামগুলো দেখুন। ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাধারণত সরকার-সমর্থকরা ভোটের মাধ্যমে জেতেন না। ডাকসুর ইতিহাসে এমন নজির নেই। ১৯৭০ সালের ডাকসু নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের সহযোগী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ডাকসু নির্বাচনে জয় পায়নি। ১৯৭২-৭৯ সময়কালে ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে দায়িত্ব পালন করেন ছাত্র ইউনিয়নের মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও মাহবুব জামান। ১৯৭৩ সালের নির্বাচন ভন্ডুল হয়ে গিয়েছিল। ১৯৭৯, ১৯৮০ ও ১৯৮২ সালে ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। প্রথম ২ নির্বাচনে যথাক্রমে জাসদ-ছাত্রলীগের এবং বাসদ-ছাত্রলীগের প্রার্থী হয়ে সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জিতেছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না ও আখতারুজ্জামান। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ১৯২২ সালে ডাকসু সৃষ্টি হওয়ার পর বিগত ৯৬ বছরে ডাকসুর ইতিহাসে পরপর দুইটি মেয়াদে লাগাতার ডাকসুর ভিপি এবং জিএস পদে নির্বাচিত হন মাহমুদুর রহমান মান্না এবং আখতারুজ্জামান। যে দুটি মেয়াদে তারা নির্বাচিত হন সে দুটি মেয়াদ ছিল (১) ১৯৭৯-৮০, ১৯৮০-৮১ এবং ১৯৮১-৮২। ১৯৮২ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১৯৮৯ পর্যন্ত ভিপি ও জিএস পদে যথাক্রমে দায়িত্ব পালন করেন আখতারুজ্জামান ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। ১৯৮৯-৯০ সেশনে দায়িত্ব পালন করেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং মুশতাক আহমেদ। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১৯৯০-৯১ সেশনের জন্য ভিপি ও জিএস পদে যথাক্রমে নির্বাচিত হন ছাত্রদলের আমানউল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন। এরপর আর ডাকসু নির্বাচন হয়নি।
স্বাধীনতার আগে এবং পরে যারা ডাকসুর ভিপি এবং জিএস এর পদ অলঙ্কৃত করেন তাদের মধ্যে সেই সময়কার ছাত্রনেতা ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক গোলাম আযম, নেজামে ইসলামীর মওলানা ফরিদ আহমেদ, মুসলিম লীগের জুলমত আলী খান, এসএ বারী এটি, তোফায়েল আহমেদ, আসম আব্দুর রব, আব্দুল কুদ্দুস মাখন, কে এম ওবায়েদুর রহমান, রাশেদ খান মেনন, মতিয়া চৌধুরী, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, আমান উল্লাহ আমান, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
\তিন\
ডাকসু ইলেকশন নিয়ে কম লেখালেখি হয়নি। বিগত ২৭ বছরে যদি ২৭টি ডাকসু ইলেকশন হতো তাহলে অন্তত শুধু ডাকসুর মাধ্যমেই ৫৪ জন নেতা পাওয়া যেত। এছাড়া বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের ২ জন করে প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি পাওয়া যেতো। এসব ছাড়াও রয়েছে হল ইউনিয়ন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিলে এখন দেশে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং অর্ধ শতাধিক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অসংখ্য নেতা বেরিয়ে আসতেন। কয়েক হাজার কলেজে যদি নিয়মিত নির্বাচন হতো তাহলে কয়েক হাজার নেতা বেরিয়ে আসতেন। সংক্ষেপে বলা যায় যে, যদি দেশে অহিংস, শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক, নিয়মিত ছাত্র রাজনীতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক নির্বাচন হতো তাহলে আজ বাংলাদেশ এই সহিংস, চাঁদাবাজি ও গুন্ডামির রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতো এবং আইনের প্রতি নিষ্ঠাবান শত শত রাজনৈতিক নেতা উপহার দিতো এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
পাকিস্তান আমল এবং বাংলাদেশ আমলের ছাত্র রাজনীতি এবং দলীয় রাজনীতি পর্যালোচনা করে এবং বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছাত্র জীবনে যিনি বা যারা যে ছাত্র সংগঠন করেছেন পরবর্তী জীবনে তারা সেই ছাত্র সংগঠনেরই মাদার অর্গানাইজেশন বা প্যারেন্ট অর্গানাইজেশনে যোগ দিয়েছেন। বিষয়টি আরো স্পষ্ট করছি। ছাত্র জীবনে যারা ছাত্রলীগ করেছেন, ছাত্রজীবন শেষ হলে তারা আওয়ামী লীগ করেছেন। ছাত্রজীবনে যারা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল করেছেন পরবর্তী জীবনে তারা বিএনপি করেছেন। ছাত্রজীবনে যারা ইসলামী ছাত্রশিবির করেছেন পরবর্তী জীবনে তারা জামায়াতে ইসলামী করেছেন। তবে মুশকিল হয়েছে অন্যদের বেলায়। যেমন ছাত্র ইউনিয়ন (পিকিং পন্থী), ছাত্র ইউনিয়ন (মস্কো পন্থী), ছাত্র শক্তি, ছাত্র মৈত্রী ইত্যাদি
\চার\
আমি এখন মূল কথায় ফিরে আসছি। পানি ছাড়া যেমন মাছ বাঁচে না, তেমনি রাজনীতি ছাড়া দেশ বাঁচবে না। রাজনীতির মাঠে অনেক টিমই খেলবে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত এবং আরো নতুন কোনো দল যদি আসে তারা। কিন্তু খেলাটি শুরু করতে হবে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। রাজনীতিতে তারা তাদের পছন্দ মতো আদর্শ প্রচার করতে পারবে। শুধু কয়েকটি জিনিস করতে পারবে না। সেগুলি হলো (১) বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী কোনো কথা এবং কাজ, (২) সামরিক বাহিনী এবং বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে কোন কথা এবং কাজ ও (৩) কোন ধর্মকে আক্রমণ করা চলবে না। মাত্র এই কয়টি রেস্ট্রিকশন ছাড়া বাংলাদেশের সমস্ত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত করে দিতে হবে। ডাকসু বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ থেকে ২৬ বছর আগে ১৯৯০ সালে। ডাকসু, রাকসু (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), চাকসু (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), ইউকসু (প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)সহ ভার্সিটি সংসদ সমূহের নির্বাচন ২৬ বছর হলো অনুষ্ঠিত হয় না। ছাত্র রাজনীতিতে আজ তাই গতি নাই, আদর্শ নাই, মূল্যবোধ নাই। ছাত্র রাজনীতিতে প্রাধান্য পাচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি। আন্দোলন না করেই নেতৃত্বে যাওয়ার ষড়যন্ত্র। তাই আর কালবিলম্ব না করে সবগুলো কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবিলম্বে দিতে হবে ছাত্র সংসদসমূহের নির্বাচন। সারা বাংলাদেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ছাত্র রাজনীতির পদচারণায় মুখর হোক। বিকশিত হোক গণতান্ত্রিক রাজনীতি, ফুটুক শত ফুল। এই উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই এবং সেটি অবিলম্বেই। না হলে জঙ্গিবাদ বলুন আর যাই বলুন, অগণতান্ত্রিক, অনিয়মতান্ত্রিক ও সংবিধানবহির্ভূত দানবের উত্থান ঠেকানো সম্ভব হবে না।
[email protected]



 

Show all comments
  • সৈয়ব আহমেদ সিয়াম ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১০:২৩ পিএম says : 0
    অনেক কিছু জানতে পারলাম
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফুল ইসলাম ১৮ জুন, ২০১৯, ৯:৫৫ পিএম says : 0
    ধন্যবাদ ইতিহাসটা সুন্দর করে বলার জন্য
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাধীন


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ