পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার ব্যুরো : বিজয় দিবসের ছুটিতে দেশের পর্যটন রাজধানী নামে পরিচিত কক্সবাজার পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠেছে। সমুদ্র সৈকত, বিপণী কেন্দ্রসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের কোলাহলে প্রাণচাঞ্চল হয়ে ওঠেছে। রাস্তাঘাটে সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক যানজট। ইতোমধ্যে শহরের চার শতাধিক হোটেলের কোন কক্ষ আগাম বুক হয়ে গেছে। বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে বাড়ছে হয়রানিও।
হোটেল মালিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি ডিসেম্বর মাসের শেষ পক্ষকাল পর্যটকদের আনাগোনায় বেশ জমজমাট থাকবে কক্সবাজার। ইতোমধ্যে শহরের চার শতাধিক হোটেলের প্রায় সমস্ত কক্ষ ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর, ২৪ থেকে ২২ ডিসেম্বর ও ২৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আগাম বুকড হয়ে গেছে। এখন বাকী দিনগুলোরও চলছে বুকিং। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষে ছুটির দিনগুলোতে অবকাশ যাপনের জন্য দলে দলে হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন।
পর্যটকদের উপলক্ষ করে অনেকদিন পর চালু হয়েছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ পর্যটন রিসোর্ট সেন্টমার্টিনের চলাচলকারী জাহাজগুলোও। গতকাল দেখা গেছে, বিশ্বের বৃহত্তম এই সৈকতটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। যদিও এই ভিড়ে শীতকালীন পর্যটকদের স্বাভাবিক জোয়ারের একটা প্রভাব আছে। এবার শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটিতে হওয়ায় অনেকেই একদিন বাড়তি ছুটি নিয়ে টানা ৩ দিনের অবকাশে আছেন। এর প্রভাব চোখে পড়ল কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতেও।
জানা গেছে, প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে বিজয় দিবসের ছুটির মাধ্যমে নতুন বছরের প্রথম দশদিন পর্যটকের ভিড়ে ডুবে যায় কক্সবাজার। এবছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিপুল সংখ্যক পর্যটক ছুটে এসেছে পৃথিবীর দীর্ঘতম এই বীচে। সেন্টমার্টিনদ্বীপ, মহেশখালী, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়ানগর, সোনাদিয়া, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকা গুলো বিপুল পর্যটক সমাগমে নতুন প্রাণ ফিরে পায়। কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির ও রামুর বৌদ্ধ মন্দিরেও পর্যটক আনাগোনা প্রচুর।
হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে দুই শতাধিক হোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ পর্যটকে ভরে গেছে। আশাকরি এ অবস্থা কয়েকমাস বহাল থাকবে। এদিকে সেন্টমার্টিনগামী সবকটি পর্যটন জাহাজের আগামী চার দিনের টিকিট অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। পর্যটন জাহাজ এলসিটি কুতুবদিয়ার স্থানীয় ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আগামী ৩১ ডিসেম্বর (থার্টিফাস্ট নাইট) পর্যন্ত তাদের জাহাজে টিকিটের সংকট রয়েছে। এত দিন ভ্রমণপিপাসু লোকজন বের হতে পারেননি নানা কারণে। ঢাকা সাভার থেকে স্বস্ত্রীকট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টোয়াক বাংলাদেশ) সভাপতি রেজাউল করিম রেজা জানান, এ মাসের শুরু থেকে বেশ জমজমাট হয়ে ওঠেছে কক্সবাজার। হোটেল মোটেলে ঠাঁই নেই অবস্থা। সেন্টমার্টিনগামী জাহাজসমূহের টিকেটও আগাম বুকিং হয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা করেন এ মাসে কক্সবাজারে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন।
বেড়াতে আসা শাহিন বলেন, ‘গত দুই বছর আসা হয়নি। তাই এবার বিজয় দিবসের ছুটিটা কাজে লাগিয়ে দিলাম।’ বিজয় দিবসের ছুটিতে ভিড়ের মাঝে পর্যটকরা কক্সবাজারে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন সে জন্য সাদা পোশাকধারী পুলিশ ও বীচে ট্যুরিস্ট পুলিশ বেশ সক্রিয় রয়েছে বলে জানান কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে চার শতাধিক হোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ পর্যটকে ভরে গেছে। গেল তিনদিনে প্রায় দুই লাখ পর্যটক এসেছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাস ভরপুর থাকবে পর্যটক। শীত মৌসুমে কক্সবাজারে পর্যটকের আগমন বেশি ঘটে বলে তিনি জানান।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামে কক্সবাজার সৈকতে। গতকাল শুক্রবার ও শনিবার বিকালে সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্টে পর্যন্ত লাখ পর্যটকের উপস্থিতি দেখা মিলে। এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়া ছিনতাই, বখাটেদের উৎপাত ও ইভটিজিং প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।