মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে এবং দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ কার্যক্রমে চীনের মুদ্রা ইউয়ানকে অনুমোদন দিয়েছে। ফলে দেশটিতে ডলারের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে ইউয়ান ব্যবহার বৈধতা পেল। সিদ্ধান্তটি এমন একসময় এল, যার মাত্র একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটারে এক বার্তায় ইসলামাবাদের অনুকূলে সাহায্য বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের (এসবিপি) এক্সটার্নাল রিলেশনস ডিপার্টমেন্টের এক ঘোষণায় বলা হয়, আর্থিক ও মুদ্রা বাজারের নীতিনির্ধারণের অংশ হিসেবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছেÑ এখন থেকে আমদানি, রফতানি এবং আর্থিক লেনদেনের জন্য চীনা ইউয়ান ব্যবহার করা যাবে। সরকারি ও ব্যক্তিগত উভয় খাতেই (উদাহরণস্বরূপ পাকিস্তান ও চীন উভয় দেশেই) দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কার্যক্রমের জন্য ইউয়ান ব্যবহার করা যাবে। ঘোষণায় আরো বলা হয়, বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বিধি অনুসারে, একটি অনুমোদিত বৈদেশিক মুদ্রা পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনে ইউয়ান। এসবিপি এরই মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কার্যক্রমে ইউয়ানের মাধ্যমে এলসি খোলা এবং আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মতো বিষয়গুলো সম্পন্ন করতে যে নিয়ন্ত্রক কাঠামো নির্মাণ করা প্রয়োজন, সেটি সম্পন্ন করেছে। পাকিস্তানের বিধি অনুসারে, ইউয়ান এখন মার্কিন ডলার, ইউরো ও জাপানি ইয়েনের মতো অন্যান্য আন্তর্জাতিক মুদ্রার কাতারে চলে এল। ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, সিপিইসির (চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর) আওতায় যে হারে চীনা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ছে, তাতে এসবিপি প্রত্যাশা করছে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে এবং দুই দেশের জন্যই দীর্ঘস্থায়ী কল্যাণ বয়ে আনবে। উল্লেখ্য, ইসলামাবাদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় বেইজিং ২০৩০ সাল নাগাদ পাকিস্তানে ৬ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রæতি দিয়েছে। সিপিইসিকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে গণ্য করা হয়। পাকিস্তানের এ সিদ্ধান্তের ফলে দুটি মিত্র দেশের মধ্যে, যারা নিজেদের সব পরিবেশে মিত্র বলে দাবি করে, সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হলো। গত অর্থবছরে দুটি দেশের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য সম্পন্ন হয়। তবে এর মধ্যে পাকিস্তান ১৬২ কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা রফতানি করে এবং বিপরীতে চীন থেকে ১ হাজার ৫৭ কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা আমদানি করে, যা দেশ দুটির মধ্যে ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতির প্রমাণ দেয়। এর আগে এসবিপি ২০১২ সালে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার (পিবিওসি) সঙ্গে কারেন্সি সোয়াপ এগ্রিমেন্ট (সিএসএ) সম্পন্ন করেছিল। এবার পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগে ইউয়ানের ব্যবহার নিশ্চিত হলো। সা¤প্রতিক ঘোষণায় এসবিপি পাকিস্তানের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় অর্থ জমা ও ঋণ প্রদানের মাধ্যম হিসেবেও ইউয়ানকে অনুমোদন দিয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কর্মাশিয়াল ব্যাংক অব চায়না লিমিটেডকে (আইসিবিসি) পাকিস্তানে একটি স্থানীয় ইউয়ান সেটেলমেন্ট ও ক্লিয়ারিং হাউজ প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর ফলে পাকিস্তানে কার্যক্রম চালানো চীনের ব্যাংকগুলো চীন থেকে আসা বা চীনে পাঠানো রেমিট্যান্সসহ ইউয়ানভিত্তিক বিভিন্ন লেনদেন পাকিস্তানেই সম্পন্ন করতে পারবে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পাকিস্তানকে হেয় করে দেয়া টুইটের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইসলামাবাদ। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই বিতর্কিত টুইটের ব্যাখ্যা দিতে ইসলামাবাদে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড হেইলকে তলব করে পাকিস্তানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ডেভিড হেইল এরই মধ্যে পাকিস্তানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কে বেশ টানাপড়েন দেখা দিলেও দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় ছিল বরাবরই। সোমবার দেশটির ওপর খড়্গহস্ত হয়ে ওঠার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ সাইট টুইটারে বছর শুরু করেন ট্রাম্প। এতে তিনি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে বোকার মতো পাকিস্তানকে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ সহায়তা দিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিদানে তারা আমাদের মিথ্যা ও ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই দেয়নি। আমরা আফগানিস্তানে যেসব সন্ত্রাসীকে দমন করছি, ‘অল্প সহায়তার’ নামে তাদের আশ্রয় দিচ্ছে পাকিস্তান। এসব আর নয়!’ দ্য ডন, সিনহুয়া, নিউজ এইটিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।