Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিভক্তিতে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান চেয়ারম্যানরা বিপাকে

প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোঃ মানজুরুল হক, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুলাউড়ায় দলীয় গ্রুপিং আর কোন্দলের কারণে বিপাকে পড়েছেন বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। ১৩ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যে ৮ জনই হলেন বিএনপি সমর্থিত। দলীয় গ্রুপ্রিং কারণে কার ভাগ্যে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ অপেক্ষা করছে। তা নিয়ে তারা নিজেরাই সন্দিহান রয়েছেন। কোন গ্রুপ মনোনয়ন দিতে সাহায্য করতে পারবে তাই নিয়ে প্রার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। কুলাউড়ায় বিএনপির বর্তমান ৮ চেয়ারম্যনরা হলেন, জয়চন্ডি ইউনিয়নের কমর উদ্দিন আহমদ কমরু, ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের রফিক আহমদ, রাউৎগাও ইউনিয়নের আব্দুল জলিল জামাল, টিলাগাও ইউনিয়নের সৈয়দ মহী উদ্দিন হোসেন, বরমচাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যন ইছহাক চৌধুরী ইমরান, কর্মধা ইউনিয়নের আব্দুস সহিদ বাবুল ভাটেরা ইউনিয়নের মো: সিরাজ মিয়া, হাজিপুর ইউনিয়নের মাহমুদ আলী। বিগত ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে দলীয় গ্রুপিং শুরু হলেও মূলত ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে দলের গ্রুপিং প্রকট আকার ধারণ করে। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ী চেয়ারম্যানরা নির্বাচন করতে গিয়ে কুলাউড়া বিএনপির কোন নেতা কিংবা উপর মহল থেকে কোন সহযোগিতা পাননি। তারা প্রত্যেকেই ব্যক্তি ইমেজ দিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচিত হওয়ার পর তারা বিভিন্ন সময় দলের গ্রুপিং ভাঙ্গার জন্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। দলের এই গ্রুপিং রাজনীতির কারনে তারা সক্রীয় রাজনীতি থেকে দূরে। কুলাউড়ার বিএনপির রাজনীতি মূলত দুই গ্রুপে বিভক্ত। একাংশ নিয়ন্ত্রণ করছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি সাবেক এমপি এম এম শাহীন। এই অংশের উপজেলা সভাপতি শওকতুল ইসলাম শকু ও সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ান খান। এই গ্রুপের উপজেলা কমিটি প্রয়াত কেন্দ্রীয় বিএনপির মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের অনুমোদিত কমিটি বলে দাবী করছে তারা। অপরাংশ নিয়ন্ত্রণ করছেন জেলা বিএনপির নেতা এড. আবেদ রাজা। এই গ্রুপের উপজেলা সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মজিদ। এই কমিটির নেতৃবৃন্দরা দাবী করছে সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমানের অনুমোদিত কমিটির পরে কুলাউড়ায় আর কোন কমিটি হয়নি। যদিও বিগত কয়েক বছরের বিএনপির আন্দোলনে একাংশের সভাপতি শওকতুল ইসলাম শকুকে কুলাউড়ার রাজনীতিতে দেখা যায়নি। তিনি লন্ডনে বসবাস করেন। কিন্তু হঠাৎ করে ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন হবে এমনটি জেনে তিনি প্রবাস থেকে দেশে এসে প্রার্থী নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। কুলাউড়া উপজেলার দুই কমিটি তাদের নিজেদের বৈধ বলে দাবী করছেন। দুই কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থীদের বলছেন, তারা এনে দিতে পারবেন মনোনয়ন। এমন গ্যাড়াকলে পড়ে বিএনপির ৮ চেয়ারম্যানসহ ১৩ ইউনিয়নের যোগ্য প্রার্থীরা কার কাছে যাবেন মনোনয়নের জন্য, কে এনে দিতে পারবে দলীয় প্রতীক এমন নানা প্রশ্নে তারা বিপাকে। এক সভাপতির কাছে গেলে অপরাংশের সভাপতি হুমকি দিচ্ছেন এমন অবস্থায় তারা মহা ঝামেলার মধ্যে সতর্কাবস্থায় পা ফেলছেন। কেউ কেউ দুই পক্ষের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখছেন। রাউৎগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল জানান, ছাত্রদল ও যুবদল করেছি এখন বিএনপির রাজনীতি করছি। আমার সাথে জনগণের সমর্থন আছে। আমার বিশ^াস আমি ধানের শীষ প্রতীক পাব। বরমচাল ইউপি চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরান জানান, আমি ম্যাডাম খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। বিগত ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেছেন এড. আবেদ রাজা। তাই আপাতত উনাকে নিজ এলাকার দায়িত্বশীল নেতা মনে হচ্ছে। তাছাড়া দলের এই কোন্দলে আমি ব্যতীত অন্য যে কেউ দলের মনোনয়ন পেলে অবাক হবো না। সেক্ষেত্রে আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা তো দূরের কথা প্রার্থীর মনোনয়ন বাজেয়াপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির (একাংশ)’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মজিদ বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমানের স্বাক্ষরিত অনুমোদিত কমিটির পরে কুলাউড়ায় আর কোন কমিটি হয়নি। তৃণমূল বিএনপির ভোটে এবং ২০০৮ সালে দলের মনোনীত প্রার্থীর সুপারিশে কেন্দ্রিয় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের স্বাক্ষরিত প্রার্থীরাই দলের একক প্রার্থী বলে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির (অপরাংশ)’র সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ান খান জানান, আমাদের উপজেলা কমিটি প্রয়াত কেন্দ্রিয় বিএনপির মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের অনুমোদিত কমিটি। আমরা তৃণমূল নেতাকর্মীর সাথে আলাপ-আলোচনা করে প্রার্থী ঘোষণা করছি। বর্তমান বিএনপিপন্থি ইউপি চেয়ারম্যানদের অগ্রাধীকার দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য আগামী ২৩ এপ্রিল ১৩ ইউনিয়নের ৭টিতে ভোটগ্রহণ হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিভক্তিতে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান চেয়ারম্যানরা বিপাকে
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ