Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে : ওবায়দুল কাদের

বিজয় দিবসে আওয়ামী লীগের বিজয় র‌্যালি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সা¤প্রদায়িক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত করার শপথ নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের ৪৬ বছর পূর্তিতে বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রঙ লাল সবুজে তৈরি পোশাক গায়ে, আর হাতে জাতীয় পতাকা-বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রায় এই সাজে দেখা যায় লাখো মানুষকে।
গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্বপাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মূল গেটের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে এসে শেষ হয়। বিকাল সাড়ে ৩টায় র‌্যালী শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুরের পরপরই নেতাকর্মীরা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটউটের ফটকের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন। বিজয় উদযাপনের এই শোভাযাত্রায় জাতীয় ও দলীয় পতাকার পাশাপাশি হাতি, ঘোড়ার গাড়ি ও দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কেউ কেউ আসেন মুক্তিযোদ্ধার সাজে।
শোভাযাত্রার আগে ট্রাকের ওপর নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচনে আমাদের প্রতিপক্ষ কারা? আমাদের প্রতিপক্ষ বিএনপির নেতৃত্বে জয় বাংলা বিরোধী সা¤প্রদায়িক শক্তি। জয় বাংলা বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সা¤প্রদায়িকশক্তি বিএনপির সঙ্গে লড়াইয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী শক্তি বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও বিজয়ী হবো। বিজয়ের পতাকা উড্ডীন হবে সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, কুতুবদিয়া থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত বাংলাদেশে। কাদের বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি ‘জয়বাংলা’কে যারা অস্বীকার করে, ধারণ করে না এবং উচ্চারণ করে না, তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করে না। সবাই এক শ্লোগানে ঐক্যবদ্ধ। আজকে জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হবো। আবার ঐক্যবদ্ধ হবো।
দলটির সভাপতিমÐলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, সারা দেশে সরকারের পক্ষে গণজাগরণ ও গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ দুই মেয়াদে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ছাড়া সম্ভব হবে না, তা দেশের প্রতিটি মানুষই জানে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতি কাতারবন্ধি হয়ে শপথ নিন, অগ্নী সন্ত্রাস, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসকে মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।
মঞ্চে আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্যে সা¤প্রদায়িক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহŸান জানান।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়্মাী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।
সমাবেশের পরে বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে ওবায়দুল কাদের জয় বাংলা এবং নৌকা ¯েøাগানের মধ্য দিয়ে বেলুন উড়িয়ে র‌্যালির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বিজয় র‌্যালি শাহবাগ, কাঁটাবন, বাটা সিগনাল মোড়, এলিফ্যান্ট রোড, সাইন্স ল্যাবরেটরী, মিরপুর রোড হয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এতে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র, যুবক, নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন। অংশ গ্রহণকারীরা লাল সবুজের জাতীয় পতাকা খচিত টি শার্ট, শাড়ী, ক্যাপ পড়ে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে আসেন। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি শোভা পায়। ঘোড়ার গাড়ি ও দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কেউ কেউ আসেন মুক্তিযোদ্ধার সাজে। মাইক ও সাউন্ড বক্সে বাজানো হয় দেশের গান। অনেককেই এসময় গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলাতেও দেখা গেছে।
বিজয়র‌্যালীতে এমনই মানুষের ¯্রােত নেমেছিল যে, মিছিলের অগ্রভাগ যখন বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে পৌঁছায়, পশ্চাদভাগ তখনও শাহবাগ পার হতে পারেনি। প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই বিজয় র‌্যালিতে অংশ নেয়া সকল মানুষের কণ্ঠেই ছিল একই দাবি- ‘মুজিবের বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই, জামায়াত-শিবির-রাজাকার, এই মুহুর্তে বাংলা ছাড়।’ একই সঙ্গে বিজয় দিবসের এই শোভাযাত্রা নির্বাচনী শো-ডাউনের আমেজেও রূপ নেয়। ঢাকা মহানগর বিভিন্ন আসনের বর্তমান এমপি এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার বহন করতে দেখা যায় তাদের কর্মী সমর্থকদের।
এর আগে বিজয় দিবসের সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ নেতারা। সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ নেতারা।



 

Show all comments
  • মাহফুজ ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৩:৩৮ এএম says : 0
    বিষয়টি আমার কাছে উল্টো মনে হচ্ছে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ