Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাগমারায় পুকুরের মাছে অজ্ঞাত রোগের প্রাদুর্ভাব, চাষিরা দুশ্চিন্তায়

প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বাগমারা (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা

রাজশাহীর বাগমারায় দিঘী, ডোবা ও পুকুরে চাষকৃত মাছে অজ্ঞাত রোগের প্রাদুর্ভাবে মৎস্য চাষিরা দুশ্চিতায় পড়েছেন। দুই-তিন সপ্তাহ ধরে এই রোগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মৎস্য চাষিদের মাছের মধ্যে মৃগাল, কাতলা, বাটা, সারল পুঁঠির মাছ মরে পুকুর সাবাড় হয়ে পড়ছে। মৎস্য চাষিদের অভিযোগ, উপজেলা পর্যায়ে মৎস্য অফিসের তেমন তৎপরতা না থাকায় এ রোগ দ্রুত প্রসার ঘটছে। স্থানীয়ভাবে কোনো চিকিৎসা দিয়ে মাছ রক্ষা করতে না পেরে মৎস্য চাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুই পৌর এলাকার ৫৯৯৮টি জলাশয়, সরকারিভাবে ৬৭০টি পুকুর/জলাশয়ে এবং চারটি বিলে মাছের চাষ করা হয়। ৬৪২৩.৩৫ মেট্রিক টন মাছের চাহিদা থাকলেও বাৎসরিক উৎপাদন হচ্ছে ৬৯৩৩.৯৭ মেট্রিক টন মাছ। এ মাছ এলাকায় চাহিদা শেষে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জোগান দেয়। বর্তমানে মাছের চাষ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদার অতিরিক্ত মাছ উৎপন্ন হচ্ছে উপজেলায়। মাছ চাষে আরো বেশি লাভের আশায় এলাকার মৎস্য চাষিরা বাজারের বিভিন্ন ভ্যারাইটিস ফিড ক্রয় করে পুকুরে প্রয়োগ করে। এতে করে মাছের বাড়তি ক্ষমতা বাড়লেও দেখা দিয়েছে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এই ধারাবাহিকতায় এলাকার মৎস্য চাষিরা বেশি বেশি ভ্যারাইটিস ফিস ফিড ব্যবহারে মাছের গায়ে ভাইরাস সৃষ্টি হওয়ায় অজ্ঞাত রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। বালানগর, মহম্মাদপুর, দেউলিয়া, বিহানালী, সাঁইপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মৎস্য চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পূর্বে দিঘী বা পুকুরে মাছের জন্য তেমন খাবার দেয়ার প্রয়োজন হতো না। তবে খাদ্যের পরিমাণ বাড়াতে মাছ চাষে খইল ব্যবহার করা হয়। দেশে মাছের চাহিদা বাড়াতে, তাড়াতাড়ি মাছ বড় করতে মৎস্য চাষিরা বাজারের হরক রকম ফিস ফিড ক্রয় করে মৎস্য ক্ষেতে প্রয়োগ করছে। এলাকায় মাছ চাষে সরকারিভাবে কোনো তৎপরতা না থাকায় মাছ চাষিদের চাষে ব্যবহার জ্ঞানের স্বল্পতা রয়েছে। এতে করেই মাছের রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় অভিজ্ঞমহল। গোপালপুর গ্রামের মাছচাষি ইসহাক জানান, ১৫-২০ দিন ধরে পুকুরের মাছ অজ্ঞাত কারণে মরে ভেসে উঠছে। মাছের শরীরে কোনো রকম ঘা নেই। এই মাছের মরার কারণ অনুসন্ধান করে কোনো ফল হয়নি। যেসব পুকুরে ফিডের বেশি ব্যবহার তাতে মরার বেশি প্রভাব পড়েছে। বালানগর গ্রামের মৎস্যচাষি আকবার আলী, মোফাজ্জল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন মৎস্যচাষি জানান, দুই সপ্তাহ ধরে পুকুরের দুই-চারটি মাছ মরে ভাসতে দেখে স্থানীয় কীটনাশকের পরামর্শে পুকুরে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করে। এতে কোনো ফল হয়নি। ক্রমে আরো বেশি মাছ মরায় তারা বেকায়দায় পড়েছেন। মাছের অকাল মৃত্যুতে তারা মৃগাল, কাতলা, সারল পুঁঠির মাছ মেরে কম দামে বিক্রি করে লোকসানের মুখে রয়েছেন। এ ছাড়া অন্য প্রজাতির মাছ নিয়ে তারা শঙ্কায় রয়েছেন। নন্দনপুর গ্রামের মৎস্যচাষি বাবুল হোসেন জানান, অধিকাংশ মাছচাষি তাড়াতাড়ি লাভের আশায় পুকুরে বাজারের হরেক রকম ফিস ফিড ব্যবহার করে। আমি মাছ চাষে তেমন ফিড ব্যবহার করি না, এতে আমার মাছের তেমন ক্ষতি হয়নি। আমার পার্শ্ববর্তী পুকুরে প্রতি দিন মাছ মরে ভসে উঠছে। তবে মাছের এ অবস্থায় আমিও চিন্তিত রয়েছি। বাজারে মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমতি রয়েছে। এখন মাছ বিক্রি করলে ক্ষতির সম্মুখীনে পড়বেন বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাগমারায় পুকুরের মাছে অজ্ঞাত রোগের প্রাদুর্ভাব
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ