পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা দেশে গুমের মত ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, দেশে হঠাৎ হঠাৎ লাশ পরে থাকে। যারা ৯ বছর আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে তারাই দেশের গুমের ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাদের একজন সুইডেনে বসে কিলিং গ্রæপ নিয়ন্ত্রণ করছে। তার নাম নাহিদ। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও খুনের ঘটনা দেখছি। তিনি আরও বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) এখনো রক্তের হলিখেলা খেলছে। যারা পাকিস্তানী কায়দায় জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তারা পাকিস্তানী প্রেতাত্মা। এরাই আবার গুম খুনের কথা বলে। গুমের নাটক যারা সাজায়। এরাই গুমের অভিযোগ দিতে দ্বিধা করে না।
গতকাল রবিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির উদ্যোগে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের খন্ডচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি করেন। আলোচনা সভায় বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মাইশার মা ও নুরুজ্জামানের স্ত্রী মাফরুহা বেগম, ট্রাক ড্রাইভার পটল মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল মোর্শেদ আলম, আলু ব্যবসায়ী রেজাউল করিম, সেলসম্যান মোশাররফের স্ত্রী লাভলী আক্তার কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা গণতন্ত্রের মুখোশ পড়ে আছে তাদের মুখোশ জাতির সামনে উম্মোচন করতে হবে। বিএনপির-জামায়াতের নেতৃত্বে সা¤প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখতে হবে। আবার তাদের পরাজিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের এই বর্বরতাকে তুলে ধরে এদের মুখোশ উম্মোচন করতে হবে। বর্বর এ অপশক্তির বিরুদ্ধে ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিতে হবে।
পাকিস্তানী দোসররা এখনও বাংলার মাটিতে বিষ বাষ্প ছড়াচ্ছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশে মানবিকতাকে অপমান করেছে হিং¯্র দানবতার মাধ্যমে। তারা দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। এখন তারা কোন মুখে দেশের মানুষের কাছে ভোট চায়? এ বছর সা¤প্রদায়িকতার পরাজয়ের বছর। তাদের পরাজয় হবে।
অনেকেই গুম হয়ে ফিরে আসছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই এলাকার মাহফুজ বাবু ফিরে আসেনি। যারা ভিক্টিম তাদের মুখে যে বর্ণনা তারপর আর বক্তব্য দেয়ার কিছু থাকে না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা আপনাদের পাশে আছে, থাকবে। শেখ হাসিনা বিপন্ন মানবতার বাতিঘর। পরে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে সদস্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে নগদ অর্থ প্রদান করেন। সেইসঙ্গে তাদের সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সেলসম্যান মোশাররফের স্ত্রী লাভলী আক্তার বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসীদের ছোড়া পেট্রোল বোমার আঘাতে আমার স্বামীর মুখমন্ডল পুড়ে যায়। তাকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। এর আমার স্বামীর চাকরিও চলে যায়। আমরা দুই ছেলে ও মেয়ে নিয়ে আর্থিক অস্বচ্ছলতায় পড়ে যাওয়া তিনি এখন মালেয়শিয়ায় আছেন। কিন্তু সেখানেও তিনি নিয়মিত কাজ করতে পারেন না। একদিন কাজ করলেই তার হাতের যন্ত্রণা উঠে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের যে অনুদান দিয়েছেন তা নিয়ে আমরা কোনোরকম দিন কাটাচ্ছি।
আলু ব্যবসায়ী রেজাউল করিম বলেন, সরকার আমাদের দিকে না তাকালে আমরা কেউ বাঁচতাম না। বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে মারার নাম কি রাজনীতি? আমিতো অসহায় মানুষ। আমিতো কোনও রাজনীতি করি নাই। কোনও মিছিল, মিটিংয়ে যাই নাই। ছোট ব্যবসায়ী। আমার অপরাধ কী ছিল? দেশের প্রতিটা মানুষের কাছে আমি বিচার চাই। এর বিচার আপনারাই করবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাশে না দাঁড়ালে আমাদের পরিবার ছিন্নভিন্ন হয়ে যেত। আমরা বাঁচতাম না। আমার চিকিৎসা হতো না।
সভাপতির বক্তব্যে এইচটি ইমাম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের এসব হত্যা, আগুন সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্যের বিষয় শুধু ঘরের মধ্যে বললেই হবে না। এর ব্যাপক প্রচার দরকার। প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করে সুন্দর ছক ব্যবহার করে জেলা, উপজেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে প্রচার করতে হবে। তিনি বলেন, যারা আগামীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে এখন থেকে বিএনপি-জামায়াতের অপকর্ম প্রচার প্রচারণা শুরু করতে পারেন। এতে আপনাদের মনোবল প্রমাণ হবে। আপনারা আমাদের কাছ থেকে ভিডিও নিয়ে গিয়ে নিজ নিজ এলাকায় দেখান। এ প্রচার নিয়মিত দেখানো হলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে যে বিজয় হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি এবারও হবে। এবার আরও বড় আকারে হবে।
এইচটি ইমাম আরও বলেন, আমাদের হাতে সময় খুব কম। নির্বাচনের আর বেশি দেরি নাই। দেখতে দেখতে কয়টা মাস পার হয়ে যাবে। একবার যখন নির্বাচনের জোরালো প্রস্তুতি শুরু হবে। তখন সবাই এর প্রচারের কথা ভুলেও যেতে পারে। তাই এখন থেকে জনমত যদি আমাদের পক্ষে আনতে হয় সেক্ষেত্রে আমাদের শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরলে নির্বাচনের বিজয় আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে।
প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এইচটি ইমামের সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনিবার্হী সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
এর আগে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের ভিডিও এবং স্থিরচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।