পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি কী রূপরেখা দেয় সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপির নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা চেয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন কোনও রূপরেখা দেবেন না। রূপরেখা দেবে তো বিএনপি। তারা কী রূপরেখা দেয় আমরা সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। নির্বাচন ইস্যু নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো প্রয়োজন দেখছি না।
গতকাল রবিবার সচিবালয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির অধিকার। তবে অংশ নেয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের কিছুই করার নেই। বিএনপি নেতাদের বক্তব্য শুনে মনে হয়, বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিরপেক্ষ নয়। কিন্তু আপনারা (সাংবাদিকরা) বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের মতো জায়গায় ইসি নিরপেক্ষ নির্বাচন করেছে। তারপরও যদি ইসিকে নিরপেক্ষ মনে না হয় তাহলে আমাদের কী করার আছে?
নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির প্রতিনিধি থাকার সুযোগ আছে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, গত নির্বাচনে বিএনপিকে নির্বাচনকালীন সরকারে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তারা আসেনি। গত সংসদে তাদের প্রতিনিধি ছিল। আগে দেখি এবার তারা দাবি জানায় কি না।
বিএনপির নেতারা দলের ‘হাই কমান্ডকে’ খুশি করতে অতি কথনে নেমেছেন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে কে বেশি সরকার-বিরোধী কথা বলতে পারে। কে বেশি সরকারবিরোধী আক্রমণাত্মক, বিদ্বেষপ্রসূত কথা বলতে পারে, কে বেশি নেতিবাচক কথা বলতে পারে। সেটার ওপরই হাইকমান্ডের এসিআরের বিষয় আছে। এখন সেখানে প্রতিযোগিতা হচ্ছে হাইকমান্ডকে খুশি করার জন্য সরকারবিরোধী বক্তব্য দেয়ার।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের বিষয়ে বিএনপি কেন একেকবার একেক কথা বলে, তা জানতে চেয়ে কাদের বলেন, তিনটা সরকার এ পর্যন্ত শুনলাম। একটা হচ্ছে নিরপেক্ষ সরকার, একটা হচ্ছে সহায়ক সরকার, আরেকটা হচ্ছে তত্ত¡াবধায়ক সরকার। এখন আবার শুনছি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বললেন, তারা শিগগিরই সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন। একই দিন মওদুদ সাহেব বললেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়ক সরকারের রূপরেখা কী সে বিষয়ে স্পষ্ট জানতে চাইবেন।
কাদের বলেন, তাহলে কী দাঁড়াল? এখানে আমি কী জবাব দেবো? এখানে আমার কোনো জবাব ে নেই, উত্তর নেই। আগে নিজেরা ঠিক করুন। তারা নিজেরা করবেন না প্রধানমন্ত্রী সহায়ক সরকারের।
এটা তো একটা আজগুবি ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী তাদের সহায়ক সরকারের রূপরেখা কী করে দেবেন? সহায়ক সরকারের দাবি হচ্ছে তাদের রূপরেখা দেবেন তারা। এটা তো স্ব-বিরোধিতা, দ্বিচারিতা। একেকজন একেক কথা বলছেন। তাদের (বিএনপি নেতা) নিজেদের মধ্যে ঠিক করতে হবে সহায়ক সরকারের রূপরেখা তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাইবেন নাকি তারা নিজেরা ঠিক করবেন।
সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ৮০ শতাংশ ভোট পাবে, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন দাবির জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের ৮০ ভাগ মানুষ বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে ঘৃণা করে। যারা ঘৃণা করে তারা কি তাদের ভোট দেবে?
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়ে দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচনী ইস্যু নিয়ে সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই। কোনো প্রয়োজন আমরা দেখছি না। নির্বাচন হবে, সংলাপ কেন করতে হবে- বিএনপিকে কিছু সুযোগ দেয়া ছাড় দেয়া? নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির অধিকার। এটা ছাড় দেয়া কিংবা সুযোগের বিষয় নয়।
কাদের বলেন, ২০১৩ সালে সংসদে থাকায় নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এবার বিএনপি সংসদে নেই। যখন পার্লামেন্টে তাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল তখনও কিন্তু তারা এটায় (নির্বাচনকালীন সরকার) যোগ দেয়নি। এবার তারা দাবি করে কি না আমরা একটু দেখি। সহায়ক সরকার বলতে যে বিষয় সেখানে তাদের রূপরেখা দেবে, আমরা দেখি তারা কী করে, তাদের দাবি কী? তিনি বলেন, সেই ভুলটা তাদেরই। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনকালীন সরকার যেভাবে হয় এখানেও সেভাবেই হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনকালীন সরকার, সেই সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেবে। এটাই সংবিধানের বিষয়, এটাই নিয়মের বিষয়। এটাই আমাদের দেশে হয়ে আসছে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে এভাবেই প্রাকটিস হচ্ছে।
বিএনপি নির্বাচনে গেলে আওয়ামী লীগের পরাজয় হবে এবং এ কারণে আওয়ামী লীগ নির্বাচন বানচাল করবে বলে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে এসব কথার মনে হয়, নির্বাচন বানচালের দুরভিসন্ধি তাদের (বিএনপি) মধ্যে কাজ করছে। তাহলে যার কোনো অস্তিত্ব নেই তা নিয়ে তারা কথা বলে কেন?
বিএনপিকে ভোটের বাইরে রাখতে সরকার ছক কষছে-দলটির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখার ছক কাটার তো কোনো কারণ নেই। বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। আমাদের কাজ আছে, আমাদের উন্নয়ন আছে।
ওবায়দুল কাদের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ করেছেন দলটির উপকমিটির সহসম্পাদক পদ না পাওয়া ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে দলের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। গত শনিবারও এই নেতাদের তোপের মুখে পড়েছিলেন ওবায়দুল কাদের।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওবায়দুল কাদের তাঁর গাড়িতে করে দলীয় কার্যালয়ে সামনে পৌঁছান। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করছিলেন দলের উপকমিটিতে পদ না পাওয়া ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের সাধারণ সম্পাদকের গাড়ি দেখেই তা ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতারা নানা ধরনের ¯েøাগানও দিতে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একপর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ে আগে থেকে অবস্থান করা কেন্দ্রীয় নেতারা বাইরে আসেন। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের বাগবিতন্ডা হয়। পরে ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপরও বিক্ষুব্ধ নেতারা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছিলেন।
বিক্ষুব্ধ নেতাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহসম্পাদক পদে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতাদের মূল্যায়ন না করে বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রদলের লোকজনকে পদ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল একই বিষয়ে বিক্ষোভের সময় ওই কার্যালয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, সহসম্পাদকের এই উপকমিটি দেওয়া হয়নি। তবু বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষ বিষয়টি জেনে গেছে। বর্তমানে এই উপকমিটি স্থগিত করা হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে সঠিকভাবে যাচাই–বাছাইয়ের পর উপকমিটির সহসম্পাদক পদে কমিটি দেওয়া হবে।
এর আগে আজ সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল তিনি কারও তোপের মুখে পড়েননি। ওই নেতা-কর্মীরা আনন্দ মিছিল করেছিলেন। গণমাধ্যমে বিষয়টি অন্যভাবে এসেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।