Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর মহাসড়ক : দখল হয়ে যাচ্ছে ৮ লেন

নূরুল ইসলাম : | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত সড়কটি দেখলে মনেই হবে না এটি ৮ লেনের মহাসড়ক। দখল হতে হতে কোনো কোনো স্থানে এক লেন খালি আছে। সেটা দিয়েই ধীর গতিতে চলছে যানবাহন। যাত্রাবাড়ী থেকে রওনা দিলে কুতুবখালী অংশে রাস্তার বাম দিকে দুই লেন দখল করে রাখা আছে বড় বড় বাস ও মিনিবাস। রাতে বাম দিকের চার লেনের দুই লেন পুরোপুরি বাসের দখলে যায়। দিনে কিছু বাস সরানো হলেও এক লেন পুরোটাই দখল করে রাখে বিকল বাসগুলো। কুতুবখালীর পরে শনিরআখড়া অংশেও একই চিত্র। পূর্ব দিকে মহাসড়কের উপরে বসানো হয় ভ্রাম্যমান দোকান পাট। আর পশ্চিমে মহাসড়কের উপরেই বসানো হয়েছে স্থায়ী দোকান। সাথে বাস, টেম্পু ও সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড। শনিরআখড়া আন্ডার পাসের উপরে থেকে নীচ পর্যন্ত আট লেনের ৬ লেনই কার্যত বেদখল হয়ে গেছে। সে কারনে এই অংশ কোনো গাড়িই নির্ধারিত গতিতে চলতে পারে না। বরং এই অংশে দিনে-রাতে যানজট লেগে থাকে। শনিরআখড়ার মতো রায়েরবাগেও একইভাবে বেদখল হয়ে গেছে এক লেন করে। এছাড়া মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড এলাকায় মহাসড়কের দুপাশেই আগের মতোই অবৈধ দোকানপাট তোলা হয়েছে। গত বছরের ১৩ আগস্ট ৮ লেনের এই মহাসড়কটি উদ্বোধনের আগে উভয় পাশের সব ধরণের দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ৮ লেন মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ২ কিলোমিটার। এটি একদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়কের সাথে যুক্ত হয়েছে। অন্যদিকে, যুক্ত হয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাথে। এ কারণে মহাসড়কটি রাজধানীর সাথে দেশের ১৮টি জেলার যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সড়কটি। আট লেনের মহাসড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা সিলেট মহাসড়কে প্রবেশ-বহির্গমনের প্রধান করিডোর।
সওজ সূত্রে জানা গছে, ২০১১ সালে চার লেন থেকে আট লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর ৭ দশমিক ২ কিলোমিটার দুরত্বের আট লেনের এই মহাসড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৩২ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৮ লেনের সড়কটির সুফল পেতে রাস্তার দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা, পার্কিং ও দোকানপাটমুক্ত রাখা জরুরী ছিল। পাশাপাশি বিভিন্ন মোড়ে ওভারব্রিজ বা ওভারপাস নির্মাণ করা উচিত ছিল। গত বছরের ১৩ আগস্ট উদ্বোধনের আগেও মহাসড়কের দুপাশ থেকে বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। যেগুলোর সিংহভাগই ছিল সরকার দলীয়দের। কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার আগের সেই চিত্র ফিরে এসেছে। গতকাল শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্থানে একদিকের চার লেনের মধ্যে দুই লেন দখল করে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়েছে। আবার কোনো কোনো স্থানে এক লেনে গাড়ির স্থায়ী পার্কিং বানানো হয়েছে। যা উদ্বোধনের আগেও ছিল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড এলাকায় মহাসড়কের দুপাশেই আগের মতোই অবৈধ দোকানপাট তোলা হয়েছে। শনিরআখড়ায় মহাসড়কের দুই দিকেই আবার আগের মতোই দোকান পাট বসানো হয়েছে। এর সাথে ট্যাক্সক্যাব, সিএনজি অটোরিকশা ও টেম্পু স্ট্যান্ডতো আছেই। মহাসড়কের উপর নির্মিত এক দোকানের মালিক জানান, স্থানীয় নেতাদেরকে মাসিক ও সপ্তাহভিত্তিক চাঁদা দিয়ে তারা দোকানদারি করছেন। মহসড়কের উপর শনিরআখড়াতেই আছে ৩০টির বেশি দোকান।
আলাপকালে দুরপাল্লার বাস চালকরা জানান, ৮ লেনের কারণে যে সুবিধা তারা পাবেন বলে ভেবেছিলেন তা তারা পাচ্ছেন না। মহাসড়কের উপর দোকান-পাট, বাস ও সিএনজি স্ট্যান্ডের কারনে কোনো গাড়িই নির্ধারিত গতিতে চলতে পারে না। আবার মহাসড়কের উল্টোদিকে রিকশা ও ভ্যান চলে হরদম। শুধু তাই নয়, শনিরআখড়া থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত উল্টোপথে বাস, ট্রাকও চলে। নোয়াখালী রুটের বাস চালক মেহেদী আজাদ বলেন, শুধু ৮ লেন নয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বহু জায়গায় অবৈধ স্থাপনা বসেছে প্রশাসনের সামনেই। সারা মহাসড়কেই এমন দৃশ্য দেখা যায়। চার লেন বা ৮ লেন যাই করা হোক না কেন মহাসড়ককে দখলমুক্ত না রাখা গেলে লাভ হবে না। কক্সবাজার রুটের চালক হোসেন আলী বলেন, ৮ লেন দখলদারমুক্ত রাখা দরকার। দিনে দিনে সবগুলো লেনই বেদখল হয়ে যাচ্ছে। অথচ পুলিশ চাইলে ৮ লেনই দখলমুক্ত রাখতে পারে। যেমনটা ছিল উদ্বোধনের দিনে।



 

Show all comments
  • আমিনুল ইসলাম ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৩:৩৪ এএম says : 0
    পুলিশ চাইলে ৮ লেনই দখলমুক্ত রাখতে পারে। এটা তাদের ব্যর্থতা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ