প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার : গত বছরের শেষ দিকে ধারাবাহিকভাবে অর্ধ ডজন সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন চলচ্চিত্রের মুভি লর্ড খ্যাত ডিপজল। সব ধরনের প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত কিছু ব্যস্ততার কারণে যথাসময়ে সিনেমার কাজ শুরু করতে পারেননি। এবার ব্যস্ততা কাটিয়ে সেই সিনেমাগুলোর কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। আগামী মে-জুনের দিকে সিনেমাগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু করবেন বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে ডিপজলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সিনেমা আমি করবই। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ সিনেমা আমার রক্তের সাথে মিশে আছে। রক্তের সাথে যে জিনিস মিশে থাকে তা কি ছাড়া যায়? যায় না। আপনারা জানেন, আমি যখন সিনেমা নির্মাণের প্রস্তুতি নেই, তখন সবকিছু গুছিয়ে নির্মাণ কাজে হাত দেই। হুট করে ঘোষণা দিয়ে নেমে পড়ি না। আমি মনে করি, সিনেমা একটি সমন্বিত শৈল্পিক কাজ। এর কোথাও ঘাটতি থাকলে তা পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করে না। এটি একটি টিমওয়ার্ক। এ পর্যন্ত যতগুলো সিনেমা নির্মাণ করেছি, চলচ্চিত্রের সবাই জানেন, আমি কীভাবে সিনেমা নির্মাণ করি। সিনেমা নির্মাণ একটি দীর্ঘ যাত্রাপথ। এ যাত্রাপথে যদি কোনো কিছুর ত্রæটি বা তাড়াহুড়ো থাকে, তবে যাত্রা শুভ হয় না। এর চেয়ে দেরি করা ভাল। গন্তব্যস্থলে পৌঁছার আগে যদি সবকিছু প্রস্তুত থাকে তাহলে কোথাও থামতে হয় না। স্মুথলি গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাওয়া যায়। আমি এ ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই যাত্রা শুরু করি। যদি মনে হয়, কোথাও একটু খুঁত থেকে গেছে, তাহলে যাত্রা শুরু করি না। যাত্রা শুরু করে মাঝপথে থেমে যাওয়া আমার পছন্দ নয়। এটা করাও উচিত নয়। যাত্রা যদি করতে হয়, তবে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই শুরু করা উচিত। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য। তিনি বলেন, ইদানিং চলচ্চিত্রে একটা ট্র্যাডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছে, অনেকে একের পর এক সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দেন। মহরত করেন এবং কিছু শূটিংও করেন, কিছুদিন পর আর তার খবর থাকে না। আবার কিছু সিনেমা নির্মিত হলেও, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকার কারণে সেগুলো সম্পন্ন হলেও সিনেমা হয়ে ওঠে না। অনেকটা বিকলঙ্গ শিশুর মতো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের সিনেমা নির্মিত হচ্ছে বলেই দর্শক তা দেখছে না। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এখন এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, কোন দিক দিয়ে সিনেমা নির্মিত হচ্ছে, আর কখন মুক্তি পাচ্ছে, এ খবরটিও দর্শক জানে না। চলচ্চিত্রের জন্য এটা খুবই খারাপ। অথচ আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের ধারাটাই হচ্ছে, একটি সিনেমা নির্মাণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শক খোঁজখবর রাখেন। এটি কবে শুরু হয়েছে, নির্মাণের কতটুকু বাকি রয়েছে, কবে মুক্তি পাবেÑ এসবই দর্শকের জানা থাকত। এখন এ বিষয়টি নেই বললেই চলে। ফলে সিনেমা মুক্তি পেলেও দর্শকের কোনো আগ্রহ দেখা যায় না। আমাদের চলচ্চিত্রের মূল সঙ্কটটা এখানেই। দর্শকের মনের মতো সিনেমা হচ্ছে না বলেই তারা সিনেমা দেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আমি বিশ্বাস করি, সিনেমার প্রতি আমাদের দেশের দর্শকের আগ্রহ সব সময়ই রয়েছে। দেখার মতো সিনেমা পাচ্ছেন না বলেই ব্যাপক সংখ্যক দর্শক হলমুখী হচ্ছেন না। আমার নিজের সিনেমা হল দিয়েই তো বুঝি দর্শক কী ধরনের সিনেমা দেখতে চান। তবে এ কথা মানতে হবে, এখন সিনেমায় প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে। নতুন নতুন কনসেপ্টও প্রয়োগ করা হচ্ছে। আমার কথা হচ্ছে, শুধু প্রযুক্তি যুক্ত করলেই তো হবে না, সিনেমার যে মূল হৃদপিÐ গল্প, তা তো থাকতে হবে। গল্পের ভিতই যদি না থাকে, তাহলে দর্শক কেন সিনেমা দেখবে। দু’য়েকটা মারামারি আর কিছু গান দেখতে, সিনেমা হলে তাদের যাওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না। সমস্যা হচ্ছে, আমাদের অনেক নির্মাতাই সিনেমার হৃদপিÐটিকে সঠিকভাবে পরিচর্যা না করে এর বাইরের বিষয়গুলোর দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এতে কখনোই সুস্থ ও পরিপূর্ণ সিনেমা হতে পারে না। আমার কথা হচ্ছে, সময় ও প্রযুক্তির সাথে তাল মেলাতে হবে। তবে মূল জিনিস গল্প ঠিক থাকতে হবে। যাতে গল্পের টানে দর্শক ছুটে যায়। আপনার পরবর্তী সিনেমাগুলো কেমন হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিপজল বলেন, এটা আমার দর্শক জানেন যে, আমার সিনেমার প্রাণ হচ্ছে গল্প এবং গল্পের মধ্যে চমক। আমি সব সময়ই গল্পের ওপর জোর দিয়েছি। এখনও যে সিনেমাগুলো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি, সেগুলোর গল্প তৈরি করতে আমার দীর্ঘ সময় লেগেছে। একবার লেখা হয়ে গেলেও, কোনো জায়গায় পরিবর্তন করার জন্য পুনরায় লেখা হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে ঘঁষামাজা করা হয়েছে। এভাবে একটি গল্প তৈরি করেছি। কারণ আমি আমার দীর্ঘ চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার থেকে অভিজ্ঞতা হয়েছে, যে চলচ্চিত্রের গল্প দুর্বল, তা কখনোই দর্শক গ্রহণ করেনি। এই যে আমাদের চলচ্চিত্রের সোনালী যুগের কথা বলা হয়, এর কারণ কি? কেন সে সময়ের সিনেমা দর্শক বিপুল আগ্রহে দেখেছে? এর একটাই কারণ সে সময়ের সিনেমার মূল কারণই হচ্ছে গল্প। তাছাড়া আমি যেসব সিনেমায় অভিনয় করেছি, সেগুলো এখন অনেক টেলিভিশনে প্রচার করা হচ্ছে। আমি দেখেছি, আমার দর্শক এখনও আমার সিনেমাগুলো প্রবল আগ্রহ নিয়ে দেখছে। এর কারণই হচ্ছে, যেসব সিনেমা করেছি, সেগুলো ছিল গল্প নির্ভর এবং দর্শকের মনের মতো। তিনি বলেন, ভবিষ্যতেও যে সিনেমা নির্মাণ করব, সেগুলোও হবে গল্প নির্ভর। এর পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন তো থাকবেই। আমার কথা হচ্ছে, প্রযুক্তি সংযোজন করতে হবে, তবে তা যথাযথ হতে হবে। গল্প ছাড়া শুধু প্রযুক্তি যুক্ত করলে তো হবে না। দর্শক তো শুধু প্রযুক্তি দেখতে চায় না। তারা আগে দেখতে চায় গল্প তারপর প্রযুক্তি। প্রযুক্তি সিনেমার একটি অংশমাত্র। আমার সিনেমায়ও প্রযুক্তি থাকবে তবে তা হবে গল্প নির্ভর প্রযুক্তি। আপনারা জানেন, ইতোমধ্যে আমি সাভারে একটি পূর্ণাঙ্গ ফিল্মসিটি গড়ে তুলেছি। এতে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংযোজন করা হয়েছে। এডিটিং প্যানেল থেকে শুরু করে লেটেস্ট টেকনোলজির ক্যামেরা যুক্ত করেছি। এই ফিল্মসিটি থেকে নির্মাতারা একটি পূর্ণাঙ্গ সিনেমা নির্মাণ করে বেরিয়ে যেতে পারবেন। নতুন সিনেমা নির্মাণ প্রসঙ্গে ডিপজল বলেন, বেশ কয়েকজন গুণী পরিচালককে সিনেমাগুলো নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হবে, যারা আমার ও দর্শকের মনের মতো করে সিনেমাগুলো নির্মাণ করতে পারবেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন পরিচালককে সিনেমাগুলো নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এগুলোতে আমার অভিনয়ের পাশাপাশি নতুন ও জনপ্রিয় অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীকে দেখা যাবে। তবে এ কথা ঠিক, সিনেমা আমি নির্মাণ করবই। দর্শককে হলমুখী করতে আমাকে সিনেমা নির্মাণ করতেই হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।