পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুর্নীতির এক মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকালে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। রিজভী বলেন, সরকারের নীলনকশার অংশ হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সরকারের বন্য আক্রোশের কারসাজিতে এই গ্রেফতারি আদেশ জারি হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমরা এহেন আদেশ জারির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বামদলগুলোর হরতাল থাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হতে পারবেন না। বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে হাজির হয়ে সময়ও চেয়েছিলেন। এমনকি হরতাল শেষ হওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়া আদালতে আসতে চান বলে আইনজীবীরা আদালতে আবেদন করলেও তা নাকচ করে দিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। যা ন্যায় বিচারের পরিপন্থী ও ন্যাক্কারজনক। এই ঘটনা সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার প্রধানের পাশবিক জিঘাংসার প্রতিফলন এটি। জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে হিংসাপরায়ণ সরকারের বিভীষিকাময় আস্ফালন। এ আদালতে বেগম খালেদা জিয়া যে ন্যায় বিচার পাবেন না, এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর তা আরও পরিস্কার হলো। যেখানে প্রধান বিচারপতির নিরাপত্তা নেই, যেখানে জোর করে অসুস্থতার মিথ্যা কথা বলে ছুটিতে পাঠিয়ে দেশত্যাগে তাঁকে বাধ্য করা হয়, তারপর বিদেশে প্রধান বিচারপতির নিকট সরকারের লোকেরা গিয়ে হুমকি দিয়ে তাঁকে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়, সেখানে বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রধান কিভাবে ন্যায় বিচার পাবেন? যেখানে প্রতিহিংসার বিষ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অন্তরে অম্লান থাকে, সেখানে জনগণের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের মুক্তি কঠিন হয়ে পড়ে। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি সরকারের নিষ্ঠুর ও বন্য আক্রোশেরই বহিঃপ্রকাশ। সরকারের কারসাজিতেই বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতি সপ্তাহেই সরকার প্রধানের নির্দেশে বেগম জিয়াকে হয়রানীমূলকভাবে আদালতে হাজিরা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। দেশনেত্রীও আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রতি বৃহস্পতিবার আদালতে হাজিরা দিয়ে যাচ্ছেন। তারপর আজকে আবারও বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়না জারি যে, সরকারের পরিকল্পিত ও নীলনকশার অংশ সেটা বুঝতে কারও বাকি নেই। ভোটারবিহীন সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে জান্তব হিংস্রতায় জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র করছে। মনে হয়-বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এক ভয়ঙ্কর প্রতিহিংসার জ্বালা সরকার প্রধানের মনের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলছে, এ আগুন যেন অনির্বাণ। নিপীড়নের মাত্রা কত তীব্র হলে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালা মিটবে তা সর্বশক্তিমান আল্লাহই জানেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, মিথ্যা মামলা দায়ের, গ্রেফতারি পরোয়ানা, অশ্রাব্য-কুশ্রাব্য গালিগালাজ, মিথ্যাচারের অবিরাম ধারাবর্ষণ ইত্যাদি প্রতিনিয়তই চলছে বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর। এক্ষেত্রে এক শ্রেণির ভাড়াটে বুদ্ধিজীবিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রায় ১০ বছর ও তাদের মদদপুষ্ট ১/১১ সরকারের ২ বছরসহ একযুগ ধরে বিভিন্ন সংস্থা দিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কোন দূর্নীতি প্রমাণ করতে পারেনি। নিম্ন আদালতের একটি মামলায় তারেক রহমানকে খালাস দেয়া হলে সে বিচারককে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে সরকার। কিন্তু যতই অপচেষ্টা হোক সরকার পার পাবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে কোটি কোটি জনতার ঢল দেখে সরকার বেসামাল হয়ে দেশনেত্রীর ওপর নানামুখী আক্রমন চালানো হচ্ছে। আদালতকে কব্জায় নিয়ে এই আক্রমণ চালাতে কসুর করছে না। তবে আমরা সরকারকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই-জনমতই হচ্ছে সর্বোচ্চ রায়। এই রায়ে বেগম জিয়া দেশের মানুষের সত্যিকার ও ন্যায়সঙ্গত প্রধান প্রতিনিধি, আওয়ামী সরকার বা বর্তমান সরকার প্রধান নন। যারা হত্যা, বেআইনী গুম, খুনকে ব্রত করে সরকার চালাচ্ছেন তারা হাহাকারে বাতাস যে ক্রমশ: ভারী হয়ে উঠেছে সেটি তারা আন্দাজ করতে পারছে না। জনতার স্রোতে ভেসে যাবে সকল ষড়যন্ত্র। দেশের জনগণ দুন্দুভি বাজিয়ে বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করবে। এসময় সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু, আফরোজা আব্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, কাজী আবুল বাশার, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, মুনির হোসেন, সুলতানা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেফতারি পরোয়ানার প্রতিবাদে কর্মসূচি:
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আগামী রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ওই দিন সারাদেশের সকল জেলা সদরও থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। একইভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল ও ছাত্রদল। শনিবার মহানগর ও জেলা সদরে, রোববার থানা ও পৌরসভায় বিক্ষোভ করবে স্বেচ্ছাসেবক দল। একই কারণে শুক্রবার বিক্ষোভ করবে যুবদল। ছাত্রদলের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে শনিবার।
এদিকে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও হয়রানীমূলক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে ঢাকা মহনগর দক্ষিণ বিএনপি’র উদ্যোগে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের নেতৃত্বে গতকাল দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।