পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ‘মিয়ানমারের রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি হলেই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত পাঠানোর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আর যতদিন রাখাইনে নিরাপত্তা সৃষ্টি না হবে ততদিন তাদের পাঠানো ঠিক হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বøুম বার্নিকাট। গতকাল কূটনীতিকদের সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতে সে দেশের সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চায় রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি হলেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো হোক। তাদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়ার কোন যুক্তিকতা নেই।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছিলেন অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মান, ইতালি, তুরস্ক, রাশিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এবং জাতিসংঘ, জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ফাও), জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও রেডক্রসের প্রতিনিধিরা। পরবর্তীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওআইসি ভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এছাড়া যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্রেক বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। অন্যদিকে বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর পক্ষে ভারত এই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেন, জোর করে রোহিঙ্গাদের পাঠানো হবে না। বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি করেই তাদের পাঠানোর ব্যবস্থা করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এর আগে ২০১৭ সালের অক্টোবরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে মন্তব্য করেছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ যে মানবতা দেখিয়েছে তার প্রশংসা করে বার্নিকাট আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে আাছে এবং এ ব্যাপারে সমগ্র বিশ্বকে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহŸান জানাবে। সে সময় কাওরান বাজারে অবস্থিত পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবন পরিদর্শন করেন মার্শা বার্নিকাট। ওই সময় তিনি সংগঠনটির সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। তিনি পোশাক শিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন। মার্শা বার্নিকাট বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক শিল্পের নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে, তবে আরও অগ্রগতি প্রয়োজন। তিনি জানান, এদেশে এ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্সের কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে একটি রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে সংস্থা দুটির দায়িত্ব সরকারের উপর ন্যস্ত হবে। তাই সংশ্লিষ্ট সকলপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে এই রূপান্তর প্রক্রিয়া কিভাবে হবে, তা নির্ধারণ করা বাঞ্চনীয়। তিনি বলেন, যেকোন দেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অস্থিতিশীল পরিস্থিরি দিকে নজর রাখে মার্কিন ক্রেতারা। এসব ক্ষেত্রে অর্ডারের বিষয়টিও বিবেচনায় নেয়া হয়ে থাকে। ওই সময় বিজিএমইএ সভাপতি তাকে জানান, এদেশের মানুষ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পছন্দ করে না। তাই নির্বাচন সামনে রেখে দেশে কোন অপ্রতিকর পরিস্থিতিও তৈরি হবে না।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা, দক্ষতা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির উপর জোর দেন। তিনি বলেন, লীড টাইম মোকাবেলা করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে এবং প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ ক্রয় করে বন্দরের আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। যেহেতু ক্রেতারা অনেক চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তাদের সোর্সিং কৌশলগতভাবে ঠিক করেন, তাই লিড টাইম বাংলাদেশের সক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ গত সাপ্তাতে বার্নিকাট চট্টগ্রাম সফর করেন।
ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করতে হলে রাখাইন রাজ্য টেকসই করা প্রয়োজন। রোহিঙ্গাদের ফেরার পরিবেশ নিশ্চিত করতে রাখাইন রাজ্যে টেকসই উন্নয়ন চায় ভারত। আর টেকসই উন্নয়ন হলেই রাখাইনে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন স্থায়ী হবে। তিনি আরো বলেন, রাখাইন রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ভারতের সাথে মিয়ানমারের একটি চুক্তি আছে। কফি আনান কমিশনের রিপোর্টেও সেখানকার জীবনযাত্রার উন্নয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি যতদ্রæত সম্ভব রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আর এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে ভূমিকা রাখতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।