Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ উইনেবল ক্যান্ডিডেট দেবে

ইডেনের ছাত্রী আঁখি মনির স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এলেন ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইডেন কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী আঁখি মনির স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। আর ক’দিন পরেই নিজ পায়ে ভর দিয়ে হাটতে পারবে সে।
দু’পায়ে ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেয়া আঁখি মনির বিশটি বছর কেটেছে দুঃসহ যন্ত্রণায়। পা দু’টি বাঁকা হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারতো না সে। দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার ভার বহনের সামর্থ্য ছিল না টাঙ্গাইলের সখীপুরের অসচ্ছল পরিবারটির। আঁখি মনির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। প্রায় দেড়বছর ধরে তার চিকিৎসা চলছে। এর আগে একটি পায়ের অপারেশন হলেও অন্য পায়ের অপারেশন পরবর্তী অগ্রগতি দেখতে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পঙ্গু হাসপাতালে আঁখির শয্যাপাশে হাজির হন মন্ত্রী।
আঁখির মা সালমা আক্তার জানান, জন্মত্রুটি নিয়ে আঁখির জন্ম। কিন্তু অদম্য প্রাণশক্তি নিয়ে পড়ালেখায় বরাবরই ভালো করেছে সে। ভর্তি হয় ইডেন কলেজে। কিন্তু স্বাভাবিক চলাফেরা সে করতে পারতো না। পা দু’টি বাঁকা হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাকে। চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ায় মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
অবশেষে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারার স্বপ্ন বাস্তব হতে যাচ্ছে আঁখির। হাসপাতালের শয্যায় আবেগ আপ্লুত আঁখি পড়ালেখা শেষ করার অদম্য ইচ্ছা প্রকাশ করে। এসময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী তার পড়ালেখারও দায়িত্ব নেন।
পঙ্গু হাসপাতালে আঁখি মনিকে দেখে বের হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনের ট্রেন বিএনপির জন্য থেমে থাকবে না। তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে বিএনপির প্রস্তুতি নেই। এজন্য তারা বিভিন্ন কথা বলছে। ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু একটা আদায় করা যায় কিনা এটা দেখার জন্যই বিএনপি নানা কথা বলছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর গত সোমবারের বক্তব্যের সমালোচনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, উনাকে (প্রয়াত আনিসুল হক) কেবল সমাহিত করা হয়েছে। এটা আমি মনে করি যে, এই মুহুর্তে তার লাশ দাফনের সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন...কে কি করবেন- এটা আমি খুব একটা শোভন মনে করছি না।
উত্তর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাছাই করেছে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমরা উইনেবল ক্যান্ডিডেট দেব।
কাদের বলেন, তারা (বিএনপি নেতারা) আসলে কখন যে কি বলে এটা কেবল তারাই জানে, কেউ বলে যে কোন পরিস্থিতিতে তারা নির্বাচনে যাবে, আবার বেগম জিয়ার যদি সাজা হয় তবে, নির্বাচনে যাবে না। এমন কথাও তাদের কোন কোন নেতা বলে থাকে। আমার প্রশ্ন, জনগনের প্রশ্ন, কোন কথাটা সঠিক? যেকোন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাবে না বেগম জিয়ার সাজা হলে যাবে না।
তিনি বলেন, সাজা হলে তো আদালত দিবে। আর এই মামলা তো ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন সরকারের সময়। এই মামলা করার সঙ্গে তো আমাদের কোন সম্পর্ক নেই, এই সরকারের কোন সম্পর্ক নেই। তিনি বারবার টাইম নিচ্ছেন, একশত ৫০ বারের বেশি টাইম নিয়েছেন। তারপর তিনি আট মাসেরও বেশি সময় বিচার কার্য অফ রেখেছেন এবং এটা চলছে, কোর্টে গিয়ে বারবার রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন। ঠিক আছে এটা আদালত যদি তাকে সুযোগ দেয় আমাদের কিছু বলার নেই।
কাদের বলেন, আমাদের বক্তব্য হচ্ছে খালেদা জিয়ার সাজা হবে কি হবে না, এ্টা আমাদের কোন ব্যাপার নয়। এটা আমাদের সরকারের কোন ব্যাপার নয়। এটা আদালতের বিষয়। আদালত সাজা দেবে কি দেবে না, এটা তাদের ব্যাপার। এখানে সাজা হলে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন, এর পরে রিভিউ আছে। তিনি বলেন, নির্বাচন তো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, নির্বাচন তারাও (বিএনপি) চান আমরাও চাই। প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন একটা নির্বাচন আমরা করতে চাই না। যেটা ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারীতেও আমরা চাইনি। আজকে এটা শুনতে হয় যে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় এত জন, এটাতো আমরা চাইনি। যেহেতু বিএনপি নির্বাচনে আসেনি, সেজন্য সেখানে অন্য কোন প্রার্থী না থাকায় নির্বাচন কমিশন তাদেরকে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় নির্বাচিত ঘোষনা করেছে। এটা নিয়ম আইন অনুযায়ী সঠিক, এটাতো আমরা ইচ্ছে করে করিনি।
কাদের বলেন, বেগম জিয়াকে আমাদের নেত্রী গণভবনে পর্যন্ত ডিনারে আমন্ত্রন করেছিলেন, তিনি আসেননি। তিনি হাতের লক্ষী পায়ে ঠেলে দিয়েছেন। এটা তার দোষ। আর তিনি নির্বাচনে না আসলে নির্বাচনের ট্রেন তো বন্ধ থাকবে না। গণতন্ত্রও থেমে থাকবে না। এতে গণতন্ত্রের কি দোষ। তিনি বলেন, এবারও আমরা বলছি, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে এটা আমরা জানি। তারা এটা-সেটা বলছে নানা কারনে, কিন্তু আরও কিছু আদায় করা যায় কিনা, সেজন্য হয়তো বলছে। তারা নির্বাচনে আসবে, তারা আসুক এটাতে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ নির্বাচনটা প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ হোক এটা আমরা চাই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে নির্বাচন শুরু করে দেয়ার জন্য উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো তোড়জোড় নেই। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী কেউ অযোগ্য ঘোষণা হলে বা কেউ মারা গেলে সে অবস্থায় তার আসন শুন্য ঘোষণা করতে হয়। এটার একটি নিয়ম-নীতি আছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ম অনুযায়ী আসন শুন্য ঘোষণা করেছে, এখানে আওয়ামী লীগ বা সরকার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করছে না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এখানে সরকারের কিছু নেই। সরকারের এত তাড়াহুড়া করার দরকার নেই। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী সব চলবে।
আওয়ামী লীগ প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন নির্বাচন চায় না দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। নির্বাচন আওয়ামী লীগও চায়, বিএনপিও চায়। প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন নির্বাচন আওয়ামী লীগ করতে চায় না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতেও আওয়ামী লীগ চায়নি। তিনি বলেন, নির্বাচনের ট্রেন এবারও বিএনপির জন্য থেমে থাকবে না।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ প্রত্যাবতনই চাইছে। আওয়ামী লীগ প্রত্যাবর্তন চেয়েছে, প্রত্যাবর্তনের তো একটা প্রক্রিয়া আছে। এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। উখিয়া টেকনাফের জনসংখ্যা হলো সাড়ে চার লাখ। সেখানে নতুন করে আরও সাত লাখেরও বেশি মিয়ানমারের জনগণ এসেছে। সাত লাখেরও বেশি এবং আগের তিন লাখ মোট সাড়ে দল লাখেরও বেশি। তিনি বলেন, আমাদের সাড়ে চারলাখ লোক এখন উদ্ভিগ্ন, আতঙ্কিত। আমাদের পরিবেশ আজ হুমকির মুখে। আমাদের প্রকৃতি আজকে হুমকির মুখে। আমরা ভারসাম্য চাই। আর এই ছোট্ট জায়গায় এতগুলো লোকের পূনর্বাসন এবং তাবুতে তাদের রাখা হয়েছে। ওখানে কিন্তু মানুষ ধৈর্যহারা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখনও রোহিঙ্গারা আসছে। এ অবস্থায় প্রক্রিয়াটা বিলম্বিত হতে পারে। আমরা এই লোক গুলোকে যদি স্থানান্তরিত না করি তাহলে ওখানে স্থানীয়ভাবে আমরা সব দিক থেকে বিশেষ করে অর্থনৈতিক ভাবে প্রচন্ড চাপের সম্মুখীন। জয়েন্ট প্রক্রিয়ায় যতদ্রুত সম্ভব প্রত্যাবর্তন করা হবে। প্রত্যাবর্তনের বিষয়টা যতেই বিলম্বিত হচ্ছে স্থানীয় জনগন ততই ধৈর্য হারা হচ্ছে। জনগণ আর ধৈর্য ধরতে পারছে না। তাদের টলারেবল লেভেল অতিক্রম করে যাচ্ছে। সে কারণে আমরা বিকল্প কিছু কিছু ব্যবস্থা করে রাখছি। ###



 

Show all comments
  • কমল ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:১৭ এএম says : 0
    সবাই তো সেটাই করবে
    Total Reply(0) Reply
  • রশিদ ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:১৮ এএম says : 0
    উইনেবল প্রার্থী দিয়ে সুস্ঠ নির্বাচন দিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ