Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

সশস্ত্র উপজাতীয় সংগঠনের বিবাদ নানিয়ারচরে ২০ ইউপি সদস্য নিখোঁজ

| প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সৈয়দ মাহাবুব আহামদ রাঙামাটি থেকে : রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় ২০/২২জন ইউপি সদস্য নিখোঁজ হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাদের নিখোঁজ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সংগঠন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক পার্টি এসব ইউপি সদস্য নিখোঁজের পিছনে ইউপিডিএফ দায়ী বলে দাবি করেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ করে রাঙামাটি জেলায় চারটি বিবাদমান আঞ্চলিক উপজাতীয় সংগঠন খুন, অপহরণসহ নানাভাবে বিবাদে জড়িয়ে পড়ার অংশ এই গুমের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে গত সপ্তাহে দুই বিবাদমান সংগঠনের আক্রোশের রেশ ধরে নানিয়ারচরে একজন খুন হওয়া ছাড়াও জুরাছড়ি আওয়ামী লীগের উপজেলা পর্যায়ের নেতা অরবিন্দু চাকমা খুন এবং রাসেল মারমাকে পিটিয়ে গুরতর আহত করা হয়। এই তিন ঘটনার রেশ ধরে পাহাড় বর্তমানে উত্তপ্ত। বিভিন্ন উপজেলার সাথে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। উপজেলাসমূহে পরিস্থিতি থমথমে হয়ে রয়েছে। বেড়ে গেছে দ্রবমূল্য।
ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক পার্টির আহবায়ক তপন জ্যোতি চাকমা (বর্মা) ইউপি সদস্য নিখোঁজের বিষয়ে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে অস্ত্রের মুখে এসব ইউপি সদস্যদের অপহরণ করে নিয়ে তাদের গুম করে ইউপিডিএফ’র সশস্ত্র ক্যাডারা। ইউপিপিএফ গণতান্ত্রিক পার্টির এই নেতা আরো জানান, ইউপিডিএফ আমাদের রাজনৈতিক দলকে ধ্বংস করার জন্য হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনের বদনাম করার জন্য আমাদের সংগঠনের তথা কথিত নব্য মুখোশ বাহিনী নাম দিয়ে গত ১৪ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবেরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে নানিয়ারচর উপজেলা সদরের ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিলাল চাকমা।
তিনি বলেন, স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে আমাদের সংগঠনের নাম নব্য মুখোশ বাহিনী। আমরা এ অঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছি। কিন্তু আমাদের সংগঠন এসব কাজে জড়িত নয় বলে তিনি জানান। এ নেতা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিলাল ওই উপজেলায় নব্য মুখোশ বাহিনী প্রতিরোধ কমিটি করে উপজেলার অন্যান্য ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করে, যা ভিত্তিহীন বানোয়াট।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এবং এর প্রতিবাদে মিছিল করে ওই উপজেলার অন্যান্য ইউপি সদস্যরা। তাদের দাবি, তাদের স্বাক্ষর জাল করে ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিলাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ স্মারকলিপি পেশ করে। ইউপি সদস্যরা মিছিল করায় তাদের উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে ইউপিডিএফ নানিয়ারচর শাখার গ্রæফ কমান্ডার দলীয় নাম শ্রাবণ চাকমা (প্রকৃত নাম শান্তিময় চাকমা) এ ঘটনার সমাধানের কথা বলে আন্দোলনরত ইউপি সদস্যদের ডেকে নেয় উপজেলার ৩নং বন্ধুক ভাঙা ইউনিয়নের ভাঙামোড়া নামক স্থানে।
আর ইউপি সদস্যরা যখন ভাঙ্গামোড়া নামক স্থানে পৌছে তখনি ৩০জনের একটি সশস্ত্র দল গুলির মুখে ওই ইউপি সদস্যদের ইঞ্জিনচালিত বোটে করে উপজেলার ত্রিপুরাছড়া নামক স্থানের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক পার্টির এ নেতা জানান। এসময় ওই সশস্ত্র দলে ইউপিপিএফ’র এরিয়া কমান্ডার অটল চাকমা এবং ইউপিডিএফ বিচার বিভাগের প্রধান উদয় শংকর চাকমা ছিলো বলে তিনি অভিযোগ করেন। এদিকে এ বিষয়ে জানতে নানিয়ারচর সদর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান ও নব্য মুখোশ বাহিনী প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক জ্যোতিলাল চাকমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ঘটনার সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান।
এ ব্যাপারে জানতে নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ জানান, আমি উপজেলার বাইরে আছি। ঘটনাটি এমাত্র শুনলাম, এ বিষয়ে আমার অফিসারদের সাথে কথা বলবো।



 

Show all comments
  • Ruhul Amin Musaeid ২২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১১:১২ এএম says : 0
    ভয়ংকর সংবাদ। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ জরুরী মনে করছি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ