Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

উপজাতীয় এলাকা মূলধারায় এনে পাকিস্তান পার্লামেন্টে যুগান্তকারী সংশোধনী পাস

আল জাজিরা | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

পাকিস্তানের পার্লামেন্টে দেশের উত্তর পশ্চিম অঞ্চলের উপজাতীয় এলাকাগুলোতে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও মানবাধিকার সম্প্রসারিত করে সাংবিধানিক সংস্কারের এক যুগান্তকারী সংশোধনী পাশ করা হয়েছে। অচিরেই বিলটি আইনে পরিণত হবে। এ সব এলাকা ব্রিটিশ আমল থেকে কেন্দ্রের শাসনের বাইরে ছিল। পাকিস্তান আমলে এলাকাগুলো শাসিত হত একজন পলিটিক্যাল এজেন্টের (পিএ) মাধ্যমে। আফগান সীমান্তে অবস্থিত এ এলাকাগুলো দীর্ঘদিন ধরে ছিল সশস্ত্র গ্রæপগুলোর অভয়াশ্রম।
বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে পার্লামেন্টে এ সাংবিধানিক সংস্কার অনুমোদন করা হয়। এতে কেন্দ্র শাসিত উপজাতীয় এলাকাগুলোকে (এফএটিএ) খায়বার পাখতুনখোয়া (কেপি) প্রদেশের অঙ্গীভ‚ত করা হয়েছে। এর ফলে এখন আর সকল একাই দেশের মূলধারার আওতায় এল, উপজাতীয় এলাকা বলে আলাদা কিছু থাকল না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২২৯-১ ভোটে পাকিন্তান পার্লামেন্টে সাংবিধানিক সংস্কারের এ আইন অনুমোদিত হওয়ায় ঔপনিবেশিক আমল থেকে প্রচলিত বহু দশকের কঠোর আইনের বিলুপ্তি ঘটল। এ সব এলাকার ৫০ লাখ মানুষ পাকিস্তানের আর সব মানুষের মত সরকারী সেবা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পুলিশি ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে সমানাধিকার পাবে।
এ সংশোধনীটি আইনে পরিণত হওয়ার আগে পাকিস্তান পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ ও কেপি প্রাদেশিক পার্লামেন্টে পেশ করা হবে। দু’টি স্থানেই সহজেই সংশোধনীটি পাশ হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিল পাশ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসী বলেন, এ বিষয়ে আমাদের জাতীয় ঐকমত্য দরকার ছিল এবং তা অিির্জত হয়েছে। তিনি বলেন, এ বিলের মাধ্যমে এফএটিএ-র জনগণ পাকিস্তানের একই স্কুল, একই কলেজ, একই বিশ^বিদ্যালয়, একই হাসপাতাল, একই সড়ক ও সকল বিদ্যমান ব্যবস্থার অংশীদার হল। প্রাদেশিক ও জাতীয় পার্লামেন্টেও তারা প্রতিনিধি পাঠাতে পারবে।
এক সময় পাকিস্তান তালিবানের সদর দফতর ও আল কায়েদার অভয়াশ্রম এফএটিএতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ২০০৮ সাল থেকে নির্মূল অভিযান চালাতে শুরু করে। সর্বশেষ ২০০৪ সালে উত্তর ওয়াজিরিস্তান থেকে তালিবানকে বিতাড়িত করা হয়।
পাকিস্তানের উপজাতীয় এলাকাগুলো ৭টি জেলায় বিভক্ত। প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিযুক্ত পলিটিক্যাল এজেন্টরা এফএটিএ শাসন করতেন। তারা শাসন পরিচালনা ও বিচারের দায়িত্বও পালন করতেন।
সাংবিধানিক এ সংস্কারের ফলে ব্রিটিশ আমলের কঠোর আইন ফ্রন্টিয়ার ক্রাইমস রেগুলেশন (এফসিআর) আইন কার্যকর ভাবে বিলুপ্ত হয়েছে। এ আইনের কারণে উপজাতীয় এলাকাগুলোতে কোনো আদালত চালু করা হযনি। কেউ অপরাধ করলে যৌথ শাস্তির শিকার হত।
বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে ভোটের সময় পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সংােধনী প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। শুধু জমিয়াত উলেমায়ে ইসলাম (এফ) (জেইউএফ) বিপক্ষে ভোট দেয়। পিপিপি নেতা নাভিদ কামার বলেন, এ সংসদ যে ষে পর্যন্ত ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার অবসান ঘটাল সে জন্য ধন্যবাদ। সারাদেশ এখন এখন একই অধিকার ও একই প্রশাসনের আওতায় শাসিত হবে।
এ বিল পাশের পাশাপাশি সরকার যোগাযোগ, বিদ্যুত লাইন, পানি সরবরাহ কর্মসূচি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুবিধাসহ অবকাঠামো পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণে ১০ বছর মেয়াদী ৮৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার প্যাকেজ পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে।
ইউএনডিপির মতে, পাকিস্তানের উপজাতীয় এলাকাগুলোতে মানব উন্নয়ন সূচক সর্বাপেক্ষা নিম্নে। দেশের মূলধারা থেকে এসব এলাকা বিচ্ছিন্ন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ