পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহাকাশ গবেষণার টেলিস্কোপ। পাহড় ধস ঠেকানোর প্রযুক্তি। শব্দ থেকে বিদ্যুৎ, জবা ফুলে চা। ইটভাটার ধোঁয়া থেকে জ্বালানী। বৃদ্ধ ও অন্ধদের পথ দেখাবে রোবট। এমন হরেক রকমের আবিষ্কার আর উদ্ভাবন ঠাঁই পেয়েছে চট্টগ্রামের বিজ্ঞান ও শিল্প-প্রযুক্তি মেলায়। ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের এ মিলন মেলায় প্রদর্শীত হচ্ছে ১১৮টি উদ্ভাবন।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ-বিসিএসআইআর গবেষণাগার, চট্টগ্রাম এই মেলার আয়োজক। চট্টগ্রাম নগরীর অদূরে হাটহাজারীর বালুছড়ায় গবেষণাগার ক্যাম্পাসে গতকাল (মঙ্গলবার) তিনদিনের এ মেলার উদ্বোধন করেন বিসিএসআইআর ঢাকার সদস্য (প্রশাসন) যুগ্ম সচিব মোঃ আবদুল মাবুদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেলার আহŸায়ক বিসিএসআইআর গবেষণাগার চট্টগ্রামের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদা খাতুন। মেলায় চট্টগ্রাম নগরীর ২২টি স্কুল, কলেজ ও বিজ্ঞান ক্লাবের আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। ৬০টি স্টলে প্রদর্শীত হচ্ছে তাদের ১১৮টি আবিস্কার ও উদ্ভাবন। প্রথম দিনেই সকাল থেকে মেলা প্রাঙ্গন ছিল শিক্ষার্থী ও বিজ্ঞান মনস্কদের পদভারে মুখরিত। প্রতিটি স্টলের সামনে ভিড় দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ আবিস্কার আর উদ্ভাবনী সম্পর্কে মেলায় আগতদের নানা তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করছিলেন। নগরীর পতেঙ্গার বিএএফ শাহনী কলেজ চট্টগ্রামের নবম শ্রেণির (ইংরেজি ভার্সন) শিক্ষার্থী আহমেদ সাদ সাবিত ও মাঈন আবদুল্লাহ নিয়ে এসেছে মহাকাশ গবেষণার টেলিস্কোপ। তারা জানান, আমেরিকাসহ পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো মহাকাশ গবেষণায় অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের দেশও পিছিয়ে নেই। খুব শিগগির মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। অথচ এবিষয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের অনেকের কোন ধারণা নেই। আমরা খুব কম খরচে গবেষণাধর্মী একটি টেলিস্কোপ তৈরী করেছি-যা দিয়ে মহাকাশের অনেক কিছু দেখা যাবে এবং গবেষণাও করা যাবে। মূলত নতুন প্রজন্ম বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মহাকাশ বিষয়ে আরও বেশি আগ্রহী করে তোলাই তাদের এ উদ্ভাবনের উদ্দেশ্য।
একই স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান ও সাজিদ শাহরিয়ার ইটভাটার কালো ধোঁয়া থেকে মিথেন গ্যাস তৈরীর প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছে। কারখানার ধোঁয়া থেকেও এই গ্যাস তৈরী করা যাবে। তারা জানান, ইটভাটা ও কারখানার ধোঁয়াকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় মিথেন গ্যাসে পরিণত করে তা ফের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা যাবে। এতে একদিকে যেমনি পরিবেশ দূষণ রোধ হবে অন্যদিকে বিকল্প জ্বালানি তৈরী হবে।
বয়োবৃদ্ধ আর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পথচলা সহজতর করতে রোবট বানিয়ে ফেলেছে ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জিদান সিদ্দিকী ও সৈকত ঘোষ। সাদা ছড়ির মতো একটি লাঠির নীচে থাকবে এই ধরনের রোবট। চলার পথে কোন প্রতিবন্ধকতা দেখলে রোবট নিজেই বিকল্পপথে এগিয়ে যাবে। এটি বানাতে খরচ পড়বে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা। বহুমুখি রোবট তৈরী করেছে নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ ফাহিম আহমেদ। এই রোবট সড়কে দুর্ঘটনা রোধসহ অনেক কাজ করার ক্ষমতা রাখে। হাজি মুহাম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী দিব্য ভট্টাচার্য ও ইয়াসিন সাবিত শব্দ থেকে বিদ্যুৎ তৈরীর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। অয়্যারলেস টিউব লাইট আবিষ্কার করেছে সানোয়ারা ইসলাম বালক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরিয়ান তাসফিন। এই প্রযুক্তিতে ফিউজ লাইটও আলো ছড়াবে। পাহাড়ধসে গণমৃত্যু ঠেকানোর প্রযুক্তি নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র জায়াদুল হক রোহান ও সৈয়দ সারুক হাসান। বিএএফ শাহীন কলেজের দুই ছাত্রী জবা ফুলের পাপড়ি থেকে চা বানিয়ে দেখাচ্ছে সবাইকে। মেলায় আছে অটোমেটিক সড়ক বাতি, সৌর বিদ্যুতে গাড়ি চালানো, যানজট নিয়ন্ত্রণ, স্বল্প খরচে জমিতে সেচ, দেশীয় প্রযুক্তিতে সবজি সংরক্ষণ, কম খরচে ভবন তৈরীসহ হরেক উদ্বাবনী। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত মেলার সকলের জন্য উম্মুক্ত। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান মেলা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, তরুণ ও নবীণ বিজ্ঞানীর খোঁজে এবং তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে বিসিএসআইআর প্রতিবছর এই মেলার আয়োজন করে আসছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।