যেভাবে ৫০০
ক্লাব ফুটবলে গোলের প্রায় সব রেকর্ডই তার দখলে। এবার সেই লিওনেল মেসি উঠে গেলেন আরেক উচ্চতায়। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে ৫০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি।
মীর্জা গালিব স্ট্রিটে সব সময়ই গিজগিজ করে বাংলাদেশী পর্যটক। এখানকার পান-সিগারেটের দোকানগুলোতে পর্যন্ত বাংলাদেশী ব্র্যান্ডের সিগারেট বিক্রি হয়। রেস্টুরেন্টগুলোতেও বাংলাদেশী খাবার মেন্যু। নিউমার্কেট এলাকার সড়ক এমনকি গলিতেও ট্রাভেল এজেন্ট এবং মানি এক্সচেঞ্জ শপগুলোও যেন বাংলাদেশী পর্যটকদের জন্যই নির্ধারিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশী মুদ্রা পর্যন্ত রুপিতে বিনিময় হচ্ছে এখানে। বাংলাদেশ থেকে কলকাতাগামী বাসগুলো এখানে থামে বলে এখানেই হোটেলগুলো জমজমাট আবাসন ব্যবসা করছে বছরের পর বছর। এখানকার রাতটা যেন একখ- বাংলাদেশ। রাতভর বাংলাদেশ থেকে আসা লাল-সবুজ জার্সিধারী অসংখ্য পর্যটক। একটা রুমের জন্য এখানে-সেখানে হন্নে হয়ে ঘুরেছে শত শত বাংলাদেশী পর্যটক। এমন ছবি নাকি কলকাতার স্থানীয়রা দেখেনি আগে কখনো। আগন্তুকদের কলকাতায় জড়ো হওয়ার কারণ একটাইÑ বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ম্যাচ দর্শন। ৫০০, ৭০০ রুপির টিকিট, তাদের কাছে নিতান্তই যেন সামান্য। এখানে এসে জড়ো হয়েছিল বিসিবি’র একদল পরিচালক তো দূরের কথা, ক্লাব অফিসিয়াল এবং বিসিবি’র বেতনভুক্ত কর্মচারী- কর্মকর্তারাও। এক সঙ্গে এত কর্মচারীকে ছুটি দিয়ে কিভাবে চলেছে বিসিবি’র প্রশাসনিক কর্মকা-, কে জানে? বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রথম ফ্যান ক্লাব বেঙ্গল টাইগার্স এবং বছর দুই ধরে গড়ে ওঠা ক্রিকেট সাপোর্টার্স ফোরামের একদল সদস্য বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমর্থন দিয়েছে ধর্মশালায়ও। কলকাতায় এসে এই দুই ফ্যান ক্লাবের সদস্যসংখ্যা গেছে বেড়ে। কলকাতার স্থানীয় বাঙালিরা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য শুভ কামনা করেছেন, তাতে ইডেন গার্ডেনটা হয়ে ওঠার কথা ছিল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম। পশ্চিম বাংলার প্রধান ভেন্যুতে বাংলাদেশের খেলা বলে একই ভাষাভাষীদের খেলা দেখতে এখানে সমবেত হওয়ার কথা যাদের, তাদের সবার সমর্থন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলেরই পাওয়ার কথা। অথচ হয়েছে তার উল্টোটা। ইডেন যেন হয়ে উঠেছে কারচী ন্যাশনাল স্টেডিয়াম। কলকাতায় বসবাসরত উর্দুভাষীদের মধ্যে যারাই এসেছিলেন খেলা দেখতে, বাংলাদেশ-পাকিস্তান তাদের সমর্থনটা পেয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। শুরু থেকে স্টেডিয়ামের অধিকাংশ গ্যালারির দখলটা নিয়ে নিয়েছে তারা! পাকিস্তানের চার ছক্কায় বেজে উঠেছে গান, সেসবও পাকিস্তানী সঙ্গীত! আর শোনা গেছে সেই পরিচিত স্লোগান- ‘জিতেগা, জিতেগা, পাকিস্তান জিতেগা’।
ধর্মশালায় ভারতের বিপক্ষে খেলব না বলে গোঁ ধরে কলকাতায় মাত্র ক’দিনের বেজ ক্যাম্প, বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় জয়ে সুপার টেন শুরু করে তারা। ইডেনে এত পাকিস্তানী সমর্থক দেখে রীতিমতো অভিভূত মোহাম্মদ হাফিজÑ ‘দারুণ সমর্থন পেলাম এখানে। পুরো কলকাতায় যেখানে গেছি, সেখানেই শুনেছি ‘জিতেগা জিতেগা, পাকিস্তান জিতেগা’। উপস্থিত প্রায় ৩৫ হাজার দর্শকের অধিকাংশের সমর্থন পেলে তো চাঙ্গা থাকারই কথা পাকিস্তান ক্রিকেট দলের।
ইডেন গার্ডেনসের পাশে ইডেন পার্কের বুথের সামনে লম্বা লাইন দিয়ে টিকিট কিনতে আসা পাকিস্তান সমর্থকদের সামাল দিতে কলকাতা পুলিশকে থাকতে হয়েছে সতর্ক। অশ্বারোহী পুলিশকে ব্যবহার করতে হয়েছিল পর্যন্ত এখানে। ইডেন গার্ডেনস মাঠে অস্থায়ী টিকিট কাউন্টার, ইডেন গার্ডেনস রোড থেকে নেমে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে, সেখান থেকেই গ্যালারি ভেদে বাঁশের বেষ্টনীÑ স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখ খুঁজে নিতে কষ্ট হয়নি কারো। তবে ঝক্কিঝামেলাটা পোহাতে হয়েছিল মিডিয়ার। ইডেন গার্ডেনস মাঠের ভেতরে একখ- জমিতে গড়ে ওঠা কলকাতা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, তার পাশেই টিকিট কাউন্টার। পুলিশের সামনেই হয়েছিল কালোবাজারে টিকিট বিক্রি। মিডিয়াকে টিকিট সংগ্রহে পড়তে হয়েছিল ভোগান্তিতে। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের ভাস্কর্যের পূর্ব প্রান্তে বড় মাঠ, ঠিক আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতোই। সেখানেই কলকাতা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবঘরকে অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টার বানিয়ে ফেলা হয়েছে। স্টেডিয়ামের মূল প্রবেশপথ থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরেÑ সেখান থেকেই আইসিসি বিতরণ করেছে ম্যাচ টিকিট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।