Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চিকিৎসকদের জন্য নির্মিত বহুতল আবাসিক ভবন যেন ভুতুড়ে বাড়ি

সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে নজির হোসেন নজু | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১৩ এএম, ৯ জানুয়ারি, ২০১৮

জরুরী চিকিৎসা বিঘিœত
রোগীরা যাতে চিকিৎসকদের হাতের নাগালে পান এমন লক্ষ্যকে সামনে রেখে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল ক্যাম্পাসে সরকার পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা গড়ে তুলেছেন। প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন হাসপাতাল ভবনসহ আটটি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব আবাসিক ভবনে কোন চিকিৎসক বাস করেন না। ভবনে কিছু কর্মচারী বাস করলেও তাদের সংখ্যা অতি নগণ্য। ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনগুলো এখন ভুতুরে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। বিঘিœত হচ্ছে জরুরী চিকিৎসা সেবা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১১ সালে সৈয়দপুর ৫০ শয্যা হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। অবকাঠামো সুবিধা বাড়াতে ২০১৫ সালে নির্মাণ করা হয় হাসপাতাল ভবনসহ আটটি আবাসন ভবন। এর মধ্যে চিকিৎসকদের পরিবার নিয়ে বসবাসের জন্য দুটি চারতলা ভবনে ১২টি ফ্লাট রয়েছে। আটটি ফ্লাট বরাদ্দ সাধারণ চিকিৎসকদের জন্য আর সিনিয়র কনসালটেন্টদের জন্য রয়েছে চারটি ফ্লাট। ব্যাচেলর চিকিৎসকদের জন্য রয়েছে একটি ডরমেটরিও। সেখানে ১০ জন চিকিৎসকের জন্য ১০টি ফ্লাট আছে। রয়েছে নার্সেস ডরমেটরী, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্যও ডরমেটরী। এছাড়াও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল অফিসারের জন্য পুরাতন দুটি ভবনও আছে। অথচ ভবনগুলোতেও কেউ থাকেন না, যারা থাকেন তাদের সংখ্যাও হাতেগোনা। এর ফলে সরকার প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত থাকছে।
এদিকে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে চিকিৎসক ও অধিকাংশ কর্মচারীরা বসবাস না করায় অফিস ছুটির পর হাসপাতাল চত্ত¡র শুনশান হয়ে যায়। ফলে আগত ও চিকিৎসাধীন রোগীরা পড়েন চরম বেকায়দায়। ভরসা বলতে জরুরী বিভাগের একজন চিকিৎসক। তাও সবসময় হাতের নাগালে পাওয়া যায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগীর স্বজন অভিযোগ করে জানান, অফিস সময়ের পরে হাসপাতালের বেডে ভর্তি কোন রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষণিক কোন চিকিৎসক পাওয়া যায় না। ফলে সময়মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে না পারায় অনেক রোগীকে অকালে প্রাণ ত্যাগ করতে হয়। এমন অভিযোগও রয়েছে চিকিৎসকরা ক্যাম্পাসে না থাকায় জরুরী বিভাগে সংকটাপন্ন রোগী এলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেয়া হয় না। রোগীর স্বজনদের এখানে ট্রিটমেন্ট হবে না বলে রংপুরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এতে করেও অনেক রোগী চিকিৎসা ছাড়াই প্রাণ হারান। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনদের। যদি হাসপাতাল ক্যাম্পাসে চিকিৎসকরা অবস্থান করতো, তাহলে দ্রæত তাদের উন্নত চিকিৎসার প্রস্তুতি গ্রহণ করা সম্ভব হত। কিন্তু চিকিৎসকদের না মেলায় সে সুযোগ পাচ্ছেন না রোগীরা।
আবাসিক সুবিধা থাকা সত্তে¡ও কেন হাসপাতাল ক্যাম্পাসে থাকেন না জানতে চাইলে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফুল হক সোহেল জানান, হাসপাতাল হতে সামান্য দূরে আমার পৈত্রিক বাড়ি সে কারণেই আমি থাকি না। এমন কথা কর্মরত অন্যান্য চিকিৎসকদেরও।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ও নীলফামারী জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ রনজিত কুমার বর্মনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, প্রাইভেট বাসার চেয়ে সরকারি বাসার ভাড়া অনেক বেশি, সে জন্য কেউ বাসায় থাকেন না। তবে বিধিবিধানের পরিবর্তন করা হলে এ সমস্যা আগামী দিনে থাকবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চিকিৎসকদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ