পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছিম উল আলম : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ মৎস্য অধিদফতরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিবিড় তত্ত¡াবধানে দেশের উপকূলীয় ৪টি জেলার নদ-নদী ও সাগর উপকূলসহ মুক্ত জলাশয় থেকে নিষিদ্ধ এবং অবৈধ জালসমূহ উচ্ছেদে এবারো ১৭ দিনের অভিযান শুরু হয়েছে। এসব অভিযানে পুলিশ ও কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন আইন-শৃংখলা বাহিনী ছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেদের সহায়তা গ্রহণ করা হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকার ৪টি জেলার ১০ মিটারের কম গভীরতার নদ-নদী ও মুক্ত জলাশয়ে এ কার্যক্রমের আওতায় কারেন্ট জাল এবং ক্ষতিকর জালসহ মৎস্য আহরণ উপকরণসমূহ অপসারণ করা হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত এ অভিযানের তত্ত্বাবধান করছেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তা। পাশাপাশি ৪ জন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা এবং বরগুনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার নদ-নদী ও সাগর উপকূলীয় এলাকায় অপসারণ কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান করছেন। এসব কর্মকর্তা জেলাগুলোর নদ-নদীসহ মুক্ত জলাশয়ে কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জাল, গড় জাল ও বেড় জালের মত ক্ষতিকর জালসহ নিষিদ্ধ মৎস্য আহরণ উপকরণসমূহ অপসারণ এবং উচ্ছেদ কার্যক্রম তদারকি করছেন।
তবে সরকারী নির্দেশে ২০১৫ সাল থেকে এ কার্যক্রম শুরু করা হলেও বছরের শুরুতে অল্প কিছুদিনের জন্য এ অভিযানসমূহ আশাব্যঞ্জক ফল দিচ্ছে না বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীগণ। ওয়াকিফহাল মহলের মতে প্রতি ৩ মাস অন্তর এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা জরুরী। ঘন ঘন এ ধরনের অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ক্ষতিকর জালসহ মৎস্য আহরণ উপকরণসমূহের বিপণন ও পরিবহন বন্ধেও পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন ওয়াকিফহাল মহল। এমনকি এসব ক্ষতিকর জাল এবং মৎস্য আহরণ উপকরণের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে জেলে ও মৎস্যজীবীদের সচেতনতা সৃষ্টির ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে মহলটি থেকে।
মৎস্য অধিদপ্তরের মতে, দেশের নদ-নদী ও মুক্ত জলাশয়সহ সাগর উপকূলীয় নদ-নদী মোহনায় কারেন্ট জাল, বেহুন্দিজাল, গড় জাল, বেড় জালসমূহ মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে ব্যাপক অন্তরায় সৃষ্টি করছে। এসব জাল ব্যবহারের ফলে মাছের নতুন প্রজন্মও ধংসপ্রাপ্ত হচ্ছে। এমনকি মাছের বংশ বিস্তারও ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে এসব ক্ষতিকর জাল। মৎস্য বিজ্ঞানীদের সুপারিশের আলোকে ২০১৫ সালের জানুয়ারী থেকে দেশের উপকূলীয় ৪টি জেলায় এসব ক্ষতিকর জালসমূহ অপসারণে ১৫-১৭ দিনের অভিযান শুরু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও গত ১৫ জানুয়ারী থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে।
চলতি বছরের কার্যক্রমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ হারুনুর রশিদকে বরগুনাতে, উপ-সচিব গোলাম মোস্তফাকে বরিশালে, মৎস্য অধিদফতরের পরিচালক ড. একেএম আমিনুল হককে ভোলাতে এবং ড. এসএম তারিককে পটুয়াখালীতে অবৈধ জাল অপসারণ অভিযান কার্যক্রম তত্ত¡াবধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে ৪টি জেলার সার্বিক কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণসহ সার্বিকভাবে দেখভাল করছেন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিদরিক্ত সচিব।
মৎস্য সেক্টরের নানামুখি বাস্তবসম্মত ও বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের ফলে দেশে মাছের উৎপাদন গত পনের বছরে ১৮.৯০ লাখ টন থেকে ৩৮.৭৮ টনে উন্নীত হয়েছে বলে মৎস্য অধিদফতর জানিয়েছে। এমনকি গত অর্থ বছরে দেশে মাছের উৎপাদন ৪০ লাখ টন অতিক্রম করেছে বলেও প্রাথমিক হিসেবে জানা গেছে। দেশে ইলিশের উৎপাদনও ২ লাখ টন থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ৫ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। তবে এখনো সামুদ্রিক জলাশয়ের তুলনায় অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মাছের উৎপাদন কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছেনি। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় মাছের উৎপাদন গত ৫ বছরে সাড়ে ৩ লাখ টন থেকে পৌনে পাঁচ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ইলিশের উৎপাদনই প্রায় ২ লাখ ৭৭ হাজার টন।
এবারের অভিযানের আওতায় ইতোমধ্যে ক্ষতিকর মৎস্য আহরণ উপকরণসমূহ বন্ধে দক্ষিণাঞ্চলের ৪টি জেলায় নানা ধরনের অভিযান শুরু হয়েছে। গত বছরও ১ জানুয়ারী থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অবৈধ জালসমূহ অপসারণ কার্যক্রম চলাকালে ২৩১টি মোবাইল কোর্ট ও ৪৩০টি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের ৪টি জেলার নদ-নদী ও সাগর উপকূল থেকে ৬৯৮টি বেহুন্দি জাল ও ৬৮৮টি ক্ষতিকর অন্যান্য জাল ছাড়াও ২৯ লাখ মিটার কারেন্ট জালসহ ৫টি ট্রলার ও ১১টি নৌকা আটক করে মৎস্য অধিদফতর। একই কার্যক্রমে প্রায় ৫ টন জাটকা ছাড়াও আরো প্রায় ২ টন অন্যান্য মাছ আটক করে জব্দ করা হয়। ঐসব অভিযানে ৪৪ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান ছাড়াও প্রায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
নিষিদ্ধ কারেন্ট জালসহ অন্যন্য ক্ষতিকর মৎস্য আহরণ উপকরণের ব্যবহার বন্ধ করতে পারলে মাছ উৎপাদনে আরো আশাব্যঞ্জক উন্নতির আশা করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞগণ। মৎস্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল মহলের মতে, এসব বিবেচনায়ই কারেন্ট জাল, বেহুন্দী জাল, গড় জাল ও বেড় জালসহ নিষিদ্ধ মৎস্য আহরণ উপকরণসমূহ অপসারণে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।