পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কৃষি ও শিল্পখাত সীমাবদ্ধ গন্ডি থেকে বের হতে পারছে না দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। এই অঞ্চলে কৃষি ও শিল্পখাতে রয়েছে বিরাট সম্ভাবনা। কিন্তু সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। অর্থনীতির হৃদপিন্ড সজীব রাখার ক্ষেত্রে কৃষি ও শিল্পের আর্থিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাী গড়ে উঠেনি। খুঁজে বের করা হচ্ছে না কোথায় কি গলদ রয়েছে। দরিদ্র হওয়ার বিপদ এড়ানোর নয়া মন্ত্র আবিস্কার করার বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে না। যারা কর্মবীরের দৃষ্টান্তস্থাপন করছে তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। কৃষি ও শিল্পখাতের মধ্যস্বত্বভোগীরা বড়ই জালাচ্ছে। তাদের লাগাম টেনে ধরা দরকার। তাহলে চোখে পড়ার মতো উন্নতি ঘটবে সম্ভাবনাময় কৃষি ও শিল্পখাতে। এসব অভিমত ব্যক্ত করেছেন কৃষি বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী, শিল্প উদ্যোক্তা, অর্থনীতি বিশারদ এবং সচেতন ও পর্যবেক্ষক মহল।
সুত্রমতে, অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিতি ঘটেছে অঞ্চলটির। বহুবিধ পরিকল্পনাও আছে। কিন্তু যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সকল সেক্টরের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে বামÍবভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া হলে খুব সহজেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ গোটা অঞ্চলে কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য নির্ভর অর্থনীতির চেহারা ঈর্শণীয় পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। তৃণমূল অর্থনীতির কাঠামো মজবুতের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখতে সক্ষম হবে অঞ্চলটি। সেজন্য সরকারকে জরুরিভাবে তৈরী করতে হবে একটি মাস্টার পান। সুত্রমতে, কম পুঁজিতে আর্থিক নিরাপত্তা দেয়ার বহুমুখী ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব হলে কর্মজীবি মানুষের নতুন দৌড় শুরু হবে। ভাগ্যোন্নয়নেরও নতুন দিশা পাবে। উৎপাদন ব্যয় কমানো ও দক্ষ করা হলে কৃষক ও শিল্পশ্রমিকরা সম্ভাবনাময় খাতে উন্নয়নের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হবে। তাহলেই সত্যিকারার্থে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। মাত্র কয়েক যুগ আগের কথা, এ অঞ্চলের চিরুনি, সাবান, রেশম ও তাঁত শিল্পসহ অনেক শিল্প চমক সৃষ্টি করেছিল। দিনে দিনে শিল্পগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।
যশোরের চিরুনি শিল্পটি ছিল নামকরা। উপমহাদেশ জুড়ে ছিল যার খ্যতি। ১৯০১ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত শিল্পটির একচেটিয়া ব্যবসা চলে। মহিশের শিং দিয়ে তৈরী চিরুনির প্রধান ক্রেতা ছিল ভারত। পরবর্তীতে এখানকার প্রযুক্তি ধার করে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে চিরুনি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে যশোরের চিরুনি শিল্পের ইতিহাস ও ঐতিহ্য মুছে যায়। সাবান কারখানার স্মৃতিচিহ্নটিও মুছে গেছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যশোর ও খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মূলত ১৯৬০ সালের পর অসংখ্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গড়ে ওঠে। লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় ভারী ও মাঝারী অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানও। কিন্তু ধীরে ধীরে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে পড়ে বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠান। আবার নতুন করে কৃষি ও শিল্পে অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি ও শিল্পনির্ভর গ্রামীন অর্থনীতি বহুলাংশে চাঙ্গা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সুযোগকে কাজে লাগানোর বিষয়টি অনুপস্থিত রয়েছে। অথচ শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল নয়, সারা দেশের কৃষি ও শিল্প পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে টেক্কা দিতে পারে বলে সংশিষ্ট একাধিক সুত্রে জানা গেছে। এক্ষেত্রে অভাব রয়েছে পরিকল্পনার। কৃষি ও শিল্পখাতে বিপব ঘটানোর পরিকল্পনা নেয়া হলে অবশ্যই বাস্তবে এর সুফল পাওয়া যাবে।
সচেতন ও পর্যবেক্ষক মহল থেকে বলা হয়েছে, স¤ম্ভাবনাময় অঞ্চল হলেও গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না তার তদন্ত নেই। এখনো দরিদ্র ও প্রান্তিক কৃষক, দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমজীবি এবং স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষের চেহারায় দুর্দশা আর দুশ্চিন্তার ছাপ কাটেনি। সুত্রমতে, এ অঞ্চলে সাদা সোনা চিংড়ি, রজনীগন্ধা ও অন্যান্য ফুল, মুক্ত পানির মাছ ও রেণু পোনা উৎপাদন ছাড়াও গরু--ছাগল ও হাঁস-মুরগী পালন করে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করার অভাবনীয় সুযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে এসব খাতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল রেকর্ডও সৃষ্টি করেছে। কিন্তু কেন যেন সামনের দিকে এগুতে পারছে না। সেজন্যই গলদটা খুঁজে বের করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বারবার।
সুত্রমতে, এশিয়ার বৃহত্তম বীজবর্ধন খামার রয়েছে ঝিনাইদহের দত্তনগরে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বিএডিসি’র খামার থেকে বীজের চাহিদা পুরণ সম্ভব। ফসলের প্রাণশক্তি হচ্ছে বীজ। উন্নতমানের বীজ কৃষি বিপ্লবের উৎস। দত্তনগর, বারাদী ও সাধুহাটিসহ সরকারী বীজ খামারগুলো থেকে কৃষকের চাহিদানুযায়ী বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা জোরদার হলে ফসলাদি উৎপাদনে বিরাট সুফল পাওয়া যাবে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধ গন্ডি থেকে বের হতে পারছে না। তুলা আবাদ ও উৎপাদনের বিরাট সম্ভাবনাকেও কাজে লাগানো হচ্ছে না। অথচ একটু নজর দিলেই শুধু দেশীয় শিল্প বাঁচবে না, বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। বর্তমানে স্পিনিং মিলের কাঁচামালসহ তুলার চাহিদা পুরণ প্রায় পুরোপুরি বিদেশনির্ভর হয়ে পড়তে হচ্ছে। এতে সংশিষ্ট শিল্পও আর্থিক ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছে। সরকারী উদ্যোগ ও গবেষণা জোরদারের অভাবেই সম্ভাবনাময় খাতটি থমকে আছে। কৃষি ও শিল্প একে অপরের পুরিপুরক। তাই গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত শক্তিশালীর স্বার্থে মূল দু’টি খাতের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া জরুরি। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।