Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চালের দামে সমস্যার কথা স্বীকার অর্থমন্ত্রীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মানি লন্ডারিং আইন সংশোধনের ইঙ্গিত
এক বছরের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। এর প্রভাব পড়েছে দেশের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার ওপর। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বলেছে চালের দাম বাড়ায় নতুন করে কমপক্ষে সোয়া পাঁচ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। তবে সানেমে এই বক্তব্য সঠিক নয় বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সানেম তিন মাসের টাইম লাইনে এই গবেষণা জরিপটি করলেও মুহিত মনে করেন, এই অল্প সময়ে সামগ্রিক প্রভাব নিয়ে মূল্যায়ন করা যৌক্তিক না। অর্থমন্ত্রী বলেন, তাৎক্ষণিক এই রিপোর্টের ভিত্তি নেই। এই জন্য কমপক্ষে একটা মৌসুম বা একটা প্রান্তিক দেখা দরকার।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে লভ্যাংশ গ্রহণকালে তিনি বলেন, চালের দাম কিছুটা বাড়ুক তা আমরা চেয়েছি। এটা চেয়েছি যেনো কৃষক দাম কিছুটা বেশি পায় সেই আশায়। কিন্তু আমাদের আশার চাইতে দাম একটু বেশিই বেড়েছে। দামটা ৫০ এর উপড়ে গেছে। মুহিত বলেন, দামটা তুলনামূলক বেশিই বেড়েছে। তার ফলে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েছে সেটা আমরা স্বীকার করি।
মুহিত বলেন, চাল কিনতে গিয়ে সঞ্চয় খরচ করছেন সাধারণ অনেক মানুষ। সেটা আমাদের অজানা না। আশা করি আর এক মৌসুমের মধ্যেই চালের দাম কমে আসবে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং বা সানেম গত শনিবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মানেম বলেছে, সোয়া পাঁচ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়ে গেছে। আমাদের দারিদ্র্য বিমোচনের যে অগ্রগতি এবং তার যে চিত্র, সেখানে কিন্তু বড় ধরনের একটি ভয়ের কাজ করছে। এটা কোনোভাবেই অর্থনীতির মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সুস্বাস্থ্যের জন্য সঙ্গতিপূর্ণ নয়। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সানেম প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধির কারণে গতি কমেছে দারিদ্র্য বিমোচনের। ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম ও জালিয়াতি নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।
উৎপাদন ঘাটতি এবং আন্তর্জাতিক বাজার ঊর্ধ্বমুখীর এই অবস্থায় আপাতত চালের দাম কমার সম্ভাবনা কম বলেও মনে করে সংস্থাটি। তাই এখনই কার্যকর চালনীতি প্রণয়নের দাবি জানায় তারা।
অধিক শুল্ক হারের কারণে আমদানি বন্ধ থাকা, বোরো মৌসুমে হাওরে বন্যায় ফসলহানি, মজুদে ঘাটতিসহ নানা কারণে কোরবানির ঈদের পর থেকেই চড়তে থাকে চালের দাম। এর মধ্যে মোটা চাল প্রতিকেজি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, আর সরু চাল ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় উঠে যায়। নতুন আমন চাল বাজারে এলে দাম কমবে বলে ব্যবসায়ীরা আশার কথা শোনালেও এখনো চালের দামে খুব একটা হেরফের হয়নি।
এদিকে অর্থপাচার বা মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত ঘটনার যথাযথ পদক্ষেপ নিতে মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট সংশোধনের ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
গতকাল সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে এমন ইঙ্গিত দেন তিনি। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, কেন্দ্রীয় ব্যাংক গর্ভনর ড. ফজলে কবির, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মাহবুবে আলম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, একটা চুরি হয়েছে, মামলার ব্যাপার আছে। এখন এটা নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, আজকে বসেছিলাম, আমাদের যে মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট আছে-সেটা দেখার দরকার আছে কী না। এ আইনটা নিয়ে আমরা কত দূর যেতে পারি-কোনো সংশোধন প্রয়োজন হবে কী না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, তবে আমরা আজকে যে পর্যালোচনা করলাম, তাতে আইনের খুব বেশি দূর্বলতা পাইনি। হয়তো অ্যামেন্ডমেন্ট করতে হতে পারে, যদি অন্য কোনো প্রসেসিং করতে চাই। তবে বর্তমান আইনে মামলা করতে কোনো সমস্যা নেই বলে জানান তিনি।
মুহিত বলেন, মানি লন্ডারিং মামলার জন্য দায়িত্বশীল দফতর হল-অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ দুটির মধ্যে দ্বৈততা আছে-এটা একটু পরিস্কার করতে হবে। যদি এটা করতে চাই তাহলে অ্যামেন্ডমেন্ট হতে পারে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শিগগিরই ফের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চালের

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ