Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভোলায় মিলল নতুন গ্যাসক্ষেত্র

উবার-পাঠাও নীতিমালা মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮

স্টাফ রিপোর্টার : ভোলার সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নে ৬০০ বিসিএফ (বিলিয়ন কিউবিক ফুট) গ্যাস পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সরকার। দেশের ২৭তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করেছে।
এছাড়া বাধ্যতামূলক লাইসেন্স গ্রহণের বিধান রেখে রাইডশেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা ২০১৭ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পরিচালনা প্রতিষ্ঠানের জন্য সনদ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা মুলক রাখা হয়েছে। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ভোলার নর্থ ভেদুরিয়া গ্যাস ক্ষেত্রে ৬০০ বিসিএফ (বিলিয়ন কিউবিক ফুট) গ্যাস আবিস্কৃত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের ২৭তম গ্যাস ক্ষেত্র। ভোলায় বর্তমানে আবিস্কৃত গ্যাস মজুদ ১ দশমিক ৫ টিসিএফ। পরীক্ষা করেই এ ফল পাওয়া গেছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখানে আরও খনন করা হলে গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গত ৯ ডিসেম্বর ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মাঝির হাটে ভোলা নর্থ-১ নামে গ্যাস অনুসন্ধান কূপের খননকাজ শুরু করে বাপেক্স। এতে সহযোগিতা করছে রাশিয়ার গ্যাজপ্রম ইন্টারন্যাশনাল ও মার্কিন কোম্পানি হ্যালিবারটন। দুই মাসের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গ্যাজপম প্রকৌশলীরা দ্রæত খননকাজ চালিয়ে যান। গত ১ নভেম্বর শাহবাজপুর ইস্ট-১ কূপের গ্যাসের মজুদ নিশ্চিত হয়। ওই কূপে ৩ হাজার ৪০০ মিটার গভীরে ওই গ্যাস পাওয়া যায়। ইস্ট-১-এর কূপ খনন শেষে ভোলার নর্থ-১-এর খননকাজ শুরু করে রাশিয়ান গ্যাজপম কোম্পানি। ডিএসটি পরীক্ষার পরই ভোলার নর্থ-১ কূপে গ্যাসের পরিমাণ জানা যাবে। ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া এলাকায় ৪টি ও টবগি এলাকায় ১টিসহ ৫টি কূপ ইতিমধ্যে খনন শেষে গ্যাসের মজুদ নিশ্চিত হয়েছে। ৪টি থেকে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে এই ৫টি কূপের গ্যাসের স্তর কাছাকাছি রয়েছে। ভোলা-নর্থ কূপ সর্বশেষ খননকৃত শাহবাজপুর ইস্ট-১ কূপ থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। এ কূপে গ্যাসের আলাদা জোন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে রূপপুর পারমাণবিক বিদুৎ কেন্দ্রে নির্মাণ প্রকল্পের জন্য প্রথম ঢালাই কাজে যে প্রথম কর্নিক বা টাওয়ালটি ব্যবহার করা হয় সেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তাস্তর করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীকে রাশান ফেডারেশনের দেওয়া ট্রয় এক্সপোর্ট টাওয়াল এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীর পাওয়া বেস্ট ইয়ুথ মিনিস্টার অ্যাওয়ার্ড-২০১৭ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শফিউল আলম বলেন, ভারতের ভুবনেশ্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক যুব সামিটে আন্তর্জাতিক যুব কমিটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীকে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ যুব মন্ত্রী বেস্ট ইয়ুথ মিনিস্টার অ্যাওয়ার্ড-২০১৭ দেওয়া হয়। ক্রেস্ট এবং সংশ্লিষ্ট সনদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, বাধ্যতামূলক লাইসেন্স গ্রহণের বিধান রেখে রাইডশেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা ২০১৭ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পরিচালনা প্রতিষ্ঠানের জন্য সনদ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা মুলক রাখা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রাইডিংশেয়ারিং ব্যবসায় নীতিমালায় মোট ৮টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এর মধ্যে অনুচ্ছেদ ক- তে ১১টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। এগুলো মেনে এই সেবা দেওয়া যাবে। তবে এজন্য সেবাদানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে একটা লাইসেন্স নিতে হবে। পরে সেটা নবায়ন করতে হবে। রাইডশেয়ারিং সার্ভিস পরিচালনার জন্য বিআরটিএ থেকে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট নিতে হবে। মোটরযানের মালিক যিনি তিনি এ সার্টিফিকেট গ্রহণ করবেন।
তিনি বলেন রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের টিন ও ভ্যাট সার্টিফিকেট থাকতে হবে। আর যদি উক্ত সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কোম্পানি হয়, তাহলে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির যে শর্তাবলি, তা মেনে চলতে হবে। জাতীয় চাহিদা সড়ক নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অধিক্ষেত্র বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারিত হবে। রাইডশেয়ারিং সার্ভিস এলাকায় নিজস্ব অফিস থাকতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোনো রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান রাইডশেয়ারিং সেবার সঙ্গে যুক্ত হতে হলে বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারিত সকল মোটরযান নিজস্বভাবে থাকতে হবে। ডিটিসি অনুমোদিত ঢাকা মহানগরী এলাকার জন্য ১০০টি এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য ৫০টি ও দেশের অন্যান্য মহানগর বা শহর এলাকার জন্য কমপক্ষে ২০টি নিজস্ব বাহন থাকতে হবে। রাইডশেয়ারিংয়ের আওতায় ব্যক্তিগত মোটরযান, মোটর সাইকেল, মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্স অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
রাইডশেয়ারিংয়ে ব্যবহৃত সকল মোটরযানের সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যেমন রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস, ইন্সুরেন্স, এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেটের হালনাগাদ থাকতে হবে। তিনি জানান, রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট প্রাপ্তির পর রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী ও চালকের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। যেখানে সকল পক্ষের অধিকার এবং দায়-দায়িত্বের বিষয়গুলো স্পষ্ট করা থাকবে। নির্ধারিত স্ট্যান্ড বা অনুমোদিত স্থান ব্যতীত যেখানে সেখানে কোনো রাইডশেয়ারিং মোটরযান যাত্রী নিতে রাস্তায় অপেক্ষা করতে পারবে না। এই নীতিমালার অধীনে একজন মালিক মাত্র একটি মোটরযান রাইডশেয়ারিং সার্ভিস পরিচালনা করতে পারবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ব্যক্তিগত মোটরযান রেজিস্ট্রেশন গ্রহণের পর প্রথম এক বছর তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের পর উক্ত মোটরযান রাইডশেয়ারিং এ দিতে পারবেন। বিআরটিএ’র ওয়েব পোর্টালে রাইডশেয়ারিং এ নিয়োজিত মোটরযানের তালিকা দিতে হবে। সেখানে যাত্রীর অভিযোগ জানানোর সুযোগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, নীতিমালাটির অনুচ্ছেদ গ এ বলা হয়েছে, রাইডশেয়ারিং এ নিয়োজিত হতে হলে তাকে অবশ্যই এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট নিতে হবে। এছাড়া কেউ এ ধরনের সেবামূলক কাজ করতে পারবেন না। এ ধরনের সার্টিফিকেট নিতে উক্ত কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সঙ্গে ১ লাখ টাকা এনলিস্টমেন্ট ফিস বাবদ সরকারি কোষাগারে প্রদান করতে হবে। এর সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স, ই-টিআইএন ও ভ্যাট সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। তিনি বলেন, এনলিস্টমেন্ট ফিস সরকার প্রয়োজনে কম বেশি করতে পারবে। লাইসেন্স পেতে আবেদনপত্র পাওয়ার পর বিআরটিএ যাচাই-বাছাই করার পর এক বছরের জন্য এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট প্রদান করবে। এর মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে রিনিউ করতে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে নবায়ন ফিস বাবাদ প্রতিবছর ১০ হাজার টাকা প্রদান করতে হবে। তিনি জানান. নীতিমালার অনুচ্ছেদ ঘ তে বলা হয়েছে, রাইডশেয়ারিং এর জন্য এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট একবারে সর্বোচ্চ তিন বছর মেয়াদে প্রদান করা যাবে। মেয়াদ শেষে তা নবায়ন করা যাবে। মোটরযানের জন্য প্রতিবছর রিনিউ ফিস বাবদ ৫০০ টাকা এবং অন্যন্যা মোটরযানের জন্য ১০০০ টাকা ফিস প্রদান করতে হবে। নীতিমালার ঙ অনুচ্ছেদে ভাড়ার হার বিষয়ে বলা হয়েছে, ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস গাইডলাইন ২০১০ অনুসারে ভাড়ার বিষয়টি নির্ধারিত হবে। এর চেয়ে বেশি ভাড়া গ্রহণ করা যাবে না। এ নীতিমালা লঙ্ঘন করলে তাদের এনলিস্ট সার্টিফিকেট বাতিল বলে গণ্য হবে এবং প্রচলিত আইনের দ্বারা শাস্তি প্রদান করা হবে। বর্তমানে ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়ার জন্য যে নীতিমালা আছে, এ ধরনের রাইডিংয়ের ক্ষেত্রেও সেই নীতিমালা অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ হবে। পাঠাও সার্ভিসের মতো মোটরসাইকেলের মাধ্যমেও এই সেবা দেওয়া যাবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমানেও এ ধরনের সেবা কার্যক্রম চলছে। এটা এখন আইনি কাঠামোয় আনতে নীতিমালা করা হচ্ছে।



 

Show all comments
  • নাজির ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১:৩৬ এএম says : 0
    এটা খুব ভালো খবর
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ